Site icon E Purba Bardhaman

বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্রের দুটি মার্কেটেই নেই কোনো অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা

Bad condition of two markets in Burdwan Town

বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- নয়নয় করেও প্রায় ২০ বছর আগে আগুন লেগেছিল ওষুধের দোকানে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না কারও। পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল গোটা দোকান। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল পাশাপাশি কয়েকটি দোকানেও। কিন্তু ২০ বছর পরেও কোনোরকম হাল ফেরেনি বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্র কার্জন গেটের পাশে থাকা পরপর দুটি মার্কেট কমপ্লেক্সের। মালিকপক্ষ টাকা কামাতেই ব্যস্ত, নাগরিক পরিষেবা ও বিপদমুক্ত ব্যবসা চালানোর জন্য বারবার তাঁদের কাছে আবেদন করলেও বর্ধমানের বৈদ্যনাথ কাটরা ও দত্ত সেণ্টারের মার্কেটের কোনো পরিবর্তনই হয়নি – এমনটাই অভিযোগ করলেন ব্যবসায়ীরা। রবিবার কলকাতার বাগরী মার্কেটের বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের আতংক দেখা দিল বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্রে এই দুটি মার্কেট এরিয়াতেও। বর্ধমান শহরের কার্জনগেট সংলগ্ন বৈদ্যনাথ কাটরা এবং দত্ত সেণ্টারের ব্যবসায়ী থেকে পুজোর বাজার করতে আসা সাধারণ মানুষও এই আতংকের কথা বলেছেন। কেবলমাত্র দত্ত সেণ্টারেই রয়েছে প্রায় ১২০টি দোকান। কিন্তু প্রায় ৩৫ বছরের পুরনো এই মার্কেটের কোনো সংস্কার হয়নি। মাঝে মাঝেই ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। মার্কেটের বৈদ্যুতিক তার এখানে সেখানে ঝুলছে। নেই দুটি মার্কেটে কোনোরকম অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও। ফলে রীতিমত আতংকের মধ্যেই তাঁদের ব্যবসা চালাতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দত্ত সেণ্টার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সীতারাম চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, বারবার মালিকপক্ষকে বলেও মার্কেটের সংস্কার নিয়ে কোনো কাজ হয়নি। কিন্তু যেভাবে বিদ্যুতের তার ঝুলছে কিংবা মাঝে মাঝেই ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে তাতে যে কোনো মূহূর্তেই বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যাবার আশংকায় ভুগছেন তাঁরা। যদিও তিনি জানিয়েছেন, এই মার্কেটে নেই কোনো জলের রিজার্ভার। ফলে যদি কোনো আগুন লাগে তাহলে জলের অভাবে সমস্ত দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। তিনি জানিয়েছে্ন, প্রতিদিনই রাত্রে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরে গেলেও তাঁরা আতংকেই থাকছেন। কারণ বিদ্যুতের তারে জল পড়ে। সেখান থেকে যেকোনো মুহূর্তে আগুন লাগার আশংকা করছেন তাঁরা। তিনি জানিয়েছেন, সম্প্রতি ব্যবসায়ীদের নিজস্ব উদ্যোগে একটি সাবমার্শিবল করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য পায়খানা বাথরুমও তাঁরা করেছেন। কিন্তু গোটা বাড়িটির সংস্কার, বিদ্যুতের তারকে মাটির তলা দিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা করা জরুরী হয়ে পড়েছে। দত্ত সেণ্টারের ব্যবসায়ী অভয় ভৌমিক জানিয়েছেন, বারবার জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি মালিকপক্ষকে। কার্যত জতুগৃহে পরিণত হয়েছে পাশাপাশি দুটি মার্কেটই। তিনি জানিয়েছেন, এর মধ্যে দত্ত সেণ্টারের একদিকে রয়েছে জুতোর বাজার। ফলে সেখান থেকে আগুন লাগলে দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়লেও কোনো কিছুই তাঁরা করতে পারবেন না। এমনকি চলতি পুজোর বাজার করতে আসা সাধারণ মানুষও জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষ যাতে নিরাপদে বাজার করতে পারেন তার ব্যবস্থাও করা দরকার। কিন্তু বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্রে থাকা এই দুটি মার্কেটে কোনো অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় বাগরি মার্কেটের ভয়াবহ আগুনের আতংক দেখা দিয়েছে বর্ধমান শহরেও। বৈদ্যনাথ কাটরার ব্যবসায়ী রঞ্জন বালা জানিয়েছেন, বৈদ্যনাথ কাটরার ভেতর যেভাবে বিদ্যুতের তার ঝুলছে তাতে যেকোনো মুহূর্তেই বড়সড় বিপদ ঘটে যেতে পারে। নেই কোনো জলের ব্যবস্থা। নেই কোনো অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও। তিনি অভিযোগ করেছেন, মার্কেটের মালিকপক্ষ টাকা কামাতেই ব্যস্ত – কিন্তু ব্যবসায়ী ও খরিদ্দারদের এই ন্যূনতম নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যাপারে তাঁরা সম্পূর্ণ উদাসীন।

Exit mobile version