গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বুদবুদ থানাকে পূর্ব বর্ধমান আদালতের অধীনে আনার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিল বার অ্যাসোসিয়েশন। শুক্রবার বার অ্যাসোসিয়েশনের এক জরুরি সভা তলব করা হয়। কাজ বন্ধ রেখে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত সভা চলে আইনজীবীদের। ফলে, প্রথমার্ধে আদালতের কাজকর্ম কার্যত বন্ধ থাকে। সভায় বুদবুদ থানাকে পূর্ব বর্ধমানের অধীনে আনার ব্যাপারে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সোমবার বেলা ১২টার মধ্যে বুদবুদ থানার মামলা পূর্ব বর্ধমান আদালতে আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছে বার অ্যাসোসিয়েশন। বার সূত্রে খবর, সভায় আইনজীবীদের বড় অংশ বুদবুদ থানা ইস্যুতে জোরদার আন্দোলনের পক্ষে মত প্রকাশ করেন। প্রয়োজনে আদালতের কাজকর্ম বন্ধ রাখার মতো কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন বেশ কয়েকজন। কেউ কেউ প্রধান বিচারপতি, হাইকোর্টের জোনাল জজ ও রাজ্যের আইনমন্ত্রীর সঙ্গে এনিয়ে আলোচনায় বসার পক্ষে মত দেন। শেষ পর্যন্ত প্রধান বিচারপতিকে সময়সীমা বেঁধে দিয়ে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এদিনই প্রধান বিচারপতিকে ফ্যাক্সে চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। চিঠির কপি মুখ্যমন্ত্রী, বিধানসভার স্পিকার, জোনাল জজ, জেলাশাসক, আইনমন্ত্রী, পুলিস সুপার, এমপি ও বিধায়ককে দেওয়া হয়েছে। বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদন তা বলেন, মিটিংয়ে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেইমতো চিঠি দেওয়া হয়েছে। দাবি না মানা হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব। বর্ধমান থেকে সিবিআই কোর্ট সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পারিবারিক আদালত চালু করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। পূর্ব বর্ধমানকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বার অ্যাসোসিয়েশনের সহ সম্পাদক হরিদাস মুখোপাধ্যায় বলেন, ২০১৭ সালের ২৪ মার্চ জেলা ভাগ নিয়ে গেজেট নোটিফিকেশন হয়। সেই অনুযায়ী, বুদবুদ থানা পূর্ব বর্ধমানে পড়েছে। বুদবুদ থানা গলসি-১ ব্লকে পড়ে। তাই, গেজেট নোটিফিকেশন অনুযায়ী, বুদবুদ থানা পূর্ববর্ধমান জেলা আদালতের অধীনে থাকা উচিত।
প্রসঙ্গত, এ বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর পশ্চিম বর্ধমান জেলা আদালত গঠিত হয়েছে। প্রশাসনিকভাবে জেলা ভাগ হওয়ার পরও এতদিন পশ্চিম বর্ধমানের বেশকিছু মামলার শুনানি বর্ধমান জেলা আদালতে হত। পশ্চিম বর্ধমান জেলা আদালত গঠিত হওয়ার পর বুদবুদ থানা কার অধীনে থাকবে তা নিয়ে চাপানউতর শুরু হয়েছে। পশ্চিম বর্ধমান জেলা আদালতের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দুর্গাপুর আদালতের অধীনে ৭টি থানা থাকবে বলে ঘোষণা করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য। তাঁর ঘোষণায় দুর্গাপুর আদালতের অধীনে বুদবুদ থানা থাকার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়নি। এতে বুদবুদ থানা নিয়ে দুর্গাপুর আদালতের আইনজীবীদের সঙ্গে বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে।