বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ভোট মানেই সাঁইবাড়ি। অত্যাচারের নমুনা মানেই বর্ধমানের প্রতাপেশ্বর শিবতলা লেনের সাঁইবাড়ির ঘটনা। ৪৯ বছর পরও ব্যতিক্রম হল না এই রেওয়াজের। সোমবার নববর্ষের দিন সকাল থেকেই বর্ধমান শহরের বিভিন্ন মন্দিরে মন্দিরে নিজের জয়ের জন্য প্রার্থনা আর পুজো দিলেন বিজেপির বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা আসনের প্রার্থী সুরেন্দ্রজিৎ সিং অহলুবালিয়া। সঙ্গে ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী, জেলা যুব মোর্চার সভাপতি শ্যামল রায় সহ বিজেপি নেতা–কর্মীরাও। এদিন বিভিন্ন মন্দিরে পুজো দিয়ে আসার পর একদা কংগ্রেস নেতা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুরেন্দ্রজিৎ সিং এসে পৌঁছান সেই ঐতিহাসিক সাঁইবাড়ির শহীদ বেদিতে ৪৯ বছর পর পা রাখলেন প্রতাপেশ্বর শিবতলা লেনের মোড়ে। রাস্তার মোড়ে থাকা সাঁইবাড়ির শহীদ বেদিতে মালা দিয়ে প্রণাম করেন শহীদদের। আর কার্যত, ফের ঘুরে ফিরে এল লোকসভা ভোটের প্রচারে ৪৯ বছর আগে ঘটে যাওয়া বর্ধমানের সাঁইবাড়ির ঘটনা। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পর বর্ধমানের প্রতাপেশ্বর শিবতলা লেনের সাঁইবাড়ির সামনে দিয়ে প্রচার মিছিল করেছিল সিপিএমের বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভার প্রার্থী আভাষ রায়চৌধুরী। আর সোমবার নববর্ষের দিন সেই সাঁইবাড়ির শহীদবেদীতে মালা দিলেন বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্রজিৎ সিং অহলুবালিয়া এবং তাঁর স্ত্রী মণিকা অহলুবালিয়াও। এদিন তিনি বলেন, ১৯৭০ সালে যে নারকীয় ঘটনা ঘটেছে সেই ঘটনা যেন আর কোথাও না ঘটে। তিনি বলেন, আজ শুভদিন। নববর্ষ। তাই তিনি ঠাকুরের কাছে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছেন দেশ থেকে হিংসা দূর হোক। শান্তি, সমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক সকলেই। তিনি বলেন, ১৯৬৯ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত সন্ত্রাসের রাজনীতি হয়েছে। সাঁইবাড়িতে প্রণব সাঁই, মলয় সাঁই, জিতেন্দ্রনাথ রায় তিনজন খুন হয়েছিলেন, এই ঘটনার কয়েকমাস বাদেই গুণমণি রায় খুন হয়েছিলেন, উখড়ায় ভবানি শর্মা, কাটোয়ায় সুব্রতকে খুন করা হয়েছিল। সুরেন্দ্রজিৎ সিং বলেন, মার্কসবাদীর এই অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে কংগ্রেসের হয়ে ধর্ণায় বসেছিলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। খুনীদের শাস্তির দাবীতে লড়াই করেছিলেন। কিন্তু সেই সন্ত্রাসের রাজনীতি আবার চলছে রাজ্যে। যে দলের তিনি সুপ্রিমো। এর পরিণতি কিন্তু ভাল নয়। সন্ত্রাস দমন করতে সন্ত্রাস করা ঠিক নয়। তিনি বলেন, সাঁইবাড়ির ঘটনার সময় তিনি আসানসোল থেকে এই সাঁইবাড়িতে এসেছিলেন। ৮ বছর আগে রাজ্যে যে পরিবর্তনের যাত্রা শুরু হয়েছিল তখন লোকের অনেক আশা ছিল। আজ তারা নিরাশ। নতুন করে আজ থেকে সেই পরিবর্তনের যাত্রা শুরু হল। তিনি বলেন, খুনের রাজনীতি বন্ধ হোক। কোনো বাবা মা যেন সন্তানহারা বা কোনো ছেলে মেয়ে যেন বাবা মা হারা আর না হয় – আজ নববর্ষের দিন সেই প্রার্থনাই জানিয়েছেন। এদিন তিনি সাঁইবাড়ির ছেলে বিজয় সাঁই–এর সঙ্গে কথাও বলেন। সাঁইবাড়ির ঘটনার পর তিনি যে এসেছিলেন সেই স্মৃতি রোমন্থনের চেষ্টাও করেন উভয়ে। যদিও বিজয় সাঁই এব্যাপারে কোনো কথাই বলেননি।