বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রাজ্য সরকার তাঁর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। তাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক তাঁকে জেড ক্যাটাগরীর নিরাপত্তা দিয়েছে। রাজ্য সরকারের দেওয়া ২জন নিরাপত্তাকর্মীর সামনেই তিনি ৭বার আক্রান্ত হয়েছেন। তাই বাধ্য হয়েই কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন। শনিবার বর্ধমান শহরের পার্বতী মাঠে বিজেপির বর্ধমান জেলা কমিটির ডাকা সভায় এসে একথা জানিয়ে গেলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, গোটা রাজ্যে সন্ত্রাসের সরকার চলছে। প্রতিদিনই খুন, জখমের ঘটনা ঘটছে। আতংকিত তৃণমূল নিজেদের পায়ের জমি শক্ত করতে এসসি, এসটি, ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষকেই বেশি খুন করছে। বিরোধিতা শুনতে পারছে না। অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে তৃণমূল। বিজেপির ১০ হাজার কর্মী-নেতার নামে মি্থ্যা কেস দিয়েছে। জোর করে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি জানান, রাজ্যে এমন সন্ত্রাস চলছে যে জনগণের ভোটে জয়ীরা তাঁদের বাড়িতে থাকতে পারছেন না। জীবনহানির ভয়ে তাঁদের অন্য রাজ্যে, বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় দিতে হয়েছে। তবুও এখনও গত ৬ মাস ধরে চলতে থাকা পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজ শাসক দল সম্পূর্ণই করতে পারেনি। একটা পঞ্চায়েত নির্বাচন চলছে ৬ মাস ধরে। দিলীপবাবু এদিন বলেন, পাথর, বালি, লোহা, কয়লার পর এবার বাড়ি আর পায়খানা থেকেও টাকা খাচ্ছে দিদির দলের নেতা-কর্মীরা। এরকম খেকো সরকার আগে কখনও দেখা যায়নি। শনিবার বর্ধমানের পার্বতীমাঠের জনসভায় এসে এভাবেই তৃণমূল নেতা-কর্মীদের তীব্র সমালোচনায় মুখর হন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, বীরভূমের এক নেতা আছেন। মাঝে মাঝেই তিনি পুলিশকে বোমা মারার নিদান দেন। আর তাঁরই এলাকায় প্রতিদিন বোমা ফাটছে। বোমার স্তূপের ওপরে বসে আছেন তিনি। আর বলছেন বহিরাগতরা এসে বোমা ফাটাচ্ছে। একদিন ওই বোমা ফেটেই তিনি উড়ে যাবেন। এদিন আগামী ২০১৯ -এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন দিলীপবাবু। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যে এমন একটা সরকার চলছে যে একবছর ধরে একটা পঞ্চায়েত নির্বাচনই সম্পন্ন করতে পারল না। এখনও বহু জায়গায় বোর্ড গঠন হয়নি। করতে দিচ্ছেনা। যেখানে বিজেপি জিতেছে সেখানে নানা টালবাহানায় বোর্ড গঠনের দিন পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নানাভাবে বিজেপির জয়ী প্রার্থীদের হয় প্রলোভন দেখানো হচ্ছে, নাহয় তাদের মিথ্যা কেসে ফাঁসিয়ে দেবার চেষ্টা চলছে। বিজেপিকে এভাবে আটকে রাখা যাবে না। তিনি বলেন, পঞ্চায়েত ভোটে নমিনেশন জমা দিতে দেয়নি। একতরফা নমিনেশন জমা দিয়ে দেখিয়েছে সব আসনেই তাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। বিজেপি পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়াই করেছে। নভেম্বরেই পুরভোট। বিজেপি সেখানেও লড়াই করবে। কিন্তু আসল লড়াই ২০১৯-এর লোকসভা ভোট। তখন আর দিদির পুলিশ দিয়ে ভোট হবে না। দাদার পুলিশ দিয়ে ভোট হবে। দিলীপবাবু এদিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, দেখবো লোকসভা ভোটে তৃণমূলের কত ক্ষমতা। ক্ষমতা থাকলে ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে রিগিং করে দেখাবে তৃণমূল। তিনি বলেন, লোকসভা ভোটে বিজেপি খেলবে আর তৃণমূল দাঁড়িয়ে দেখবে। এদিন তিনি রাজ্যের পুলিশকেও হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেন, পুলিশের চাকরি করছেন করুন, কিন্তু তৃণমূলের তাঁবেদারী করবেন না। এদিন অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিজেপির রাজ্য নেতা অভিনেতা জয় ব্যানার্জী, জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী, তৃণমূল থেকে আসা প্রাক্তন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ গোলাম জার্জিস, যুব মোর্চার সভাপতি শ্যামল রায় প্রমুখরাও।