E Purba Bardhaman

এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যোগ্যদের আইনি পরিষেবা দিতে চালু হল বিজেপির ওয়েব পোর্টাল

BJP's legal service web portal has been launched for those eligible in SSC recruitment corruption cases.

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘোষণা মত এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যোগ্যদের জন্য চালু হল বিজেপির আইনি পরিষেবা ওয়েব পোর্টাল। বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে বুধবার এই ওয়েব পোর্টালের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির মুখ্য মুখপাত্র সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। লোকসভা নির্বাচনের আবহহেই এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করা সম্ভব না হওয়ায় হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ গত ২২ এপ্রিল রায়ে চাকরিরত ২৫৭৫৩ জনের প্যানেলই বাতিল করেছে। আর এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নিয়ে চলতে থাকা চাপানউতোরের মধ্যেই এই রায়ের ফলে ভোটের বাজার আরও গরম হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ এবং বর্ধমান পূর্বের বিজেপি প্রার্থী অসীম কুমার সরকারের সমর্থনে গত ৩ মে বর্ধমানের সাই কমপ্লেক্সে সভা করতে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সভা থেকে নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেন, “শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বাংলায় চরম দুর্নীতি হয়েছে, কিন্তু অনেক নির্দোষ ফেঁসে গেছেন। এব্যাপারে বাংলার বিজেপি নেতাদের বলেছি তাঁদের আইনি সহায়তা দেবে। তাঁরা সমস্ত প্রমাণ, কাগজ নিয়ে দেখা করুক। তাঁদের জন্য আইনি লড়াইয়ের সবরকমের সহযোগিতা করবে বিজেপি। তাঁদের সুবিচার দিতে পুরো শক্তি নিয়োগ করবে বিজেপি। যে অন্যায় করেছে সে ভুগবে।” এব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে নির্দেশও দেন প্রধানমন্ত্রী। আর এই নির্দেশের পরই এদিন যোগ্যদের সহযোগিতা করার জন্য ওয়েব পোর্টাল (bjplegalsupport.org) চালু করা হলো বলে জানিয়েছেন শমীক ভট্টাচার্য। যদিও ইতোমধ্যেই হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে করা মামলায় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ চাকরি আপাতত বহাল রাখার রায় দেয়। কলকাতা হাই কোর্টের বিশেষ বেঞ্চ যে রায় দিয়েছিল তাতে স্থগিতাদেশ দিয়ে গত ৭ মে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামী ১৬ জুলাই এ সংক্রান্ত পরবর্তী শুনানি হবে। এবং বেতন ফেরত দেওয়ার হাইকোর্টের রায়েও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। আর এই রায়ের পরেই ‘সাময়িক’ স্বস্তি প্যানেলে থাকা সকলেই। একই সাথে খুশি রাজ্যের শাসক দলের নেতা-কর্মীরা। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রায়ের পরেই তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “সুপ্রিম কোর্টে ন্যায় প্রাপ্তির পর আমি বাস্তবিকই খুব খুশি এবং মানসিক ভাবে তৃপ্ত। সামগ্রিক ভাবে শিক্ষক সমাজকে জানাই আমার অভিনন্দন এবং মাননীয় সুপ্রিম কোর্টকে জানাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা।”
যোগ্যদের আইনি সহযোগিতা দিতে বুধবার ওয়েব পোর্টালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত শমীক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, যোগ্যদের মেধা যাতে কোনও ভাবেই প্রতারিত না হয়, তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের চাকরি বিক্রির চক্রান্তে পরে কোনও ভাবেই বঞ্চিত না হন সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এদিন তাঁরা এই ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করলেন। একই সাথে একটি হেল্প লাইন নম্বরও (9150056618) এদিন থেকে চালু করা হয়। এই ওয়েব পোর্টালে যোগ্যরা তাঁদের বিস্তারিত তথ্য দিয়ে নথিভুক্ত হলে বিজেপি তাঁদের আইনি সহযোগিতা করবে। মুখ্যমন্ত্রীর এক্স হ্যান্ডেলে স্বস্তির মন্তব্য প্রসঙ্গে শমীক ভট্টাচার্য বলেন, রাজ্য সরকার বিরাট স্বস্তি পেয়েছে মনে করছে, কিন্তু বাস্তবে তা নয়। রাজ্য সরকার তার ক্যাবিনেট বাঁচাতে ব্যস্ত। যোগ্য-অযোগ্যদের কথা ভাবছে না। ক্যাবিনেট বাঁচাতেই সুপ্রিম কোর্টে গেছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সিবিআই তদন্ত বন্ধ হয়নি। চূড়ান্ত রায়ও ঘোষণা হয়নি। আগামী ১৬ জুলাই এই মামলায় পরবর্তী শুনানি হবে। আদালত এর সাথে যুক্ত প্রত্যেকের কথা শুনবে। যোগ্যদের ন্যায়ের জন্য বিজেপি বদ্ধ পরিকর। পাশাপাশি দোষীরাও শাস্তি পাবে। শমীক ভট্টাচার্য বলেন, এসএসসি-র পাশাপাশি হাইকোর্টে রয়েছে প্রাথমিক নিয়োগে দুর্নীতি মামলাও। আর এই মামলা প্রসঙ্গে এদিন শমীক ভট্টাচার্য সতর্ক করে বলেন, এখন থেকেই যোগ্য-অযোগ্য চিহ্নিত করে পদক্ষেপ না নেওয় হলে ৫৯ হাজার জনের চাকরির জটিলতা তৈরি হবে। তিনি বলেন, শিক্ষা সংক্রান্ত নিয়োগ মামলা নিয়েই বেশি চর্চা হলেও এরাজ্যে সরকারি চাকরির সমস্ত ক্ষেত্রেই দুর্নীতি হয়েছে। সেগুলোও প্রকাশ্যে আসবে।

Exit mobile version