বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- সিংহভাগ ক্ষেত্রেই মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের জন্যই চাষী তার উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পায় না। অন্যদিক, যৌথ সংসার ভেঙ্গে যাওয়ায় জমির পরিমাণ ডেসিমেলে পরিণত হচ্ছে। ফলে চাষের খরচ বাড়ছে। তুলনায় চাষী উত্পাদিত ফসলের লভ্যাংশ ঠিকভাবে পাচ্ছে না। তাই সামগ্রিকভাবে চাষীকে আর্থিক স্বনির্ভরতা দিতে এগিয়ে এসেছে নাবার্ড। কম খরচে চাষে বেশি উত্পাদন এবং সরাসরি চাষীর কাছে লাভের বৃহদাংশ পৌঁছানোর লক্ষ্যে গোটা দেশ জুড়ে নাবার্ড একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়ে গেলেন নাবার্ডের পশ্চিমবঙ্গ আঞ্চলিক অফিসের চীফ জেনারেল ম্যানেজার সুব্রত মণ্ডল। শুক্রবার বর্ধমান কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের গলসীর মসজিদপুর, বর্ধমান ২নং ব্লকের নবস্থা এবং মন্তেশ্বরের মধ্যমগ্রাম-সহ পাঁচটি জায়গায় নতুন এটিএমেরও উদ্বোধন করেন তিনি। এছাড়াও কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের ৭টি সমবায় সমিতির হাতে মাইক্রো এটিএম মেশিন তুলে দেন তিনি। এদিন সুব্রত মণ্ডল জানান, বর্তমানে সংসার ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে আর এক লপ্তে জমি পাওয়া যাচ্ছেনা। ফলে জমির আকার এখন ছোট ছোট হয়ে গেছে। এর ফলে একদিকে যেমন চাষের খরচ বেড়েছে, তেমনি উত্পাদনও তুলনামূলক কমেছে। এজন্যই নাবার্ড গোটা ভারতবর্ষ জুড়ে তৈরী করছে ফামার্স প্রোডিউসার এ্যাসোসিয়েশন। ৫০০ থেকে ১০০০ চাষীকে নিয়ে গঠিত হচ্ছে এই এ্যাসোসিয়েশন। এর ফলে চাষীরা সমবেতভাবে কম দামে বীজ, সার এমনকি চাষের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থও কম বরাদ্দ করতে পারছেন। অন্যদিকে, চাষীদের উত্পাদিত ফসলকে সরাসরি বিক্রিরও ব্যবস্থা করছে নাবার্ড। তিনি জানান, চাষীদের মাঝে মিডলম্যান বা মধ্যস্বত্ত্বভোগী ব্যবস্থাকে নির্মূল করতে চাইছে। সুব্রতবাবু জানিয়েছেন, তাঁরা চাইছেন গোটা দেশের সঙ্গে বাংলার কৃষকরাও এই সুফল পান। বিশেষ করে নোটবন্দীর সময় বাংলার কৃষকরা যাঁরা সমবায়ের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন তাঁরা সংকটে পড়েছিলেন। আর তাই নাবার্ডের উদ্যোগে সমবায় ব্যাঙ্কগুলির মাধ্যমে কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে রূপে কেসিসি কার্ড। একইসঙ্গে সমবায় সমিতির হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে মাইক্রো এটিএম। এরফলে চাষীকে আর ব্যাঙ্কে আসতে হচ্ছে না। তিনি সমবায়ে গিয়েই এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় টাকা জমা দিতে এবং তুলতে পারবেন। উল্লেখ্য, বর্ধমান কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের স্টাফ এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অমিত রজক জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই বর্ধমান কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে ১ লক্ষ ৯৭ হাজার কৃষককে এই রূপে কেসিসি কার্ড দিয়েছে। সমবায় সমিতিগুলিকে দেওয়া হয়েছে ১৭৮টি মাইক্রো এটিএম সুবিধা। এছাড়াও এই ব্যাঙ্ক মোট ৩৩টি এটিএম চালু করেছে।