গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান জেলা আদালতে আইনজীবীদের বসার ঘর তৈরি নিয়ে সমস্যার অবসান হতে চলেছে। শনিবার আদালত পরিদর্শনে এসে বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তথা জোনাল জজ সৌমেন সেন। বৈঠকে জেলা জজ কেশাং ডোমা ভুটিয়া সহ অন্যান্য বিচারকরা উপস্থিত ছিলেন। হাজির ছিলেন বর্ধমানের জেলা শাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব ও পুলিস সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। সেখানেই বসার ঘর তৈরি নিয়ে সমস্যার অবসান হতে চলেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন জোনাল জজ। আইনজীবীদের বসার ঘর নিয়ে ভালো কিছু হবে বলে আইনজীবীদের জোনাল জজ আশ্বাস দিয়েছেন। এতে খুশি বারের প্রতিনিধিরা। আলোচনায় বার ও বেঞ্চের সুসম্পর্ক যেন বজায় থাকে তা দেখার জন্য আইনজীবীদের পরামর্শ দিয়েছেন জোনাল জজ। বারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসার পাশাপাশি জোনাল জজ নির্মীয়মান পকসো আদালত কক্ষটি ঘুরে দেখেন। পকসো আদালত কক্ষটিকে যাতে শিশুবান্ধব করে গড়ে তোলা হয় সে ব্যাপারে পরামর্শ দেন জোনাল জজ। আইনজীবীদের বসার জায়গাও ঘুরে দেখেন বিচারপতি সেন। জোনাল জজের আশ্বাস পেয়ে খুশি বারের পদাধিকারীরা। বারের কোষাধ্যক্ষ কল্যাণ মাজি বলেন, জোনাল জজ আইনজীবীদের সমস্যার বিষয়টি বুঝেছেন। জেলা জজকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছেন। ঘর তৈরির নকশা তৈরি বলে জেলা জজ জোনাল জজকে জানিয়েছেন। সরকার ঘর তৈরি করে দেবে বলে আলোচনা হয়েছে। আইনজীবীদের বসার জন্য দোতলা ভবন তৈরি হবে। সেখানে সব ধরণের সুবিধা থাকবে। বিচারপ্রার্থীদের বসার জায়গার ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় আমরা খুশি।
বর্ধমান জেলা আদালতে আইনজীবীদের বসার জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিনের সমস্যা রয়েছে। বসার জায়গা না থাকায় আইনজীবীদের রোদে পুড়ে, জলে ভিজে খোলা আকাশের নীচে কাজ করতে হয়। বিচারপ্রার্থীদেরও বসার জায়গা নেই। ফলে, তাদের হয়রান হতে হয়। কয়েকমাস আগে বার অ্যাসোসিয়েশন আদালত চত্বরে আইনজীবীদের বসার জন্য ঘর তৈরি শুরু করে। এনিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় কাউন্সিলার শিখা দত্ত সেনগুপ্ত ঘর তৈরি নিয়ে আপত্তি তোলেন। পুরসভার তরফে ঘর তৈরি বন্ধ রাখার জন্য নোটিশ পাঠানো হয়। ঘর তৈরি নিয়ে হাইকোর্টে রিপোর্ট পাঠান জেলা জজ। ঘর তৈরি বন্ধ রাখার জন্য বারকে চিঠি দেয় বিচার বিভাগ। ফলে, সমস্যা জটিল আকার ধারণ করে। সমস্যা কাটাতে বর্ধমানে আসেন পূর্বেকার জোনাল জজ বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। তারা কাজ বন্ধ রাখার জন্য বার অ্যাসোসিয়েশনকে বলেন। তারপর থেকেই ঘর তৈরির কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে, দুই বিচারপতি বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের ঘর তৈরির বিষয়ে ভালোকিছু হবে বলে আশ্বাস দিয়ে যান। বার সূত্রে খবর, এদিন আলোচনা চলাকালীন আসানসোল জেলা আদালতে বুদবুদ ও কাঁকসা থানাকে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে আপত্তি জানান বারের প্রতিনিধিরা। দু’টি থানাকে পূর্ব বর্ধমান জেলা আদালতের আওতায় আনার জন্য দাবি জানান তারা। জোনাল জজ এনিয়ে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছেন। পাশাপাশি জেলায় হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ খোলার ব্যাপারেও চিন্তা-ভাবনার আশ্বাস দিয়েছেন জোনাল জজ। বার অ্যাসোসিয়েশনের সহ সম্পাদক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, আইনজীবীদের বসার ঘর তৈরি নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা শীঘ্রই কেটে যাবে বলে এদিনের আলোচনায় ইঙ্গিত মিলেছে।