গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ফের জটিল অস্ত্রপচারে সাফল্য পেল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। এক রোগীর ঠোঁটে তৈরি হওয়া বিশাল মাংসপিণ্ড কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে। তারপর প্লাস্টিক সার্জারি করে ঠোঁটের কাটা অংশ জুড়ে দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে মাইক্রোভাস্কুলার রিকনস্ট্রাকশন বলে। হাসপাতালে সবে প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট খোলা হয়েছে। এটি হাসপাতালে এ ধরণের প্লাস্টিক সার্জারির প্রথম ঘটনা বলে ইএনটি বিভাগের চিকিৎসক ঋতম রায়ের দাবি। হাসপাতালের ইএনটি, প্লাস্টিক সার্জারি ও অ্যানাস্থেশিয়া এই তিন বিভাগের টিম ওয়াের্ক অস্ত্রপচারে সাফল্য মিলেছে। সেজন্য তিন বিভাগের চিকিৎসকদের অভিনন্দন জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার ডাঃ উৎপল দাঁ। তিনি বলেন, এর আগে হাসপাতালে এ ধরণের অস্ত্রপচার হয়নি। অস্ত্রপচারের এই সাফল্য সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবার মান সম্পের্ক সাধারণ মানুষের কাছে ইতিবাচক বার্তা দেবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়না থানার মুগুড়া গ্রামের শম্ভুনাথ রায়ের (৪৮) ঠোঁটে সমস্যা ছিল। তাঁর ঠোঁটের নীচের অংশ ফুটে উঠছিল। সেখানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছিল। ক্ষত দিন দিন বাড়ছিল। কিছুদিন আগে তিনি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন। ইএনটি বিভাগের চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে তাঁর তলার ঠোঁটে ম্যালিগন্যান্ট গ্রোথের হদিশ পান। চিকিৎসকরা তাঁকে হাসপাতালে ভরতির পরামর্শ দেন। হাসপাতালে ভরতি হওয়ার পর তাঁর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। ঠোঁটে অস্ত্রপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। তাঁর চিকিৎসার জন্য ১৪ জনের একটি টিম গঠন করা হয়। তাতে ইএনটি বিভাগের প্রধান ডাঃ গণেশ গায়েন, ডাঃ ঋতম রায়, প্লাস্টিক সার্জন ডাঃ কুশল আনন্দ, অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের সুস্মিতা ভট্টাচার্য প্রমুখ ছিলেন। মঙ্গলবার ৯ ঘন্টা ধরে অস্ত্রপচার করা হয়। নীচের ঠোঁটের অনেকটা অংশ কেটে বাদ দিয়ে তাঁরই শরীর থেকে মাংস, চামড়া, শিরা, উপশিরা প্রভৃতি নিয়ে প্লাস্টিক সার্জারী করা হয়। বর্তমানে রোগী সুস্থ আছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। ঋতমবাবু বলেন, প্লাস্টিক সার্জন কুশল আনন্দ মাইক্রোভাস্কুলার রিকনস্ট্রাকশন করে ঠোঁটের কাটা অংশে শরীরের অংশ থেকে নেওয়া মাংস, চামড়া, শিরা, উপশিরা জুড়ে দিয়েছেন।শিরা-উপশিরা জুড়ে রক্ত সঞ্চালন ঠিকঠাক রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নাহলে ভবিষ্যতে অস্ত্রপচার করা জায়গায় পচনের সম্ভাবনা ছিল।