E Purba Bardhaman

বর্ধমান পুরসভায় চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করা কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড ও পেনশনের তালিকায় নিয়ে আসা হল

বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- গোটা রাজ্যের বেশ কয়েকটি পুরসভার সঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান ও গুসকরা পুরসভাতেও বর্তমান পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে সেপ্টেম্বর মাসেই। নিয়মানুযায়ী তারই মধ্যে তথা আগামী ২মাসের মধ্যেই পুরসভাগুলিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা। ইতিমধ্যেই পুরসভাগুলিতে আসন সংরক্ষণের খসড়া তালিকাও প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমান সময়ে রাজ্যের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে রীতিমত জোড়ালো বিরোধিতায় দাঁড়িয়ে বিজেপি। ৫ বছর আগে তথা ২০১৩ সালে বর্ধমান পুরসভার ক্ষমতা সিপিএমের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। ৩৫টি ওয়ার্ডেই নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দখল করে বিরোধী শূন্য পুরসভা দখল করে পুরসভা। আর সামনেই পুরভোট ধরে নিয়ে বিদায় নিতে চলা বর্তমান পুরবোর্ড মাষ্টার স্ট্রোক দিল বৃহস্পতিবার। বর্ধমান পুরসভায় চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করা কর্মীদের এবারে ইপিএফ বা এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড ও অবসরের পরে পেনশন স্কীমের আওতায় নিয়ে আসার সিধান্ত নিল বর্ধমান পুরসভা। বৃহস্পতিবার বর্ধমান পুরসভার বোর্ড অফ কাউন্সিলের বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে এই সিধান্ত গৃহীত হয়েছে। এরজন্য পুরসভার কোষাগার থেকে প্রতিমাসে ৮ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে বলে জানা গেছে। এই দুই প্রকল্পে উপকৃত হবেন পুরসভায় বিভিন্ন দপ্তরে কাজ করা ১১৩৬ জন ঠিকা কর্মী। পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন আগেই পুরসভা ঘুরে যান ইপিএফ অফিসের আধিকারিকরা। পুরসভার কাজে তাঁরা ভূয়সী প্রশংসা করার পাশাপাশি ঠিকা কর্মীদের ইপিএফের বিষয়টি দেখার জন্যও বলে যান তাঁরা। পুরপতি ডা. স্বরূপ দত্ত জানিয়েছেন, এতদিন ধরে বর্ধমান পুরসভায় ক্ষমতায় ছিল বামেরা। তাঁদের আমল থেকে যেমন ঠিকাকর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন, তেমনি তাঁদের এই ৫ বছরে আরও বেড়েছে ঠিকাকর্মীর সংখ্যা। নাগরিক পরিষেবা দিতেই তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে। পুরপতি অভিযোগ করেছেন, গরীব দরদী বাম প্রশাসক এই ঠিকাকর্মীদের জন্য কিছু করেননি। তিনি জানিয়েছেন, বিভিন্ন বিভাগে চুক্তির ভিত্তিতে পুরসভায় কাজ করেন এমন ১১৩৬জন কে ইপিএফ ও পেনশন এর আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে।। এতে পুরসভার বাড়তি খরচ হলেও সেটা তাঁরা করবেন। এদিকে, পুরসভার এই সিধান্তে স্বাভাবিকভাবেই চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করা কর্মীরা খুশী। উল্লেখ্য, নিয়মানুযায়ী ইপিএফের জন্য সরকারি নিয়মে একজন কর্মীর অ্যাকাউন্ট থেকে তার বেতনের ১২ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়। ১৩ শতাংশ নিয়োগকর্তা দেয়। এই ২৫ শতাংশ টাকার মধ্যে ১ শতাংশ সার্ভিস চার্জ কেটে ওই কর্মীর নামে প্রতিমাসে ইপিএফ অ্যাকাউন্টে ২৪ শতাংশ টাকা জমা হয়। এই জমা টাকার মধ্যে থেকেই পিএফ কমিশনের নিয়মে একটা অংশ পেনশন অ্যাকাউন্টে জমা হয় ওই কর্মীর নামেই। অবসরের পরে সেখান থেকেই তিনি অবসরকালীন সুবিধা পাবেন। তবে একটা নুন্যতম বছর তাঁকে কাজ করতেই হবে পেনশন পাবার জন্য। সামনেই পুরভোট। আর তার আগেই পুরসভার ঠিকাকর্মীদের জন্য ইপিএফ ও পেনশন প্রকল্প চালু করায় রীতিমত এককদম এগিয়ে রইলেন বর্তমান শাসকদল – এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।

Exit mobile version