E Purba Bardhaman

বর্ধমান শহর জুড়ে দেদার পুকুর ভরাট, বিজেপির অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামল পুরসভা

The Burdwan municipality started an investigation after receiving a complaint from the BJP about the filling of Lalkuthi pond

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- সরকারী নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাতারাতি পুকুর ভরাটের ঘটনায় বিজেপির করা অভিযোগে নড়েচড়ে বসল জেলা প্রশাসন। বিজেপির ৭নং নগর মণ্ডলের সভাপতি সোমনাথ দাস জানিয়েছেন, গত ১৬ ডিসেম্বর তিনি জানতে পারেন বর্ধমান শহরের ৩৪নং ওয়ার্ডের বিএলহাটি রোডে বিবেকানন্দ স্পোর্টিং ক্লাবের উল্টোদিকে দীর্ঘদিনের পুরনো লালকুঠি পুকুরকে ভরাট করা হচ্ছে। এরপরই তিনি জেলা প্রশাসনের কাছে এই অবৈধ কাজ বন্ধের জন্য আবেদন জানান। ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুধীররঞ্জন সাউ জানিয়েছেন, গত ১৬ ডিসেম্বর তাঁদের দায়ের করা অভিযোগের পর বৃহস্পতিবার বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার, বর্ধমান থানার আইসি সুখময় চক্রবর্তী ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। সুধীরবাবু অভিযোগ করেছেন, তাঁদের অভিযোগ পাবার পর ৬দিন কেটে গেছে। ফলে এই সময়ে পুকুর ভরাট আরও এগিয়েছে। প্রশাসন যদি সক্রিয় ভূমিকা নিত তাহলে এই পুকুর ভরাট অনেকটাই আটকানো যেত। তিনি অভিযোগ করেছেন, বর্ধমান পুর এলাকার ৩৫টি ওয়ার্ড জুড়েই এখন রমরমিয়ে পুকুর ভরাট সহ অবৈধ নির্মাণ চলছে। সুধীরবাবুর অভিযোগ, বর্ধমানে প্রোমোটাররাজ কায়েম করতেই একজন প্রোমোটারকে কাউন্সিলার করা হয়েছে। এই পুকুর ভরাটের পিছনে বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়কেরও ভূমিকা রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। এদিকে, বিজেপির দায়ের করা এই পুকুর ভরাটের অভিযোগ পেয়ে এদিন চেয়ারম্যান লালকুঠি পুকুর এলাকায় আসেন। তিনি জানিয়েছেন, তিনি আসার পরই জেসিবি এবং রোলার মেশিন বন্ধ করে দিয়েছেন। আগামী মঙ্গলবার ওই পুকুরের মালিকদের সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে পুরসভায় যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কাগজপত্র খতিয়ে দেখার পর একটি যুগ্মতদন্ত হবে। সেই তদন্ত রিপোর্টে যদি দেখা যায় অন্যায়ভাবে পুকুর ভরাট করা হচ্ছিল তাহলে মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়াও পুকুরকে আগের অবস্থাতেই মালিকপক্ষকে ফিরিয়ে দিতে হবে। চেয়ারম্যান পরেশ সরকার জানিয়েছেন, তাঁরা অভিযোগ পেলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেন। তবুও যেহেতু বর্ধমান শহরে জায়গার দাম অনেক, তাই কিছু মানুষ এই ধরণের কাজ করছেন। এব্যাপারে তাঁরা সজাগ আছেন। খবর পেলেই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, বিজেপি অভিযোগ করেছে, ৩৪নং ওয়ার্ডে পুরনো এই পুকুরকে ভরাট করা হচ্ছে সেই খবর পেয়ে তাঁরা অভিযোগ করলেন। কিন্তু সত্যিই যদি পুরসভার আন্তরিক ইচ্ছা থাকত তাহলে ৩৪নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার উমা সাঁই কেন এই কাজ বন্ধ করতে বললেন না। স্বাভাবিকভাবেই স্থানীয় কাউন্সিলারের মদতেই এই পুকুর ভরাট হচ্ছিল বলে বিজেপি অভিযোগ তুলেছে। অন্যদিকে, এব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা মুখপাত্র প্রসেনজিত দাস জানিয়েছেন, কেউ যদি বেআইনি কাজ করে তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবার দাবী জানাচ্ছেন তাঁরা।

Exit mobile version