E Purba Bardhaman

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে শহর ঘুরে ৫০ জন লড়াকু নারীকে সম্বর্ধনা

Burdwan Sadar Pyara Nutrition Welfare Society felicitates 50 women fighters on International Women's Day

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বর্ধমানে প্রথম সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রায় ৫০ জন মহিলাকে সম্বর্ধনা দিয়ে তাঁদের লড়াইকে কুর্নিশ জানালো বর্ধমান সদর প্যায়ারা নিউট্রিশন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। এই সমস্ত মহিলারা সংসার চালাতে নিজেদের মেলে ধরেছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারী দিবসে তাই তাঁরা তুলে ধরলেন। বর্ধমান শহরের তেলিপুকুর টোটো স্ট্যান্ডে সম্মানিত করা হয় বর্ধমান শহরের টোটো চালিকাদেরকে। তাঁদের সারা মাসের মুদিখানা বাজার এবং কিছু অর্থসাহায্যও করা হয়। বর্ধমান শহরের প্রথম মহিলা টোটোচালক সবিতা দাস জানিয়েছেন, আট বছর ধরে টোটো চালাচ্ছেন। মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্যই তাঁর এই পেশায় আশা। সত্তরোর্দ্ধ বিধবা মহিলা সুজাতা রায় জানিয়েছেন, ৩২ বছর ধরে তিনি সবজি বিক্রি করে সংসার প্রতিপালন করে চলেছেন। এতদিনে সেই লড়াইয়ের স্বীকৃতি পেলেন। রীতিমতো ভাইরাল হওয়া মুনমুন দে রাউত ওরফে মুনমুন দিদি জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ের মুখ তাকিয়ে করোনার সময় থেকে সংসারের হাল ধরতে রাস্তার উপরেই খুলে ফেলেছেন মুসুরের রান্নাঘর। সম্বর্ধনা পেয়ে আপ্লুত হয়ে উনি জানিয়েছেন, এই উপহার তাঁকে লড়াইয়ের বাড়তি রসদ যোগাবে। সুনিতা চৌধুরি ওরফে সুনিতাদিদি জানিয়েছেন, নিজের মেয়েকে মানুষ করে তোলার জন্য তিনি রাস্তায় দইবড়া বিক্রি করে চলেছেন। তাঁর ১১ বছরের মেয়ে মানুষের মত মানুষ হয়ে উঠুক এটাই তাঁর প্রার্থনা। মল্লিকপুকুর বস্তি এলাকায় যে সমস্ত বয়স্ক মহিলারা সংসার সামলাতে বা অসুস্থ স্বামীর সেবা করা ও চিকিৎসার খরচ জোগাড় করার জন্য এখনও কাজ করে চলেছেন তাঁদেরও এদিন সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, আত্মরক্ষা করার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই এই সোসাইটির তরফ থেকে ক্যারাটে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ষাটোর্ধ্ব কৃষ্ণা পোদ্দার জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী রিকশা চালাতেন। কিন্তু তিন বছর ধরে মারণ রোগ ক্যান্সারে আক্রান্ত। তাই সংসারের হাল ধরতে তিনি লোকের বাড়িতে কাজ করেন। পিয়া পাসোয়ান ৬ মাস হল স্বামীকে হারিয়েছেন। দেড় বছরের একমাত্র সন্তানকে বড় করার জন্য তাই তিনি রাস্তার ধারে ঘুগনি বিক্রি করছেন। এদিন স্মারক এবং উপহার পেয়ে খুশি টোটোচালিক সান্ত্বনা দাস। একইভাবে আজ সম্বর্ধনা দেওয়া হল সবজি বিক্রেতা কিছু মহিলাদেরও। সোসাইটির সম্পাদক প্রলয় মজুমদার জানিয়েছেন, এই সমস্ত মহিলারা সমাজের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে স্বরোজগারের মাধ্যমে পরিবারের হাল ধরে সমাজে নারী জাগরণের দামামা বাজিয়েছেন। প্রতিটি লড়াকু মহিলার মনোবল বাড়াতে শহর জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় থাকা এমন ৫০ জন মহিলাকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয় এদিন। ‘আমরা নারী আমরাই পারি’ এই বার্তা সমাজের কাছে পৌঁছে দেবার জন্যই আজকের এই উদ্যোগ। এদিন অন্যান্যদের মধ্যে সোসাইটির তরফে উপস্থিত ছিলেন চৈতালি ঘোষ, মনীষা মণ্ডল, ইতি পোড়েল, জয়ী সাহা, দ্যুতি কোনার, শিল্পা অধিকারী প্রমুখরা।

Exit mobile version