গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, আসানসোল (পশ্চিম বর্ধমান) :- নির্ধারিত সময়ে এবং চুক্তিমতো ফ্ল্যাট না পেয়ে পশ্চিম বর্ধমানের রূপনারায়ণপুর থানার অরবিন্দ নগরের একটি নির্মাণ সংস্থার বিরুদ্ধে ৪১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে রাজ্য ক্রেতা আদালতের আসানসোল সার্কিট বেঞ্চে মামলা করলেন এক বৃদ্ধ। চুক্তিমতো তিনটি ফ্ল্যাট ও গাড়ি রাখার জায়গা না দিলে নির্মাণ সংস্থাকে ৩৫ লক্ষ টাকা বার্ষিক ১৮ শতাংশ হারে সুদসহ মেটানোর জন্য দাবি করেছেন বৃদ্ধ। এছাড়াও হেনস্তা ও মানসিক উদ্বেগের জন্য আরও ৫ লক্ষ টাকা এবং মামলা চালানোর খরচ বাবদ ১ লক্ষ টাকা নির্মাণ সংস্থার কাছে দাবি করেছেন তিনি। মামলাটি গ্রহণ করেছে ক্রেতা আদালতের সার্কিট বেঞ্চ। অভিযুক্ত সংস্থাকে মামলার আবেদনের নথিপত্র পাঠানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ১৭ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। সেদিন নির্মাণ সংস্থাকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম বর্ধমানের সালানপুর থানার রূপনগরের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী পীযূষ সাহা ১৯৮৫ সালে বেনাগড়িয়া মৌজায় একটি জমি কেনেন। সেখানে বাড়ি করে ছেলের সঙ্গে থাকতেন তিনি। ছেলে শিলিগুড়িতে বদলি হয়ে যাওয়ার পর বোনেরা বৃদ্ধর দেখাশোনা করার জন্য তার সঙ্গে থাকতেন। ২০১৫ সালে জমিতে ফ্ল্যাট তৈরির পরিকল্পনা করেন বৃদ্ধ। তার এবং বোনেদের থাকার জন্য তিনটি ফ্ল্যাট ও গাড়ি রাখার জায়গা দেওয়ার ব্যাপারে নির্মাণ সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হয়। চুক্তির পর তিনি ভাড়াবাড়িতে থাকতে শুরু করেন। ১ হাজার ৫০ স্কোয়ার ফিটের একটি ৩বিএইচকে এবং ২টি ৮০০ স্কোয়ার ফিটের ২বিএইচকে ফ্ল্যাট ও গাড়ি রাখার জায়গা বৃদ্ধকে দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দেয় নির্মাণ সংস্থা। এনিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে চুক্তি হয়। কিন্তু, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে বৃদ্ধ নির্মাণস্থলে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, তাকে যে মাপের ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা ছিল সেই মাপের কোনও ফ্ল্যাট তৈরি হচ্ছে না। প্ল্যানের পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। বিষয়টি তিনি নির্মাণ সংস্থার নজরে আনেন। নির্মাণ সংস্থাকে চুক্তিমতো ফ্ল্যাট দেওয়ার জন্য বলেন তিনি। যদিও তাতে কর্ণপাত করেনি নির্মাণ সংস্থা। বাধ্য হয়ে ক্রেতা আদালতের সার্কিট বেঞ্চে মামলা করেছেন বৃদ্ধ। তার হয়ে মামলা লড়ছেন আইনজীবী সৌরভ কুমার মিত্র ও শুভ্র চক্রবর্তী।