E Purba Bardhaman

সুইমিং পুলে কলেজ ছাত্রের মৃত্যুর ৭বছর পর হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআইয়ের তদন্ত শুরু

The Calcutta High Court directed the CBI to investigate the death of the student in the Children Cultural Centre swimming pool water in Burdwan town.

গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান শহরে চিলড্রেন্স কালচারাল সেন্টারের সুইমিং পুলের জল থেকে এক মেধাবি ছাত্রের দেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় তদন্তভার হাতে নিল সিবিআই। শুক্রবার বর্ধমান সিজেএম আদালতে তদন্তভার হাতে নেওয়ার বিষয়ে রিপোর্ট পেশ করেছে সিবিআই। কেসের তদন্তকারী অফিসার রয়েছেন সিবিআইয়ের কলকাতা অফিসের স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চের এসপি দীনেশ মোহন শর্মা। আদালত সিবিআইয়ের রিপোর্ট নথিভূক্ত করেছে। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের ২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ শহরের আলমগঞ্জ এলাকায় চিলড্রেন্স কালচারাল সেন্টারের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে যান শহরেরই আনন্দপল্লির রমেন সামন্ত (২১)। তিনি শহরের বিবেকানন্দ কলেজে ইংরাজী দ্বিতীয় বের্ষর ছাত্র ছিলেন। নির্দিষ্ট সময়ের পরও বাড়ি না ফেরায় রাত ১০টা নাগাদ রমেনের মোবাইলে ফোন করেন তাঁর মা। কিন্তু, কেউ ফোন ধরেনি। রাত ১০টা ১০ নাগাদ রমেন অসুস্থ বলে তাঁর বাড়িতে ফোন যায়। তাঁকে পরিবারের লোকজনকে তাড়াতাড়ি সুইমিং পুলে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়। খবর পেয়ে পুলিস সেখানে হাজির হয়। রমেনের মৃতদেহ জল থেকে তোলা হয়। তাঁর শরীরে কয়েক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। ঘটনার বিষয়ে মৃতের বাবা দেবকুমার সামন্ত পরেরদিন বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে ছেলেকে খুন করা হয়েছে। খুনে ছেলের বন্ধু-বান্ধব ও সুইমিং পুল কর্তৃপক্ষ জড়িত। খুনের পর দেহ সুইমিং পুলে ফেলে দেওয়া হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে খুন ও প্রমাণ লোপাটের ধারায় মামলা রুজু হয়।
তদন্তে নেমে পুলিস সুইমিং পুলের কেয়ার টেকার গোপীমোহন চট্টোপাধ্যায় ও প্রশিক্ষক প্রসেনজিৎ সোমকে গ্রেপ্তার করে। তাদেরকে হেফাজতে নেয় পুলিস। পরে তদন্তভার হাতে নেয় সিআইডি। ময়না তদন্তের রিপোর্টে জলে ডুবে রমেনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়। ফরেন্সিক ল্যাবরেটারিতে ভিসেরা পরীক্ষায় মৃতের পাকস্থলী থেকে ইথাইল অ্যালকোহলের অস্তিত্ব মেলে। মদ্যপ অবস্থায় সাঁতার কাটতে গিয়ে রমেনের মৃত্যু হয়েছে বলে আদালতে রিপোর্ট পেশ করে সিআইডি। গোপীমোহন ও প্রসেনজিতের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির (৩০৪এ) ধারায় চার্জশিট পেশ করে পুলিস। তাতে আপত্তি জানান মৃতের বাবা। সিআইডি তদন্তে বিস্তর অসঙ্গতি রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। সিআইডি তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করে সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন মৃতের বাবা। হাইকোর্টে তিনি জানান, তাঁর ছেলে মদ খেত না। তাই, ভিসেরা রিপোর্টটি তাঁর ছেলেরই কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে তিনি ডিএনএ টেস্টের দাবি করেন। ভিসেরা রিপোর্টে মৃতের পেট থেকে বালি পাওয়ার কথা বলা হয়। সুইমিং পুলে কিভাবে বালি এল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন দেবকুমারবাবুর আইনজীবী। হাইকোর্ট সিআইডিকে ময়না তদন্ত প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফি আদালতে পেশ করতে বলে। কিন্তু, সেটি হারিয়ে যাওয়ার কথা বলে আদালতে তা পেশ করেনি সিআইডি। সংগৃহীত ভিসেরার নমুনাও নিয়ম মেনে নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়েছে বলে সিআইডি আদালতে জানান। ময়না তদন্তের ভিডিও ক্যাসেট এবং ভিসেরার অংশ নিষ্পত্তির বিষয়েও তদন্ত করার জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট

Exit mobile version