পুলিশ পর্যবেক্ষকের নেতৃত্বে বর্ধমান শহরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চ
admin
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- গত বৃহস্পতিবার রাতেই পূর্ব বর্ধমান জেলায় এসে পৌঁছেছে এক কোম্পানী কেন্দ্রীয় বাহিনী। শুক্রবার সকাল থেকেই এই বাহিনীকে ৩টি প্লাটুনে ভাগ করে জেলা জুড়ে তাদের রুট মার্চ করানো হচ্ছে। রবিবার সকালে বাবুরবাগ, রসিকপুর, রামকৃষ্ণরোড, সুভাষপল্লী, পাঞ্জাবীপাড়া, লক্ষ্মীপুরমাঠ পরপর এলাকাগুলিতে রুট মার্চ করে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সঙ্গে ছিলেন বর্ধমান থানার আইসি তুষারকান্তি করের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনীও। এদিন রুট মার্চ করতে করতে লক্ষ্মীপুর মাঠের কাঁটাপুকুর এলাকায় ঢুকেই থমকে যায় বাহিনী। বাহিনীর প্রতিনিধিরা চোলাই মদের উত্কট গন্ধ পান। আর তারপরেই কাঁটাপুকুর এলাকায় শুরু হয় চোলাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযান। উদ্ধার হয়ে বেশ কয়েক লিটার চোলাই মদ। পুলিশ গ্রেপ্তার করে ৪ চোলাই কারবারীকে। এরপর সেখান থেকে লক্ষ্মীপুরমাঠের জোড়ামন্দির এলাকায় এসে সাময়িক বিরতির জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী একটি গাছতলায় বসতেই সেখানে এগিয়ে আসেন এলাকার ৪ যুবক সঞ্জীব মণ্ডল, নিশিকান্ত চতুর্বেদী, কৌশিক সাউ এবং প্রিয়রঞ্জন কুমার। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রসগোল্লা আর জল দিয়ে আপ্যায়ন করেন তাঁরা। তাঁরা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী জওয়ানরা দেশের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্রতী। এঁরাও এসেছেন শান্তিপূর্ণভাবে যাতে ভোট প্রক্রিয়া হয় সেই ব্যবস্থা করতে। তাই তাঁদের মিষ্টি আর জল দিয়ে তাঁরা আপ্যায়ন করার চেষ্টা করেছেন। এরপর সিআইএসএফের এই প্লাটুনটি রওনা দেয় বর্ধমান শহরের রথতলা, কাঞ্চননগর এলাকায়। এই সময়ে এই দলের সঙ্গে যুক্ত হন পূর্ব বর্ধমান জেলার দুটি লোকসভার দায়িত্বে থাকা পুলিশ পর্যবেক্ষক দেবেশ কুমার মাহলা। কাঞ্চননগরে গিয়ে সরাসরি বাসিন্দাদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করেন পুলিশ অবজার্ভার। ভোট দেওয়ার জন্য কোনো রকম রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে ভয় ভীতি বা উপহার দেওয়া হয় কিনা সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন তাঁরা। ভোট দেওয়ার জন্য কোনো রাজনৈতিক দল টাকা দেয় কিনা সরাসরি জানতে চান তিনি। কারা কারা ভোট দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন তাও জানতে চান তিনি। এদিন পুলিশ অবজার্ভার কাঞ্চননগরের বাসিন্দা তথা বর্ধমান পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলার এবং তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সাধারণ সম্পাদক খোকন দাস সম্পর্কেও জানতে চান। কয়েকটি জায়গায় কেবলমাত্র তৃণমূলের পতাকা থাকায় সে বিষয়টিও নথীভুক্ত করার নির্দেশ দেন প্লাটুন কমাণ্ডারকে। তাঁকে তিনি জানান, কেবল ঘুরলেই হবে না। একেবারে পর্যেবক্ষণ করতে হবে এবং সে ব্যাপারে সমস্ত কিছু নথীভুক্ত করে তাঁকে জানাতে হবে। এদিন কাঞ্চননগর এলাকায় কয়েকটি তোরণ সহ কিছু জায়গায় ফলকে বেশ কিছু মন্ত্রী–নেতাদের নাম দেখতে পেয়ে সেগুলি ঢেকে দেওয়ার নির্দেশ দেন পুলিশ অবজার্ভার। কয়েকটি স্কুলের ভেতর বুথ দেখতে গেয়ে দেওয়ালে আঁকা বিভিন্ন ছবি দেখে তিনি জানতে চান এগুলি কেন? এর সঙ্গে রাজনৈতিক দলের কোনো প্রতীকের মিল থাকলে তা মুছে দেবারও নির্দেশ দেন। সরকারী বিদ্যুত ও টেলিফোনের খুঁটিতে তৃণমূলের পতাকা দেখে কেন সরকারী জায়গায় রাজনৈতিক দলের পতাকা লাগানো রয়েছে সে বিষয়ে জানতে চান আইসির কাছে। একইসঙ্গে ২৩ ও ২৪ নং ওয়ার্ডের কয়েকজন দাগী অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিনা জানতে চান পুলিশ অবজার্ভার। এদিন বেশ কয়েকটি গাড়ি চুরির কেসে অভিযুক্ত এক অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিনা তাও জানতে চান পুলিশ অবজার্ভার।