গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- দুর্গাপুরের এক নামী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে খুনের পরিকল্পনার অন্যতম মূল চক্রীকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। ধৃতের নাম শৈলেন গড়াই। দুর্গাপুর থানার অন্নপূর্ণানগরে তার বাড়ি। বৃহস্পতিবার বিকালে দুর্গাপুরের বেনাচিতির প্রান্তিকা এলাকা থেকে সিআইডির গোয়েন্দারা তাকে পাকড়াও করেন। ব্যবসায়ীকে অপহরণ ও খুনের পরিকল্পনার কথা ধৃত কবুল করেছে বলে সিআইডির দাবি। ব্যবসায়ীকে খুনের পরিকল্পনায় তার সঙ্গে কুলটির দীপক সিংহ জড়িত বলে শৈলেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জেনেছে সিআইডি। শৈলেন ও দীপক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে খুনের জন্য তিন সুপারি কিলার নিয়োগ করে বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। ব্যবসায়ীকে খুনের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা তিন সুপারি কিলারকে দিত শৈলেন ও দীপক। তারা হেরোইনের কারবারেও জড়িত বলে জানতে পেরেছে সিআইডি। শুক্রবার ধৃতকে বর্ধমানের মাদক সংক্রান্ত আদালতে পেশ করা হয়। দীপকের হদিশ পেতে এবং হেরোইন ও অস্ত্রের কারবারের বিষয়ে বিশদে জানতে শৈলেনকে ৭ দিন পুলিসি হেপাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানায় সিআইডি। ধৃতকে ৩ দিন সিআইডি হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন মাদক সংক্রান্ত বিশেষ আদালতের বিচারক নন্দন দেব বর্মন।
সিআইডি জানিয়েছে, দুর্গাপুরের এক নামী ব্যবসায়ীকে খুনের পরিকল্পনা করে দীপক ও শৈলেন। সে জন্য তারা বিহারের পাটনার কুখ্যাত সুপারি কিলার রবি চৌরাশিয়াকে বরাত দেয়। রবি পরিকল্পনা সফল করতে তার দুই শাগরেদ অজিত কুমার সিং ও জীতেন্দ্র কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ৫ জনে মিলে ব্যবসায়ীকে খুনের ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করে। কয়েকমাস আগে দুর্গাপুরে এসে গা-ঢাকা দেয় রবি। বিহারের মুঙ্গের থেকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আসার জন্য বরাত দেওয়া হয় অজিত ও জীতেন্দ্রকে। দীর্ঘদিন ধরে বিহার পুলিস রবি ও তার দুই সঙ্গীকে খুঁজছিল। রবি দুর্গাপুরে গা-ঢাকা দিয়েছে বলে জানতে পারে বিহার পুলিস। বিহার পুলিসের তরফে তার সম্পর্কে সমস্ত তথ্য সিআইডিকে দেওয়া হয়। জীতেন্দ্র ও অজিত যে সড়ক পথে দুর্গাপুরে আসবে সেই তথ্যও বিহার পুলিস দেয় সিআইডিকে। বিহার পুলিসের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডির নারকোটিক সেলের ওসি সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায় দুর্গাপুরে হাজির হন। তার নেতৃত্বে অপারেশন চালিয়ে সিআইডি রবি, অজিত ও জীতেন্দ্রকে ধরে। তাদের কাছ থেকে হেরোইন ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়। তাদের হেপাজতে নিয়ে পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে পেরেছে সিআইডি। ২০১৫ সালে পুরুলিয়ার একটি খুনের মামলাতেও রবি ও তার সঙ্গীরা জড়িত বলে জিজ্ঞাসাবাদ করে জেনেছেন গোয়েন্দারা। বিহার, ঝাড়খণ্ড ও উত্তর প্রদেশেও তাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পরিকল্পনার অন্যতম মাথা দীপককে হন্যে হয়ে খুঁজছেন সিআইডির গোয়েন্দারা। তার খোঁজে কুলটি ও আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে সিআইডি।