বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- আর জি কর কাণ্ডের পরই বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে নিয়োগ করা হয়েছিল আরও কিছু সিভিক ভলানটিয়ারকে। যা নিয়ে বিতর্কও বাধে। যেহেতু আর জি কর কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত নিজেই সিভিক ভলানটিয়ার, তাই বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এখানকার নিরাপত্তার জন্য সিভিক ভলানটিয়ারে সম্মতি জানানোয় বিশেষত জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ তা মানতে চাননি। যদিও তারপরেও আরও বেশি সিভিক ভলানটিয়ার নিয়োগ করেই চলছিল হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থায়। কিন্তু এরই মাঝে সুপ্রিম নির্দেশের পরই নড়েচড়ে বসলো জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সরজমিনে খতিয়ে দেখতে যান জেলা পুলিশের তিন সদস্যদের একটি পদস্থ দল। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, স্কুল ও হাসপাতালে নিরাপত্তার দায়িত্বে সিভিক ভলানটিয়ার রাখা যাবে না। রাজ্যকে হলফনামায় নিশ্চিত করতে হবে কোনও স্কুল এবং হাসপাতালের মতো স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানে সিভিক ভলানটিয়ার রাখা হয় নি। এমনকি, কোনও থানা এবং তদন্তের সঙ্গে জড়িত কোথাও সিভিক ভলানটিয়ার নিয়োগ করা হয়নি, তা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্য সরকারকে। স্বাভাবিকভাবেই সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ পাওয়ার পরই রাজ্যের অন্যান্য হাসপাতালের পাশাপাশি বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকেও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিভিক ভলানটিয়ারদের সরিয়ে দেওয়া হল। বৃহস্পতিবার ডিএসপি হেডকোয়ার্টার অতনু ঘোষাল, ডিএসপি (ডিআইবি) বীরেন্দ্র পাঠক এবং বর্ধমান থানার আইসি দিব্যেন্দু দাস পুলিশের তিন আধিকারিক যান বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তাঁরা হাসপাতাল চত্বরে নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো কীভাবে আঁটোসাঁটো করা যায় সেই বিষয়েই তারা গোটা এলাকা পরিদর্শন করেন। এই বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক ব্যানার্জী জানিয়েছেন, হাসপাতাল থেকে সিভিক ভলানটিয়ার আগেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে কোন সিভিক ভলানটিয়ার নেই। আগে থেকেই হাসপাতালে পুলিশ ফোর্স বাড়ানো হয়েছে। এমনিতেই হাসপাতাল চত্বরে পাকাপাকি ভাবে পুলিশ ক্যাম্প আছে। তাছাড়া নিরাপত্তার বিষয়টি আরো জোড়ালো করার জন্য পুলিশ আধিকারিকরা পরিদর্শন করেছেন। এই মুহূর্তে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন কমবেশি ৫০ জনের মত সিভিক ভলানটিয়ার। এখন আদালতের নির্দেশ মানতে গিয়ে সিভিক ভলানটিয়ারের পরিবর্তে এত পুলিশ কর্মী কীভাবে মিলবে সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে খোদ পুলিশ মহলে। তবে এই বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন,আমরা নিরাপত্তার বিষয়টিতে জোর দিয়েছি। আগে থেকেই হাসপাতালে পুলিশ ফোর্স বাড়ানো হয়েছে।