E Purba Bardhaman

মেমারীর সমবায় সমিতির দুর্নীতি নিয়ে বিধায়ক বনাম ব্লক সভাপতি অনুগামীদের সংঘর্ষ, পুলিশের লাঠিচার্জ

Clash between MLA vs Block President followers over Memari Cooperative Society corruption, police lathi charge

মেমারী (পূর্ব বর্ধমান) :- মেমারীর ‘আমাদপুর ইউনিয়ন কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচারাল ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড’-এর একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে রবিবার আলোচনা সভায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল। ব্লক সভাপতি অনুগামী বনাম বিধায়ক অনুগামীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ থামাতে পুলিশকে লাঠিচার্জও করতে হয়। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরেই সমবায় সমিতির সদস্য তথা ব্লক সভাপতি অনুগামীরা একাধিক বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলছিলেন। দুর্নীতির বিষয় নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগও জানানো হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার বৈঠক ডাকা হয়। মেমারীর তৃণমূল ব্লক সভাপতি নিত্যানন্দ ব্যানার্জীর অনুগামী হাসমতুল্লা মোল্লা জানিয়েছেন, আমাদের সদস্যের সাথে দাঁড়িয়ে ছিলাম। সদস্য মিঠুন চক্রবর্তীর সাথে ঝামেলা হচ্ছিল। তখন মেমারীর বিধায়ক মধু ভট্টাচার্যের লোকেরা আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক মারধর করেছে। পুলিশ এসে তাড়া করে, লাঠিচার্জ করে। অনেকজন আহতও হয়েছেন। ব্লক সভাপতির অনুগামী সেখ হায়দার আলি জানিয়েছেন, পুলিশ শুধু আমাদের মেরেছে। আমাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য মনমোহন দাস জানিয়েছেন, এই ঘটনায় আবার তাঁরা লিখিত আবেদন করবেন। আবার আলোচনায় বসবেন। বিধায়ক অনুগামীরা চাষীদের উপর হামলা করেছে। পড়ে পুলিস এসে নিয়ন্ত্রণ করতে লাঠি চার্জ করেছে। আগে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে লিখিতভাবে এদিন তাঁদের আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছিল। তাঁরা আলোচনায় বসেছিলেন। তিন দফার রিপোর্ট দিয়ে পুলিশ দিয়ে হুমকি দিয়ে তাঁদের বের করে দেওয়া হয়। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, সেক্রেটারি ছিলেন। বিধায়ক পরিকল্পনা করে চাষিদের উপর হামলা করিয়েছে। আমাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অপর এক সদস্য মিঠুন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, এদিন ম্যানেজার সময় দিয়েছিলেন। তাঁদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য। বিধায়ক এখানকার ভাইস চেয়ারম্যান, তিনি অন্য জায়গা থেকে লোক নিয়ে এসে ঝামেলা করেছেন। ১২ দফা দাবি ছিল। বাড়ি তৈরির লোন নিয়ে গন্ডগোল করেছে। সারের দোকানে ধার দিয়েছে কোনও কাগজ না নিয়ে। ভেতরে যখন হিসাবের কাজ হচ্ছে। আমরা বাইরে ছিলাম। এই সময় বিজরে থেকে আসা লোকেরা ঝামেলা করে, মারধর করে। এরপর পুলিশ এসে মারধর করে। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পুলিশ দোষীদের মারধর করেনি, আমাদেরকেই মারধর করেছে। তাঁদের দাবী, সিআই এবং এআরসিএস-কে নির্বাচনের জন্য তাঁরা চিঠি দেবেন। আর যতক্ষণ না নির্বাচন হচ্ছে ততদিন বর্তমান পরিচালন সমিতি তাঁদের রেজুলেশন যাতে কার্যকর না করতে পারে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবার আবেদন জানাবেন। এদিকে, এই ঘটনা সম্পর্কে মেমারীর তৃণমূল বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, আলোচনা চলছিল। হঠাৎ করে উত্তেজনা তৈরি হয়। দুর্নীতির প্রসঙ্গ ওঠে। আমরা জানাই অনিয়ম হলে প্রশাসন আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু সেই কথা না শুনে উত্তেজনা ছড়ায়। হুমকি দিতে থাকে। যারা টাকা নিয়ে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করছেন আমরা সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি। অনেকটা সফলও হয়েছি। আমরা চট করে মামলা করতে চাই না, মামলা করলে বিষয়টা সুদূরপ্রসারী হয়ে যায়। আলোচনা চলার সময় অযথা উত্তেজনা ছড়ায়। তখন পুলিশ এসে ১০ মিনিটের মধ্যে আলোচনা শেষ করতে বলে। ব্লক সভাপতি-বিধায়ক এখানে বিষয় নয়। আমি এখানে বিধায়ক হিসাবে আসিনি। প্রধান যে আলোচনা সেগুলো সবই হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল পুলিশ প্রশাসন আলোচনা শেষ করাতে বাধ্য হয়েছে। মধুসূদনবাবু তাঁর বিরুদ্ধে হামলায় মদতের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, পুলিশ-প্রশাসন সব দেখবে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয়। সমিতি ভালো করে চলুক এটাই আমরা চাই। লাঠিচার্জ করতে হয়েছে কিনা, কী পরিস্থিতিতে করতে হয়েছে সেটা পুলিশ-প্রশাসন দেখবে। অন্যদিকে, সমবায়ের সম্পাদক বাপ্পা দাস জানিয়েছেন, সমবায়ে কোনো দুর্নীতি হয়নি। মিথ্যে অভিযোগ। আলোচনা চলাকালীন বাইরে পরিস্থিতি এমন তৈরি হয় পুলিশ-প্রশাসন ১০ মিনিটের মধ্যে আলোচনা শেষ করতে বলে। বিধায়ক অনুগামীরা মারধর করেছে এটা মিথ্যে অভিযোগ। যারা এসেছিলেন বেশিরভাগই সমবায়ের ডিফল্টার।

Exit mobile version