বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- গলসি থানার জাগুলিপাড়ায় শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর মারপিট ও বোমাবাজির ঘটনায় দু’পক্ষের ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার দিন রাতেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের সকলেরই বাড়ি জাগুলিপাড়ায়। ঘটনায় দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে মারধর, ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা, বোমাবাজি, খুনের চেষ্টা ও হুমকি দেওয়ার ধারায় পৃথক মামলা রুজু হয়েছে। ধৃতদের বুধবার বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। মারধরে ব্যবহৃত অস্ত্র, আরও বোমা উদ্ধার করতে এবং বাকি জড়িতদের হদিশ পেতে ধৃতদের মধ্যে মোল্লা খাইরুল জামাল ওরফে রাজু, বিশাল বাউড়ি, শেখ শের আলি ওরফে অপূর্ব ও মোল্লা শের শা ওরফে বাদশাকে ১০ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ। ৪ জনকে ৩ দিন পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম। বাকিদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে ১৭ জানুয়ারি ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দেন বিচারক। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার কর্তৃত্ব নিয়ে শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ চলছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট বিলিকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর বিবাদ ও দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়। দিনকয়েক আগে থেকে তা ফের মাথা চাড়া দেয়। বুধবার বর্ধমানের কার্জন গেটে তৃণমূলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষের পথসভা ছিল। এক গোষ্ঠীর অভিযোগ, সেই সভায় যাওয়ার জন্য তাঁরা মিটিং করছিলেন। সেই সময় অপর গোষ্ঠীর লোকজন অস্ত্রশস্ত্র ও বোমা নিয়ে তাঁদের উপর হামলা চালায়। রুখে দাঁড়ালে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। যদিও অভিযোগে হালিমা বেগম জানিয়েছেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তাঁর স্বামী শেখ মণিরুল সহ কয়েকজন গ্রামের মসজিদের কাছে গল্প করছিলেন। সেই সময় লাঠি, বাঁশ, শাবল, টাঙি, বোমা নিয়ে তাঁদের উপর হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা বোমাবাজিও করে বলে তাঁর অভিযোগ। হামলায় তাঁর স্বামী সহ কয়েকজন জখম হন। জখমদের পুরষা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মণিরুলকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন। অন্যদিকে, মোল্লা মণিরুল জামাল ওরফে মনুর অভিযোগ, মসজিদের কাছে তাঁরা কয়েকজন দাঁড়িয়েছিলেন। সেই সময় তাঁদের উপর হামলা চালানো হয়। মারধরের পাশাপাশি বোমাবাজিও করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ফাটা বোমার সুতলি, ইটের টুকরো, লাঠি প্রভৃতি বাজেয়াপ্ত করেছে।