বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- সাম্প্রতিক স্কুল পড়ুয়াদের ট্যাব কেলেঙ্কারির সমস্ত দায় করণিকদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার একটা প্রচেষ্টা চলছে। তাঁরা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। রবিবার বর্ধমানের লাকুর্ডি বিদ্যামন্দির হাইস্কুলে ‘স্কুল অ্যান্ড মাদ্রাসা ক্লার্কস অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল’-এর জেলা সম্মেলন থেকে এই আওয়াজ তুললেন স্কুলের করণিকরা। কার্যত এদিনের সম্মেলনে আলোচনার মুখ্য বিষয়ই ছিল এই ট্যাব কেলেঙ্কারির বিষয়। এদিন করণিকরা দাবি করেন, ট্যাবের জন্য পোর্টালে পড়ুয়াদের তথ্য তোলার জন্য তাঁরা স্কুলে কাজ করেন। কিন্তু এই পোর্টালে স্ক্যান করে পড়ুয়াদের তথ্য তুলে সাবমিট করে দেওয়ার পর তাঁদের আর সেটা পরিবর্তন করার আর সুযোগ থাকে না। আর এই কাজে প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রধান শিক্ষকের মোবাইল নম্বরে ওটিপি আসে। স্কুলের পাশাপাশি এই পোর্টাল এসআই এবং ডিআই-রাও লগ-ইন করতে পারেন। সেখানেও অস্থায়ী কর্মীরা কাজ করেন। এরপরেও যদি স্কুলের কোনও করণিক এই অপরাধে যুক্ত থাকে তার শাস্তি হোক। কিন্তু সার্বিকভাবে তাঁদের গায়ে কালী লাগানোর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তাঁরা। এদিন এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সম্পাদক তাপস গলুই, রাজ্য সহ-সভাপতি জিতেন্দ্রনাথ চৌধুরি, রাজ্য কোর কমিটির সদস্য বিশ্বেশ্বর চক্রবর্তী, শ্যামল মজুমদার, দীপঙ্কর চ্যাটার্জী-সহ অন্যান্যরা। এদিন তাপস গলুই এবং বিশ্বেশ্বর চক্রবর্তীরা জানিয়েছন, রবিবারের এই সভায় পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটি তৈরি হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, স্কুল শিক্ষা বিভাগের ৯০ বছর কেটে গেলেও করণিকদের কিছু সামাজিক ও অর্থনৈতিক বঞ্চনা চলছে। তাঁরা জানিয়েছেন, সর্বনিম্ন মাধ্যমিক পাশের যোগ্যতায় চাকরিতে যুক্ত হওয়া করণিকদের ২৮ ধরনের কাজ করতে হয়। তাঁদের যদি কিছু ভুলও হয় সেটা প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দেখে নেওয়া দরকার। ফাইনাল সাবমিশন করার পরে কোনও ভাবেই তাঁদের পক্ষে এডিট করা সম্ভব নয়। সামগ্রিক পদ্ধতিতে কোথাও গলদ আছে। অপরাধীরা সেটারই সুযোগ নিচ্ছে। তাঁদের দাবি, তাঁদের কর্মতালিকা তৈরি করে দেওয়া হোক। এই চাকরিতে যুক্ত হওয়ার জন্য সর্বনিম্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়ানো হোক। চাকরিরত করণিকদের সরকার বিভিন্ন কাজ অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করুক। তাঁরা এদিন জানিয়েছেন, বর্তমানে রাজ্যে ৯৩৮২ টি মাধ্যমিক স্তরের স্কুল, ৮৭১ টি উচ্চমাধ্যমিক স্তরের স্কুল আছে এবং মাদ্রাসার সংখ্যা ৬৫২ টি। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ২০ শতাংশতেই করণিক পদ ফাঁকা অবস্থায় পড়ে আছে অথবা প্রয়োজনের থেকে কম সংখ্যক করণিক আছেন। এই শূন্যপদ অবিলম্বে পূরণ করার দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এদিনের সম্মেলন থেকে ঠিক হয়েছে তাঁরা তাঁদের দাবিগুলি মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীকে লিখিত আকারে জানাবেন।