E Purba Bardhaman

ফের মেমারী কলেজের অধ্যাপককে মারধর করার অভিযোগ তৃতীয় শ্রেণীর কর্মীর বিরুদ্ধে

মেমারি (পূর্ব বর্ধমান) :- মেমারি কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপককে মারধর করার অভিযোগ উঠল কলেজের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মী তথা বিতর্কিত তৃণমূল নেতা মুকেশ শর্মার বিরুদ্ধে। বুধবার বিকালে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র আতংক সৃষ্টি হয়েছে কলেজ চত্বরে। এদিন কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশীষ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, মুকেশ শর্মা দুর্নিবার হয়ে উঠেছে। তাঁকে আটকাতে না পারলে এবং তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করা হলে এই কলেজে তাঁদের পক্ষে চাকরি করাই অসম্ভব। তিনি জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই তাঁরা গোটা বিষয়টি নিয়ে ফের নবান্নে যাচ্ছেন। প্রয়োজনে কলেজের সমস্ত অধ্যাপকরা সেখানে গিয়ে ধর্ণাতেও বসবেন। তিনি জানিয়েছেন, সম্প্রতি ওই মুকেশ শর্মা তাঁদের কলেজের অধ্যাপকদের একটি ঘরে আটকে রেখে বহিরাগতদের নিয়ে রীতিমত চুড়ান্ত হেনস্থা করেন। প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। এই ঘটনায় আতংকিত কলেজের অধ্যাপকরা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, জেলাপ্রশাসন সহ রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের কাছেও অভিযোগ দায়ের করেন। কার্যত উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সবুজ সংকেত পাওয়ার পরই মুকেশ শর্মার বিরুদ্ধে মেমারি থানায় দুটি পৃথক অভিযোগ দায়ের হয়। গ্রেপ্তারী এড়াতে পালিয়ে বেড়ায় মুকেশ শর্মা। পরে বর্ধমান আদালত থেকে তিনি জামিন পান। এই ঘটনায় উচ্চ শিক্ষা দপ্তর কলেজের পরিচালন সমিতি এবং কলেজের ছাত্র সংসদ ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। পরিচালন সমিতি ভেঙে দিয়ে বসানো হয় প্রশাসক। এদিকে, বুধবার বাংলার অধ্যাপককে মারধর করার ঘটনায় কলেজের অধ্যাপকরা ফের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেছেন। আক্রান্ত অধ্যাপকের নাম কস্তুর আমেদ মোল্লা। তিনি বাংলা বিভাগের অধ্যাপক। বুধবার কলেজের প্রশাসক তথা বর্ধমান সদর দক্ষিণ মহকুমা শাসক অনির্বাণ কোলের কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি। আক্রান্ত অধ্যাপক জানিয়েছেন, এদিন ছুটির দরখাস্ত দিতে কলেজে গেছিলেন। কলেজের করিডর দিয়ে যাবার সময় মুকেশ শর্মার সঙ্গে তাঁর কাঁধে স্পর্শ হয়। এরপর তাঁকে কলেজের দোতলা থেকে ধাক্কা মারতে মারতে কলেজের নিচের তলায় নিয়ে আসা হয়। তাঁর বুকে জোড়ালো পরপর আঘাত করা হয়। তিনি অসুস্থতা বোধ করেন। এরপর কলেজ ছেড়ে বিকালে অন্য অধ্যাপকদের সঙ্গে বেড়িয়ে আসছিলেন সেই সময় মুকেশ শর্মা তাঁর পথ আটকায়। তাঁকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় তাঁকে। তাঁকে হাতে চুড়ি আর কাপড় পড়িয়ে ঘোরানোর হুমকিও দেওয়া হয়। অন্যান্য অধ্যাপকদের সামনে এভাবে অপমানিত করায় তাঁরা প্রতিবাদ করতে গেলে অভিযোগ, তাঁদেরও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন মুকেশ শর্মা। এরপরই কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশীষ চক্রবর্তী সহ কলেজের কয়েকজন অধ্যাপক আক্রান্ত অধ্যাপককে নিয়ে হাজির হন কলেজের প্রশাসক অনির্বাণ কোলের কাছে। তাঁকে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। মহকুমা শাসক জানিয়েছেন, তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। এব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে প্রশাসনিকভাবে ওই কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Exit mobile version