গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- এক মহিলার মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল বর্ধমান হাসপাতালের বিরুদ্ধে। শুধু চিকিৎসায় গাফিলতি নয়, মহিলার মৃত্যুর পর মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দিতে দীর্ঘক্ষণ দেরি করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার কথা লিখিতভাবে হাসপাতালের সুপারকে জানিয়েছেন মৃতার মা। তাঁর অভিযোগ, মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিলনা। চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত দাবি করেছেন তিনি। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে, হাসপাতালের তরফে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। মেডিসিন নাকি গাইনি কোন বিভাগ মৃতার ডেথ সাির্টফিকেট দেবে তা নিয়ে টানাপোড়েনে মৃতদেহ হস্তান্তরে বিলম্ব হয়েছে বলে মেনে নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বিকাল ৫টা নাগাদ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি হন আসানসোলের রামনগরের রুকসোনা খাতুন (৩৪)। তাঁর বুকে ব্যাথা হচ্ছিল। তিনি ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। হাসপাতালের রাধারাণি ওয়াের্ড রেখে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। রবিবার সকাল ৮টা নাগাদ তাঁর গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। তাঁকে হাসপাতালের গাইনি ওয়াের্ড নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা হয়। পরে তাঁকে গাইনি ওয়ার্ড থেকে ফের রাধারাণি ওয়াের্ড পাঠানো হয়। সেখানে সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তিনি মারা যান। মৃতার মা রাণিগঞ্জের মির্জাপাড়ার রহমতনগরের ফিরোজা মনসুরি বলেন, মেয়ে বুকে ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হয়। মেয়ের শারীরিক অবস্থা তেমন খারাপ ছিলনা। চিকিৎসায় গাফিলতিতে মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়ার পর হাসপাতালের চিকিৎসক ৪ ঘন্টা পর মৃতদেহ ছাড়া হবে বলে জানান। কিন্তু, সোমবার সকাল পর্যন্ত দেহ ছাড়া হয়নি। চিকিৎসায় গাফিলতি ঢাকতেই কি মৃতদেহ ছাড়তে এত বিলম্ব হল? হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডাঃ অমিতাভ সাহা বলেন, মহিলার শারীরিক অবস্থা মোটেই ভালো ছিলনা। বুকে ব্যাথা ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল তাঁর। চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি ছিলনা। মহিলার গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। গাইনি নাকি মেডিসিন কোন বিভাগ ডেথ সাির্টফিকেট দেবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা দেরী হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মহিলার চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখে কমিটি রিপোর্ট দেবে। তার পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।