E Purba Bardhaman

তৃণমূল নেতাদের মদতে অবাধে বালি, মাটি পাচারের অভিযোগ করলেন কংগ্রেস প্রার্থী

Press Conference - Siddhartha Majumder INC candidate of Bardhaman Purba Lok Sabha constituency

বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসন এলাকায় বেপরোয়াভাবে চলছে বালি ও মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম। আর এই দৌরাত্মে মধ্যমণি রাজ্যের শাসকদলের নেতারা। তিনি সাংসদ হলে এই দৌরাত্ম বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন বলে মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী সিদ্ধার্থ মজুমদার। এদিন সিদ্ধার্থবাবু অভিযোগ করেছেনবর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের ভাগীরথীর ভাঙন সেখানকার হাজার হাজার মানুষকে পথে বসিয়ে দিয়েছেন। এতদিন কেন্দ্রের গঙ্গার পাড় বাঁধানোর টাকা এসেছে। কিন্তু কাজ তেমন হয়নি। সেই টাকা নেতারা আত্মসাত করেছেন। ফলে ছিন্নমূল হয়ে যাওয়া মানুষের অসহায়তা আরও বেড়েছে। চলতি লোকসভা নির্বাচনে প্রচারে বেড়িয়ে তিনি এই সব মানুষের দুর্দশা দেখেছেন। এব্যাপারে তিনি সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হলে সুপ্রীম কোর্টে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করে কেন্দ্রের টাকা কোথায় গেল তার জবাব চাইবেন। শুধু এটাই নয়এরই পাশাপাশি কালনা মহকুমার একটি বৃহত অংশে রয়েছে তাঁতি পরিবার। কিন্তু রাজ্য সরকার কয়েকটি বিপণন কেন্দ্র খুলে দিলেও তাঁতির তৈরী পণ্যকে বাণিজ্য করার মত কোনো পরিকাঠামোই তৈরী করেনি। তিনি সাংসদ হলে এব্যাপারে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গড়ে তিনি তাঁতিদের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ঘটাবেন। এদিন সিদ্ধার্থবাবু জানিয়েছেনএই কেন্দ্রের চাষীদের কষ্ট চরমে উঠেছে। তৃণমূলের নেতারা ফড়ে হিসাবে চাষীদের মাল সস্তায় কিনে বিক্রি করছেন। আর চাষীরাই খেতে পাচ্ছেন না। তিনি এই ফড়েরাজকে খতম করতে চান। আর তা করা গেলেই এই কেন্দ্রের মানুষের ৪০ শতাংশ সমস্যা মিটে যাবে। এদিন সিদ্ধার্থবাবু অভিযোগ করেছেনবিজেপি – তৃণমূল গোপন সমঝোতা হয়ে গেছে। পূর্ব বর্ধমান জেলায় তৃণমূল বিজেপিকে বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা আসন ছেড়ে দিয়েছে আর বিজেপি তৃণমূলকে বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসন ছেড়ে দিয়েছে। মঙ্গলবার বর্ধমানে সাংবাদিক বৈঠকে এমনই অভিযোগ করলেন বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসনের কংগ্রেস প্রার্থী সিদ্ধার্থ মজুমদার। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে সিদ্ধার্থ মজুমদার অভিযোগ করেছেন,সম্পূর্ণভাবে পরিকল্পনা করেই তাঁকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকা প্রশাসনকে ব্যবহার করছে তৃণমূল কংগ্রেস। তিনি জানিয়েছেননির্বাচনী প্রচারের জন্য রোড শো কিংবা পথসভার জন্য আবেদন করা হলে তাদের জানানো হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস আগে থেকেই বুকিং করে রেখেছে তাই অনুমতি দেওয়া যাবে না। আবার কখনও বলা হচ্ছে সার্ভার ডাউন তাই অনুমতি দেওয়া যাচ্ছে না। সিদ্ধার্থবাবু জানিয়েছেনপ্রশাসনের এই ভূমিকা নিয়ে বুধবারই তাঁরা লিখিতভাবে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাতে চলেছেন। তিনি এদিন জানিয়েছেনপ্রচারে বেড়িয়ে তিনি মন্তেশ্বরজামালপুর সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছেনজোর করে তৃণমূলবিজেপির দেওয়াল লিখন করা হয়েছে তাঁদের অনুমতি ছাড়াই। নিজের জেতার ব্যাপারে সম্পূর্ণ আশাবাদী কংগ্রেস প্রার্থী সিদ্ধার্থ মজুমদার জানিয়েছেনতাঁরা বিনা লড়াইয়ে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে নারাজ। ইতিমধ্যেই তাঁর লোকসভা এলাকায় ১৯০০রও বেশি বুথের প্রতি বুথে বুথে নজরদারী টিম গঠন করেছেন। থাকছে কংগ্রেসের নিজস্ব ক্যামেরাবাহিনীও। তাঁরা প্রতি বুথের ছবি তুলে সঙ্গে সঙ্গে আপলোড করে জানাবে নির্বাচন কমিশনকে। কংগ্রেসের নিজস্ব বাহিনী ছাড়াও সিদ্ধার্থবাবুর দাবীসাধারণ মানুষ তাঁকে জানিয়েছেন তাঁরাও তৈরী থাকবেন ভোটের দিন। কিছু হলেই তাঁরা ছবি তুলে জানিয়ে দেবেন। সিদ্ধার্থবাবু জানিয়েছেন,বিজেপি তৃণমূলের মধ্যে গোপন সমঝোতা হয়েছে। তাই তারা রাজ্য পুলিশকে নিয়েই ভোট পরিচালনা করতে চাইছে। কিন্তু কংগ্রেস প্রতিটি বুথে আধা সামরিক বাহিনীর দাবী থেকে সরছে না। আর আধা সামরিকবাহিনী আসুক বা না আসুক কংগ্রেস সমস্ত বুথেই নজরদারী চালাবে নিজস্ব বাহিনী দিয়ে। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে হাজির থাকা কংগ্রেস প্রার্থীর এজেণ্ট তথা জেলা কংগ্রেসের সহ সভাপতি কাশীনাথ গাঙ্গুলীবাবলু দাসরাইমণি দাস প্রমুখরাও হাজির ছিলেন। সিদ্ধার্থবাবু এদিন জানিয়েছেননির্বাচন কমিশনের কাজ দেখে তাদের প্রতি তিনি আস্থা হারাচ্ছেন।

Exit mobile version