বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- “বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক খোকন দাসের মত এরকম কর্মঠ, সফল এবং জনদরদি বিধায়ক বর্ধমান গত ৭টা টার্মে পায়নি।” – বক্তা ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার বর্ধমানের প্রাক্তন নেতা শ্যামল রায়। সোমবার সকালে নিজের জন্মদিনে আচমকাই বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক অসুস্থ খোকন দাসের বাড়িতে পৌঁছে বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শ্যামল। আর সেই ছবি ভাইরাল হতেই শ্যামলের গলায় খোকন বন্দনা। যা নিয়ে গোটা শহর জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখ্য, বিজেপির জেলা অফিসে হামলা-সহ বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে খোলামেলা সমালোচনা প্রভৃতি একাধিক কারণে বছরখানেক আগেই শ্যামলকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিজেপি। বিশেষ করে বর্ধমান শহরে বিজেপির একাধিক হৈচৈ ফেলে দেওয়া আন্দোলনের হোতা এই যুব নেতা শ্যামলকে দল থেকে বহিষ্কার করায় তাঁর অনুগামীরাও কার্যত বসে পড়েন। বছরখানেক ধরে বসে থাকার পর সোমবার বিধায়কের বাড়িতে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে যাওয়া নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই বিধায়ক খোকন দাসের একটি অপারেশন হয়েছে। বর্তমানে তিনি বাড়িতেই বিশ্রামে রয়েছেন। এদিন শ্যামল রায় জানিয়েছেন, অসুস্থ বিধায়ককে দেখতে এসেছিলেন তিনি। আজ তাঁর নিজের জন্মদিন। বিধায়কও তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এরপরই শ্যামল বলেন, বিজেপির সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। বিজেপি তাঁর কাছে অতীত। তাই ওনিয়ে কোনো ভাবনা নেই। তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়েও ধোঁয়াশা বজায় রেখেই শ্যামল জানিয়েছেন, এদিন এব্যাপারে বিধায়কের সঙ্গে তাঁর কোনো কথা হয়নি। কেবলই সৌজন্য আর কুশল বিনিময় হয়েছে। তবে বিগত ৩৫ বছরের মধ্যে একজন কর্মঠ, উদ্যমী বিধায়ক বর্ধমানবাসী পেয়েছেন। এর আগে কোনো বিধায়ককেই পুজোর সময় প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরতে দেখা যায়নি। উল্লেখ্য, এদিন কেবল শ্যামলই নন, বিধায়কের সঙ্গে দেখা করতে এদিন শ্যামলের সঙ্গে তাঁর কয়েকজন অনুগামীও যান বিধায়কের বাড়িতে। এব্যাপারে এদিন বিধায়ক খোকন দাস জানান, শ্যামল তো দীর্ঘদিনের। আমরা ওকে দীর্ঘদিন চিনি। আমার শরীর খারাপ। ও জানতে পেরে দেখতে এবং বিজয়া করতে এসেছে। সাথে ওর কিছু সহকর্মী এসেছিল। তৃণমূলে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে আমি জানি না। ও যদি করতে পারে করবে। এখন তো তৃণমূল ছাড়া আছে কারা? বাংলায় কি বিজেপির কোনও ভবিষ্যৎ আছে? যারা বিজেপি করে আমরা তো তাঁদের সবাইকে আহ্বান জানাবো তাঁরা সবাই বিজেপি ছেড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসে যুক্ত হোন। ওদের যদি ভাবনা হয়। ওরা যদি আমাদের কাছে আবেদন করে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সেটা আলোচনা করে দেখবে। যদি দল সম্মতি দেয় এদের যুক্ত করা যাবে। খোকন দাস বলেন, এদিন শ্যামল বিজয়া করল, তাঁর শরীরের অবস্থা জানলো। শ্যামলকে তিনি বলেন বিজেপির কোনও ভবিষ্যৎ নাই, বিজেপি করে লাভ নেই। বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে তৃণমূল কংগ্রেসে যুক্ত হওয়ার জন্য বলেছেন। তবে লিখিত আবেদন করতে হবে জেলায়। সেটা রাজ্যে যাবে। সেখান থেকে অনুমতি এলে যুক্ত হওয়ার বিষয়। মুখে বলে যুক্ত হয়না। আর এভাবে হবেই কেনো। ও একজন বিজেপির একটু প্রভাবশালী। একসময় বর্ধমানে বিজেপির লোক বলতে মানুষ শ্যামল রায়কেই বুঝতো। এখন হয়ত ওকে দলে কোণঠাসা করে দিয়েছে। এখন ও যদি মনে করে মুখ্যমন্ত্রীর বাংলার উন্নয়নের সহযোগিতায় কাজ করতে চাই -তাই তৃণমূল কংগ্রেসে যুক্ত হতে চাই তাহলে আমরা নেতৃত্বের সাথে কথা বলে ওকে স্বাগত জানাবো দলের অনুমোদন নিয়ে।