E Purba Bardhaman

সরকারি বনমহোৎসবের অনুষ্ঠানে ‘ব্রাত্য’ বিধায়ক থেকে পঞ্চায়েত সমিতি, বিতর্ক তুঙ্গে

Controversy over forest festival

ভাতার (পূর্ব বর্ধমান) :- বনমহোৎসবের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণকে ঘিরে এবার দ্বন্দ্ব বর্ধমানের ভাতারে। মঙ্গলবার এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার, আউসগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্ডার, জামালপুরের বিধায়ক অলোক মাঝি, বর্ধমান বনবিভাগের আধিকারিক নিশা গোস্বামী, জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ নিত্যানন্দ ব্যানার্জি, সহকারী বন আধিকারিক সোমনাথ চৌধুরি, ডিএসপি ক্রাইম পূর্ব বর্ধমান সুরজিৎ মন্ডল-সহ অন্যান্য আধিকারিক থেকে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষরা। কিন্তু হাজির ছিলেন না ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, ভাতারের বিধায়ক-সহ একাধিক নেতৃত্ব। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে রীতিমতো চাপান-উতোর। অভিযোগ উঠেছে, ভাতারে এই বনমহোৎসব অনুষ্ঠিত হলেও খোদ ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে এব্যাপারে কোনো আলোচনাই করা হয়নি। এমনকি আমন্ত্রণ পত্রেও নাম নেই তাঁদের। ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সেখ সফিকুল আলম জানিয়েছেন, বনমহোৎসব রাজ্য জুড়ে সরকারি কর্মসূচি। জেলার কর্মসূচি কীভাবে কাদের সাথে যোগাযোগ করে করছে আমরা বলতে পারবো না। পঞ্চায়েত সমিতিকে জানানো বা আলোচনা কিছু হয়নি। আমরা জানতেই পারিনি অনুষ্ঠান হচ্ছে। কার্ড একটা করেছিল। আমাদের ভাতারে অনুষ্ঠান কিন্তু আমাদের অনুমতি, মতামত, আলোচনা করার প্রয়োজন মনে করেনি। উল্লেখ্য, ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী একইসঙ্গে ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষও। তাঁর দপ্তরের অনুষ্ঠান অথচ তাঁর সাথে কোনো আলোচনাই করা হয়নি। তাঁর সঙ্গে আলোচনা করলে ভাল হত। অন্যদিকে, পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ তথা ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির আমন্ত্রিত সদস্য শান্তনু কোনার জানিয়েছেন, আমরা উপস্থিত থাকতে পারিনি কারণ আমাদের দলীয় কর্মসূচি ২১ জুলাই-এর প্রস্তুতি সভা চলছে। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। আমন্ত্রণ আসার আগেই এই কর্মসূচি ঠিক হয়ে গেছে। ফলে বাতিল করা সম্ভব হয়নি। শুনলাম আয়োজক সংস্থা হিসাবে পঞ্চায়েত সমিতির থাকার কথা কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতির সাথে আলোচনা না করে কর্মসূচি রূপায়িত হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতি জানত না বলে শুনেছি। বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী ওই পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ। কোথায় হবে? কীভাবে হবে? এগুলো পঞ্চায়েত সমিতি বা কর্মাধ্যক্ষ কারও সাথে আলোচনা হয়নি। তিনি জানিয়েছেন, শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষের নাম বাদ দিয়ে কার্ডে জেলাপরিষদের সব কর্মাধ্যক্ষের নাম আছে। পরে আমার নাম দিয়ে একটা কার্ড নতুন করে ছাপিয়ে আমাকে দেওয়া হয়। এদিকে, এই প্রসঙ্গে এদিন জেলা বনাধিকারিক নিশা গোস্বামী জানিয়েছেন, বনমহোৎসবের মূল অনুষ্ঠান কোথায় হবে তা জেলা পরিষদের সঙ্গে আলোচনা করেই স্থির করা হয়েছে। সমস্ত কর্মসূচীই জেলা পরিষদের সঙ্গে আলোচনা করে করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ভাতার পঞ্চায়েত সমিতি সহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ই-মেইল মাধ্যমে তাঁরা চিঠিও পাঠিয়েছেন। কেবলমাত্র শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষের নাম বাদ যাওয়ার বিষয়টি তাঁদের নজরে আসতেই পুনরায় তাঁরা আরও কার্ড ছাপিয়ে তাঁর বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন। এদিকে, খোদ সরকারি দপ্তরের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ নিয়ে এই ঘটনায় বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। এর পিছনে দলীয় অন্তদ্বন্দ্বের ও গন্ধ পাচ্ছেন অনেকেই। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ভাতারের ওড়গ্রাম চতুষ্পপল্লী হাই মাদ্রাসায় বর্ধমান বন বিভাগের উদ্যোগে বনমহোৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বনদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বনমহোৎসব কর্মসূচিকে সামনে রেখে সাড়ে তিন লক্ষ চারা গাছ বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এদিনের অনুষ্ঠান থেকে সবুজায়নের লক্ষ্যে এবং পরিবেশকে সুস্থ রাখতে অত্যধিক হারে গাছ লাগানো এবং তার পরিচর্যার পাশাপাশি জল সঞ্চয়ের বার্তা দেওয়া হয়। এদিন স্কুল চত্বরে বেশ কিছু গাছ লাগানো হয়। পাশাপাশি ওড়গ্ৰাম চতুষ্পল্লী হাই মাদ্রাসার স্কুলে ছাত্র ছাত্রীদের খেলার মাঠের অভাব রয়েছে। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহারের কাছে লিখিতভাবে খেলার মাঠের সমস্যার কথা জানায় ছাত্র-ছাত্রীরা। সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ও সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার।

Exit mobile version