E Purba Bardhaman

একদা সিপিআই(এম)-এর বেতাজ বাদশা আইনুল হক শেষ পর্যন্ত বিজেপিতে যোগ দিলেন

CPI(M) expelled leader Ainul Haque joined the BJP today. Ainul Haque, Former Chairman of Burdwan Municipality

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :-  সিপিআই(এম) নিয়ে কোনো কথা নয়। ওদের নিয়ে কোনো কথাই বলতে চাই না। দেশের ও দশের কল্যাণ করতে পারে একমাত্র বিজেপিই। তাই বিজেপিতে যোগ দিয়েছি মানুষের কাজ করতে। শনিবার দীর্ঘ জল্পনার শেষে বর্ধমানের একদা সিপিএমের বেতাজ বাদশা আইনুল হক যোগ দিলেন বিজেপিতে। এদিন কলকাতায় অনুষ্ঠিত বিজেপির কেন্দ্রীয় স্তরের নেতৃত্বদের নিয়ে আয়োজিত বৈঠকেই আনুষ্ঠানিকভাবে মুকুল রায়ের হাত ধরে আত্মপ্রকাশ ঘটালেন আইনুল হক। নয় নয় করেও প্রায় আড়াই বছর পর ফের প্রকাশ্যে রাজনীতির ময়দানে নামলেন আইনুল হক। জানিয়েছেনদীর্ঘ ৪৩ বছর তিনি রাজনীতি করেছেন। রাজনীতির মানুষ তিনি। এই আড়াই বছর ধরে তিনি নানান আলাপ আলোচনা চালিয়েছেন। তারপরই দেখেছেন বিজেপিই একমাত্র দেশের উন্নয়ন ঘটাতে পারে। উল্লেখ্যবর্ধমান শহরে বামপন্থী ছাত্র রাজনীতি থেকে যুব এবং শেষে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হন আইনুল। বর্ধমান পুরসভায় পরপর দুবছর উপ পুরপতির পর পুরপতি হন। কার্যত বামেদের বর্ধমান শহরের মুখ ছিলেন এই আইনুল হক। ছাত্রজীবনেই বাম আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন আইনুল। ১৯৮৩ থেকে ছ’বছর এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক ছিলেন তিনি। ২০০১এ সিপিএমের জেলা কমিটিতে ঢোকেন। ২০০৩ সালে পুরভোটে জিতে বর্ধমানের উপপুরপ্রধান হন। ২০০৮এ ফের জেতার পরে পুরপ্রধান হন। ২০১৪ সালে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে সদস্য হন। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রে দল তাঁকে প্রার্থী করে। তৃণমূলের রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের কাছে বড় ব্যবধানে হেরে যান আইনুল। এরপরই দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এবং শাসকদলের সঙ্গে তাঁর গোপন যোগাযোগের অভিযোগ তুলে তাঁকে সিপিএম থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর থেকেই মাঝে মাঝেই আইনুল হককে নিয়ে নানান গল্প বাজারে ছড়িয়েছে। কখনও তিনি তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন বলেও খবর রটেছিল। কিন্তু প্রায় আড়াই বছর তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিলেন বিজেপিতে। আইনুল জানিয়েছেনবিজেপি নেতৃত্ব তাঁকে যেভাবে পরিচালিত করবেন তিনি তেমনভাবেই কাজ করবেন। লোকসভা ভোটের প্রচারেও তাঁকে দেখা যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন। এরই পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেনসিপিএম ছাড়ার পর যতবারই তিনি বর্ধমান শহরের নতুনপল্লীর বাড়িতে থেকেছেন সেদিনই সিপিএমের জেলা অফিসের তুলনায় অনেক বেশি বামপন্থী মানুষ তাঁর বাড়িতে আসতেন। তিনি জানিয়েছেনঅপেক্ষা করুনআগামী কয়েকদিনের মধ্যে বর্ধমান শহরের কি পরিবর্তন হয় দেখুন। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছেলোকসভার ভোটের পরই বর্ধমান পুরসভার ভোট। আর সেই পুরভোটের চেয়ারম্যান হিসাবে বিজেপি আইনুল হককে প্রোজেক্ট করতে পারে। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই এবার বাম ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজেপির মুখ হতে চলেছেন আইনুল হক। যদিও আইনুল হকের এই বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে খোদ সিপিএমের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক জানিয়েছেননো কমেণ্টস। এব্যাপারে তিনি কিছুই বলবেন না। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্ত জানিয়েছেনআইনুল হক দলছুট একজন মানুষ। কোথাও জায়গা না পেয়ে বিজেপিতে গেছে। তিনি বর্ধমান মানুষের কাছে ব্রাত্য। তাই তিনি কোথায় গেলেন তা নিয়ে কিছুই যায় আসবে না। বিজেপির জেলা যুব মোর্চার সভাপতি শ্যামল রায় জানিয়েছেনআইনুল হক একসময় আরএসএস নেতাদের মারধর করার নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু এখন তিনি বিজেপিতে। তাঁর যোগ্য রাজনীতি বোধকে কাজে লাগিয়ে একসঙ্গে দলীয় নির্দেশ মেনে কাজ করবেন তাঁরা। 

Exit mobile version