E Purba Bardhaman

ঘূর্ণিঝড় ফণী আতংকে সতর্কতা জারী গোটা জেলা জুড়ে, স্কুল ছুটি ২ মাস

Cyclone Fani Alert - According to the advice of the Agriculture Department, the harvesting of Paddy has started. At Khandhosh, Purba Bardhaman

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রাজ্যের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়েও জারী করা হল ব্যাপক সতর্কতা। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই পূর্ব বর্ধমান জেলার বিদ্যুত দপ্তরের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের জন্য ঘোষণা করা হয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলে তার মোকাবিলা করার জন্য বিদ্যুত দপ্তরের টিম তৈরী রয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহের জন্য সবরকমের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। এরই পাশাপাশি জেলা কৃষি দপ্তর থেকেও ইতিমধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচার চালানো হয়েছে। জেলা কৃষি দপ্তরের উপ অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গোটা জেলা জুড়ে সমস্ত ব্লকে ব্লকে তাঁরা চাষীদের কাছে আবেদন করেছেন, যাঁদের বোরো ধান ৮০ শতাংশ পেকে গেছে, দ্রুততার সঙ্গে তাঁরা যেন ধান কেটে ঘরে তুলে নেন। পাশাপাশি সবজির ক্ষেত্রেও চাষীদের সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। লতানো সব্জির ক্ষেত্রে শক্তপোক্ত খুঁটি দিয়ে সেগুলি রক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জগন্নাথবাবু জানিয়েছেন, চলতি মরশুমে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। পাট চাষ হয়েছে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে। সবজী চাষ হয়েছে সাড়ে সাত হাজার হেক্টর জমিতে এবং ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে তিল চাষ করা হয়েছে। অপরদিকে, ফণীর আতংকে কাল শুক্রবার থেকেই প্রায় ২ মাসের ছুটি ঘোষণা করল রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তর। বৃহস্পতিবার দুপুরেই এব্যাপারে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের সচীব মণীশ জৈনের নির্দেশিকা জেলায় জেলায় পৌঁছে গেছে। ওই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, চলতি তীব্র দাবদাহের জেরে এবং সম্প্রতি সাইক্লোনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩ মে থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সমস্ত স্কুলের পড়াশোনা বন্ধ থাকবে। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় একদিকে, যেমন স্কুলের ছেলেমেয়েদের মধ্যে স্বস্তি বেড়েছে তেমনি পাল্টা অস্বস্তি দেখা দিয়েছে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের মধ্যে। কারণ ওই নির্দেশিকায় স্কুলের ক্লাসকে সাসপেণ্ড করা হয়েছে। ফলত ছেলেমেয়েরা স্কুলে না আসলেও শিক্ষক শিক্ষিকাদের স্কুলে হাজির যথারীতি বলবত রাখা হচ্ছে কিনা – তানিয়েই জোড়ালো ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে, উদ্ভূত সাইক্লোনের জেরে পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও সতর্কতা জারী করেছে জেলা প্রশাসন। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, বর্ধমানের জন্য আলাদা কোনো নির্দেশিকা তাঁরা উপরমহল থেকে পাননি। বলা হয়েছে, ফণীর প্রভাব এই জেলায় পড়তে পারে ৪ মে তথা শনিবার থেকে। তাই ইতিমধ্যেই তাঁরা জেলার সমস্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের সতর্ক করে দিয়েছেন। তৈরী রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা টিমকেও। নজরদারী বাড়ানো হয়েছে নদীকূল বর্তী এলাকাগুলিতে। বিশেষত সর্বক্ষণের জন্য ফণীর গতিপ্রকৃতিকে নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক জানিয়েছেন, জেলার যে সমস্ত মত্স্যজীবী সমুদ্রে মাছ ধরতে যান তাঁদের নিষেধ করা হয়েছে। সতর্কতা জারী করা হয়েছে পুলিশ বিভাগেও। থানা এবং বিডিও অফিসগুলিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে, ফণীর আতংকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই জেলা জুড়ে জোরকদমে ধান কাটার কাজে হাত লাগিয়েছেন চাষীরা। সাম্প্রতিককালে প্রাকৃতিক দুর্যোগে জেলার ভাতার ব্লকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় ফের অজানা আতংকে এদিন যুদ্ধকালীন তত্পরতায় ভাতার ব্লক জুড়ে ধান কাটার কাজ শুরু করে দিয়েছেন চাষারী। একই অবস্থা জেলার অন্যান্য প্রান্তেও।

Exit mobile version