বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- প্রায় দু’দিন ধরে বর্ধমান শহরের জনবহুল টাউন হলের সামনে জিটিরোডের পাশে আস্ত একটি মোষ মরে পড়ে থাকলেও তাকে সরানোর কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় নাগরিক পরিষেবা নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পুরসভা ও বিধায়ক। টাউন হলের সামনে থাকা দোকানদার নীলাদ্রীশেখর চন্দ্র, ডাবলু চৌধুরী প্রমুখরা জানিয়েছেন, প্রায় ওই এলাকায় গোরু-মোষ ঘোরাঘুরি করে। গত মঙ্গবার সকালে তাঁরা ওই এলাকায় এসে দেখেন দুটি মোষ রয়েছে। তার মধ্যে একটি মৃত, অন্যটি জীবিত ছিল। জীবিতটিকে দোকানদারদের পক্ষ থেকে খাবার দেওয়াও হয়। মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত জীবিত মোষটিকে মৃত মোষটির পাশে শুয়ে থাকতে দেখা গেলেও বুধবার থেকে জীবিতটিকে আর দেখা যায় নি। স্থানীয় ওই দোকানদাররা জানিয়েছেন, দু’দিন হয়ে গেলেও মৃত মোষটিকে সরানোর কোনো উদ্যোগই নেয়নি কেউই। অথচ তাঁরা পুরসভা, বিধায়ক জনসেবা কেন্দ্র এবং বর্ধমান থানা সর্বত্র জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো হেলদোল ঘটেনি। এদিকে, এই ঘটনায় বুধবার সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা। এদিন জেলা যুব কংগ্রেসের সভাপতি গৌরব সমাদ্দার জানিয়েছেন, দুদিন ধরে রাস্তার ধারে একটা মোষ পড়ে রইল, এলাকার মানুষ দোকানদাররা পুরসভা সহ সর্বত্র জানালেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হল না। এমনকি ঘটনাস্থল থেকে বিধায়ক জনসেবা কেন্দ্র ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে। খোদ বিধায়ক খোকন দাস বর্ধমানকে সাজানোর চেষ্টা করছেন। কার্জন গেটের সামনে সৌন্দর্য্যায়ন করছেন। আর কার্জন গেট থেকে কয়েক পা দূরেই রাস্তার পাশে মোষ মরে পড়ে থাকলেও তিনি দেখতে পেলেন না, জানতেও পারলেন না। তাহলে তিনি আবার কি পরিষেবা দেবেন? বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুধীররঞ্জন সাউ জানিয়েছেন, ভোটের সময় এই পুরবোর্ডের সদস্যরা নাগরিক পরিষেবা দেবার সংকল্প করেছিলেন। অথচ তাঁরা নাগরিক পরিষেবা ছেড়ে এখন কাটমানি, তোলাবাজিতেই ব্যস্ত। নাগরিক পরিষেবা দেবার বদলে তাঁরা কোথায় পুকুর ভরাট করা হবে, কোথায় জায়গা বিক্রি হবে তাতেই ব্যস্ত। তাই জিটিরোডের পাশে টাউন হলের সামনে দুদিন ধরে পড়ে রইল আস্ত একটি মোষের মৃতদেহ। সুধীরবাবু জানিয়েছেন, শুধু তাই নয় খোদ বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস শহরকে সৌন্দর্য্যায়ন ঘটাতে কার্জন গেটের সামনে রাজা রাণীর মূর্তি বসিয়েছেন, রাস্তার পাশে নতুন করে নীল সাদা রং করেছেন। কিন্তু আস্ত একটা মোষ পড়ে থাকলেও তাকে সরানোর কোনো ব্যবস্থা তিনি নেননি। এদিকে, বুধবার সকাল থেকে সংবাদ মাধ্যম বিষয়টি নিয়ে নাড়াচাড়া করতেই তৎপর হয় পুরসভা। বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, এই বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলার এবং রোড সরকারের দেখার কথা। কেন তাঁরা পুরসভাকে জানাননি তা খতিয়ে দেখা হবে। তিনি জানিয়েছেন, এদিন বিষয়টি জানার পরই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।