E Purba Bardhaman

খোদ বর্ধমান শহরেই একমাস ধরে জলে ভাসলেও পৌঁছায়নি প্রশাসনিক কর্তা থেকে জনপ্রতিনিধিরা

Despite floating in the water for a month in Burdwan town, the public representatives from the administrative authorities did not reach

বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে পাত্তাই দেয়নি বর্ধমান পুর কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, গত প্রায় একমাস ধরে বর্ধমান পৌরসভার ১৭ নং ওয়ার্ডের মল্লিকপুকুর এলাকার প্রায় ৬০ টি বাড়ি জলে ভাসলেও খোঁজ নেননি ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার রুপালি কৈবর্ত্য। গত দু-দিন ধরে ফের নিম্নচাপের বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকার বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দা রুমা ক্ষেত্রপাল, স্থানীয় শিক্ষক রামচন্দ্র দে প্রমুখরা জানিয়েছেন, এই মল্লিকপুকুরের যে নিকাশি ব্যবস্থা তা বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে পুকুরের জল উপচে পুকুর পাড়ের ঘরে ঘরে জল ঢুকেছে। ইতোমধ্যেই একটি মাটির বাড়ি ভেঙে গেছে। আরও কয়েকটি ভাঙার অপেক্ষায় রয়েছে। রুমা ক্ষেত্রপাল জানিয়েছেন, এই পুকুরপাড়ের সব বাসিন্দারাই দৈনিক মজুরির কাজ করেন। সকাল হলেই তাঁদের বেড়িয়ে যেতে হয়। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে তাঁরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। ছোট ছোট শিশুদের বাড়িতে রেখেই কাজে বের হতে হচ্ছে। দু-দিন আগে দুটি শিশু জলে ডুবে যাচ্ছিল। দেখতে পেয়ে দ্রুত তাদের বাঁচানো গেছে। এমনকি ঘরের মধ্যে জল ঢুকে পড়ায় প্রায়ই ঘরে ঢুকে পড়ছে সাপ। ফলে রীতিমতো আতঙ্কে দিন কাটছে। রাত হলেই তাঁদের আতঙ্ক বাড়ছে। বেশ কয়েকটি পরিবার গত কয়েকদিন ধরে অন্যের বাড়িতে খাওয়াদাওয়া করতে বাধ্য হচ্ছেন। রুমা ক্ষেত্রপাল জানিয়েছেন, এই অবস্থায় তাঁরা বারকয়েক এই ১৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলার রুপালি কৈবর্ত্যের কাছে সাহায্যের জন্য ছুটে গেছেন। কিন্তু তিনি সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন তিনি কিছুই করতে পারবেন না। এমনকি তিনি জানিয়েছেন, এই এলাকার মানুষ নাকি তাঁকে ভোট দেননি, তাই তিনি কিছু করতে পারবেন না। রুমা ক্ষেত্রপাল-সহ এলাকার বাসিন্দার এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, ভোটের সময় কত প্রতিশ্রুতি, কত ভাল ব্যবহার আর এখন তাঁরা মরতে বসেছেন, কিন্তু কোনো হেলদোল নেই। উল্লেখ্য, গত সোমবার পূর্ব বর্ধমানে জেলার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রশাসনিক আধিকারিক থেকে জন প্রতিনিধিদের নির্দেশ দিয়ে যান, দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। কিন্তু বাস্তবে এই মল্লিকপুকুরের চিত্র সম্পূর্ণই আলাদা। এদিকে, এই পরিস্থিতিতে এই এলাকার বাসিন্দাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বর্ধমান সদর প্যায়ারা নিউট্রিশন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তাঁরা একটি পাম্পের সাহায্যে জল বের করার উদ্যোগ নিয়েছেন। ওই সংস্থার সম্পাদক প্রলয় মজুমদার জানিয়েছেন, অবিলম্বে এই জমা জল বার করতে না পারলে বড়সড় দুর্যোগ নেমে আসতে পারে বাসিন্দাদের ওপর। পানীয় জলের কলের বেশিরভাগটা জলের নিচে। কমিউনিটি টয়লেটের অবস্থাও শোচনীয়। ফলে যেকোনো সময়েই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারেন বাসিন্দারা।

Exit mobile version