বর্ধমান ও মেমারী (পূর্ব বর্ধমান) :- ঝড় আসলেই তৃণমূলের পোয়া বারো, যা মাল আসবে ঝেড়ে ফাঁক করে দেবে। ওরা চায় বন্যা হোক, ঝড় হোক, ভূমিকম্প হোক। ওরা চায়, তাহলে কামাই হবে। সরকারে যারা আছে তাদের দায়িত্ব ওখানকার যারা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ তাঁদের পাশে দাঁড়ানো, ক্ষতিপূরণ দিয়ে তাঁদের সহযোগিতা করা। মঙ্গলবার বর্ধমান টাউন স্কুলে প্রাতঃভ্রমণে বেড়িয়ে উত্তরবঙ্গের ঝড় সম্পর্কে ফের তৃণমূলকে এইভাবেই খোঁচা দিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, আমরাও বিরোধী পার্টি, আমরাও লোকের সাথে আছি। কিন্তু কথায় কথায় মমতা ব্যানার্জি এত টাকার ফিরিস্তি দেন, এত টাকা খরচ হয়ে গেছে – এইসব বলতে থাকেন। কিন্তু মানুষের কাছে কিছু পৌঁছায় না। আইলা ঝড় হল, আমফানের ঝড় হল, টাকা এল কেন্দ্র থেকে। কার অ্যাকাউন্টে গেল? টিএমসির কর্মীদের অ্যাকাউন্টে। প্রধান, উপপ্রধান, তাঁর বউ, শ্যালক, ভাগ্নেদের অ্যাকাউন্টে চলে গেল। যাদের বাড়ি ভাঙল তাঁরা কিছু পেলেন না। এবার যেন তা না হয়। ঝড়কে কেন্দ্র করে কামাতে শুরু করল টিএমসি, এমন যেন না হয়। মঙ্গলবার টাউন স্কুলের মাঠে ফুটবলও খেললেন সমান দাপটে। ডান-বাঁ দুপায়েই করলেন গোলও। এরপরই তাঁর প্রতিক্রিয়া গোলও দিই, শটও মারি। আমাদের একদম টার্গেট ফিক্সড। ভোটের লড়াই সম্পর্কে তিনি বলেন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে তো আমি লড়াই করেছি। আর কে পশ্চিমবাংলায় লড়াই করেছে? সিপিএম, কংগ্রেস ছিল। এখন সেটিং করছে। চিরদিন সেটিং করেছে তাই দোকান উঠে গেল। দিলীপ ঘোষ লড়াই করেছে বলে যাদের দেখছেন এরা সব বিজেপি ছিল না। এরা টিএমসিকে হারাতে বিজেপির সঙ্গে এসেছে। আজ আমাদের লক্ষ লক্ষ কর্মীরা তাঁরা সিপিএম করেছেন, কংগ্রেস করেছেন, মার খেয়ে, দুর্নীতি দেখে বিজেপির ঝান্ডার তলায় এসেছেন পরিবর্তনের জন্য। তাঁদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করে আমরা পরিবর্তন করবো। কত গোলে জিতবেন প্রশ্ন করায় দিলীপবাবু বলেন, ওরা পরশুদিন তো গোল খেয়েই গেছে। মন্দিরে লুকাতে হয়েছে। এখনও তো খেলা শুরুই হয়নি। অনুশীলন চলছে (ওয়ার্ম-আপ)। তিনি বলেন, খেলার ফল ঠিক হয়ে গেছে। সময়ের অপেক্ষা। মাঠেই নামতে পারছে না ওরা (তৃণমূল)। নিজেদের খেলোয়াড়দেরই ঠিক করতে পারছে না। এমন আত্মঘাতী (সেমসাইড) গোল মারছে রোজ। তাঁরা বিজেপির সঙ্গে কী খেলবে? মহম্মদ সেলিমের জেতা নিয়ে অধীর চৌধুরীর বক্তব্য সম্পর্কে এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, অধীর চৌধুরী জিতবেন কি? মহম্মদ সেলিমের ওকালতি করছেন, নিজেরই ঠিকানা নেই। তিনি নিজের বহরমপুর দেখুন। উনি জিতলে অনেক হবে, কংগ্রেস তা না হলে পশ্চিমবঙ্গে জিরো হয়ে যাবে। নিশীথ প্রামানিক বলেছেন সিপিএমের যে সমস্ত পার্টি অফিসগুলি তৃণমূল দখল করেছিল সেগুলো ভোটের পর খুলে দেওয়া হবে। এব্যাপারে এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, এটা কি অন্যায় কাজ? বিজেপির পার্টি অফিস, সিপিএমের পার্টি অফিস দখল করে টিএমসির ঝান্ডা উড়ছে। সব ছেড়ে দেওয়া উচিত, ছাড়িয়ে দেওয়া উচিত, এই দখলদারির রাজনীতি বন্ধ করা উচিত। সেই জন্যই তো আমাকে পাঠানো হয়েছে এখানে। আমি এসেছি এখানে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে মানুষের অধিকারকে আমরা প্রতিষ্ঠিত করব। লুটের রাজনীতি, ভোট লুট, পয়সা লুঠ, কাটমানি এসব বন্ধ করব, দিলীপ ঘোষ এটা পারে সবাই জানে। অন্যদিকে, এদিন মেমারীতে প্রচারে গিয়ে দিলীপবাবু বিজেপি কর্মীদের তৃণমূল মারধর করা প্রসঙ্গে বলেন, দুর্গাপুরে হয়েছে, বর্ধমানে হয়েছে। তার প্রত্যুত্তর আমরা কালকে দিয়েছি দুর্গাপুরে। ওনারা গায়ের জোরে করতে চাইলে তার ঠিক জবাব বিজেপি দেবে। দিলীপ ঘোষ দাঁড়িয়ে থেকে এটা করবে। আমি প্রথমবার এসেছি এখানে। তিনি বলেন, তৃণমূল ওটা কোন পার্টি নয়, ওটা যাত্রা পার্টি, চোর ডাকাতদের পার্টি। বোমা, বন্দুক দিয়ে সমাধান হবে? ক্যান্ডিডেটকে মেরে ফেলে দিচ্ছে। পালিয়ে গিয়ে মন্দিরে বসতে হচ্ছে। মানুষের কি করবে ওরা? এগুলো গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এগুলো স্বাভাবিক। ওরা লড়ুক ওদের মধ্যে কিন্তু তার জন্য পাবলিককে কষ্ট দেবে, অন্য পার্টির লোককে কষ্ট দেবে, এটা চলবে না। অন্যদিকে, চলতি সময়ে তীব্র গরম নিয়ে দিলীপবাবু বলেন, গরম খুব পড়েছে। রাজনীতির গরমও খুব বাড়ছে। আবহাওয়া খুব খারাপ যাচ্ছে। এটা খুব চিন্তার বিষয়। প্রতি বছর গরমেই ভোট হয়। সকলে সাবধানে থাকুন, সুস্থ থাকুন। যদিও গরমের জন্য তিনি জানিয়েছেন, সারা বছর যা খাই, সেটাই খাচ্ছি। আমি আলাদা কিছু খাই না। বদলও করিনা। আমরা রোজ রোজ নিজেকে পালটাই না।