বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ভোটের বাজারে দিলীপ ঘোষ মানেই প্রতিদিন নিত্য নতুন চমক। লাঠি, ত্রিশুলের পর এবার হকি স্টিক হাতে তুলে নিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার বর্ধমান শহরের বড়নীলপুরে চা-চক্রে যোগ দিতে এসে তাঁর হাতে হকি স্টিক সম্পর্কে দিলীপবাবু জানিয়েছেন, ক্রিকেট, ফুটবল, হকি পশ্চিমবঙ্গের খেলাধুলা সব রসাতলে গেছে। খেলাধুলার পরিবর্তন দরকার আছে। খেলাধুলায় যোগদানের দরকার আছে। এখানে শুধুমাত্র কাটমানির খেলা চলছে। সেই জন্য আমরা খেলাধুলো প্রমোট করতে চাইছি। মোদি সরকার আসার পর অলিম্পিক, কমনওয়েলথ, এশিয়ান গেমসে ডজন ডজন পদক আসছে। ১০০ টার উপর এশিয়ান গেমসে পঁচিশের ওপর অলিম্পিকে পদক হয়ে গেল। এই যে পদক এত বাড়ছে তার ওপর প্রমোট করতে চাই আমরা। সব ধরনের খেলাধুলায় প্রমোট চাই। পশ্চিমবঙ্গ একসময় খেলাধুলায় নেতৃত্ব দিত। আমরা এখন পিছিয়ে পড়ছি। শুধু এটাই নয় এদিন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কীর্তি আজাদের উদ্দেশ্যে নিজেই গাইলেন গান। “পরদেশি পরদেশি” গানের কলি দিলীপের গলায়। ১৩ তারিখের পর তৃণমূল কর্মীদের তৃণমূল প্রার্থীর জন্য এই গান করতে হবে বলে কটাক্ষ করেন দিলীপ। তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদকে উদ্দেশ্য করে তৃণমূল কর্মীদের এই গান গাইতে হবে বলে কটাক্ষ করে অতিপরিচিত “পরদেশি পরদেশি” গানটি করেন দিলীপ ঘোষ। গান শেষে বিজেপি মহিলা কর্মীদের পরামর্শ দিয়ে দিলীপ বলিউডি সিনেমার নাম নিয়ে বলেন, তখন আপনারা বলবেন “অতিথি তুম কাব যাওগে?”। অন্যদিকে, এদিন দিলীপবাবুর সঙ্গে বিজেপির বহিষ্কৃত নেতা শ্যামল রায়কে দেখা নিয়ে দিলীপবাবু জানিয়েছেন, আমাদের অনেক খেলোয়াড় আছে। এটা পার্টির প্রোগ্রাম নয়। এটা দিলীপ ঘোষের প্রোগ্রাম। চা চক্রে দিলীপ দা। সিপিএম, বিজেপি, তৃণমূল,কংগ্রেস সবাই এখানে আছে। সবাই এখানে আসবে। এখানে জেলা প্রেসিডেন্ট বা রাজ্য প্রেসিডেন্টের কোন ব্যাপার নেই। এটা দিলীপ ঘোষের নিজস্ব ব্রান্ডেড। শ্যামল রায়কে তো আগে বিজেপি বহিষ্কার করেছিল, এখনো তো বহিষ্কার হয়েই আছে – এর উত্তরে তিনি বলেন, আমরা কোথায় পার্টি অফিসে বসে আছি? রাস্তাতেই বসে আছি। আমাদের পার্টির নেতারা রাস্তাতেই বসে। দিলীপ ঘোষও রাস্তাতেই বসে। যারা বিজেপি করে তাঁদের রাস্তাতেই বসতে হয়। এসিতে বসলে শালা পার্টি, বিজেপি হবে না। উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরি ভোট না দিলে জল মিলবে না বলায় দিলীপবাবু জানান, জনতা সবকটা গুন্ডা নেতাদের হারাবে, সমাজবিরোধীরা নেতা হয়ে গেছে। লুটপাট, কাটমানি ছাড়া কিছু বোঝেনা। এক এক জনকে ধরা হচ্ছে। জেলে যাবে। জনতার মধ্যে উৎসাহ, সাহস এসে গেছে কথা বলার। ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে দমাদম ধপাধাপ ভোট দেবে আর হারাবে। উল্লেখ্য, আগামী ৩ মে বর্ধমানের সাই কমপ্লেক্সের মাঠে দিলীপ ঘোষের সমর্থনে সভা করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন দিলীপবাবু তৃণমূল সম্পর্কে বলেন, বর্ধমানে একটু খুঁজুন দেখি, টিএমসি কোথায় আছে। টিএমসি আছে বোঝানোর জন্য আমরা যখন রাস্তায় বেরোচ্ছি পার্টি অফিস থেকে গো ব্যাক, গো ব্যাক বলছে। এরকম ভয় পাওয়ার কি আছে? এই রোদ্রে ঘরে ঢুকে গেলেন! টিএমসিকে ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছি। ভোটের আগে দেখতে পাবেন না। শীত ঘুমে চলে যাবে। অন্যদিকে, সোমবারই প্রাতঃভ্রমণে বের হয়ে দিলীপবাবুকে ইলেক্টোরাল বন্ডের জন্য ওষুধের দাম বাড়ার অভিযোগ শুনতে হয়। মঙ্গলবার সকালে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসা এক মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভকে দিলীপবাবু বলেন, আপনারা ওষুধের দাম বাড়াচ্ছেন আর লোকে আমাকে বলছে। তিনি বলেন, আপনারা ডাক্তারদের ফ্রি গিফট দিচ্ছেন, আর আমাদের কাছ থেকে বেশি টাকা নিচ্ছেন।