বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ফের বিতর্ক বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডলকে ঘিরে। একইসঙ্গে শুক্রবার সকালে বর্ধমান শহরের এক তৃণমূল কাউন্সিলারকে নিয়েও শুরু হয়ে গেল চর্চা। বৃহস্পতিবার রাতে গোপনে বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বৈঠক করলেন সাংসদ সুনীল মণ্ডল। আর তারপরেই নতুন করে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন সুনীল মণ্ডল। গত লোকসভা নির্বাচনে সুনীল মণ্ডল তৃণমূলের টিকিটে বর্ধমান পূর্বের সাংসদ নির্বাচিত হন। এরপর তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। পরে ফের ফিরে আসেন তৃণমূলে। এবার তৃণমূল তাঁকে প্রার্থী না করায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। ঘোষণাও করে দেন, এই কেন্দ্রে তিনি নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেবেন না। এদিকে, বৃহস্পতিবার ছিল দিলীপ ঘোষের জন্মদিন। শুক্রবার সকালে প্রাতঃভ্রমণে বেড়িয়ে দিলীপবাবু জানান, হ্যাঁ, সুনীল আমার পুরোনো বন্ধু, চা খেলাম গিয়ে। কথা হলো কিছু। আমার জন্মদিন বলে কেক কাটলো, খাওয়ালো আমাকে, কথা আর কি হবে, গল্প হলো আর কি। কোন রাজনৈতিক আলোচনা হয়েছে কিনা তার উত্তরে দিলীপববাবু বলেন, হয়েছে। কিছুই করছে না, কি রাজনৈতিক কথা বলব। দলে আসার জন্য কিছু অনুরোধ করা হয়েছে কিনা তার উত্তরে দিলীপবাবু বলেন, দলে আছেই, আমি না অনুরোধ করতেই চলে এসেছিল। এখন দেখা যাক, কি করে, কোথায় যায়। তিনি বলেন, বিজেপিতে আসার জন্য আমি কাউকে বলি না, আমি এলে নিয়ে নিই। আপনি নিজেই গিয়েছিলেন, না উনি আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন – তার উত্তরে দিলীপবাবু বলেন, অনেকদিন আগেই কথা হয়েছিল, বলেছিল বর্ধমান এলে একবার আসবেন। আমি তো যেতে পারিনি। কাল সময় ছিল সন্ধেবেলা ওদিকে গিয়েছিলাম, ঘুরে এলাম ওর বাড়ি। দিলীপবাবু বলেন, সুনীল দা কোথায় আছে (কোন দলে) সেটাই তো জানি না। কোথায় যাবে, কী করবে আমি কী বলব? আমার সঙ্গে বন্ধুত্ব আগে থেকেই আছে। এর আগেও ওর বাড়ি গেছি। কালকে ডেকেছিল, কালকেও গেছি। এব্যাপারে সুনীল মণ্ডল জানিয়েছেন, স্বাভাবিক ঘটনা, আসতেই পারেন। উনি একজন সাংসদ, আমিও একজন সাংসদ। আমি প্রার্থী হলে আমিও আসতাম। আমি ভোটার, প্রার্থী ভোট চাইতে আসতেই পারেন। আমি যদি প্রার্থী হতাম দিলীপ ঘোষ আমার জায়গায় থাকলে আমার পরিচিত ব্যক্তি হিসাবে আমিও তাঁর কাছে আবদার করতে পারতাম। দলের সাথে দেখা যাচ্ছে না এই প্রসঙ্গে বলেন, দল আমাকে দেখেনি। আর আমি আগেই বলেছিলাম আমি আমার এলাকায় (বর্ধমান পূর্ব) যাবো না। তার একটাই কারণ খারাপ রেজাল্ট হলে হয়ত আমাকে কাঠগড়ায় তোলা হবে। আমি গিয়েছিলাম বলে দল হেরে গেছে। বর্ধমান-দুর্গাপুরের জন্যও আমাকে কেও ডাকেনি। বর্তমানে আমি অনেক কাজে ব্যস্ত আছি। আমি রাজনীতি থেকে একটু দূরে সরে থাকতে চাইছি বলে আমি নিজেও সেরকম উদ্যোগী হইনি। আমার কোনও ক্ষোভ নেই, আমি খুব আনন্দে আছি। সবটাই সৌজন্য সাক্ষাৎ। এদিন রাজনৈতিক বিভিন্ন আলোচনা দিলীপ ঘোষ কিছুটা করেছেন। বিজেপিতে যাওয়ার ডাক অনেকবারই এসেছে, আমি রাজনীতি থেকে কিছুটা দূরে সরে আছি। ২০২৪ সালেও এসেছে। আমি এখনও ভাবিনি। এদিকে, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে সুনীল মণ্ডলের এই ‘গোপন সাক্ষাতের’ মাঝেই শুক্রবার সকালে প্রাতঃভ্রমণে বেড়িয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ মাঠে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বর্ধমান পৌরসভার ৩২ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অজিত খাঁ। এব্যাপারে অজিতবাবু জানিয়েছেন উনি এখানকার প্রার্থী। রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় থাক। এটা মানবিক দিক। তিনি এলেন পরিচয় করতে। সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে কথা হল।