বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- গ্রামছাড়া করলে রাজ্য ছাড়া করার হুঁশিয়ারি দিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার সকালে বর্ধমানের নাড়ীগ্রামে প্রাতঃভ্রমণে বেড়িয়ে ভোটের সময় তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ত্রাস, বাড়ি ছাড়া করার বিষয়ে এক ব্যক্তি দিলীপ ঘোষকে জানালে তিনি এই হুঁশিয়ারী দেন। নাম না করেই তৃণমূলের উদ্দেশ্যে দিলীপ ঘোষ বলেন, সন্ত্রাস করলে ভোটের পর রাজ্য ছাড়া করে দেব। তাই চুপ করে থাকুন। দিলীপ ঘোষ এদিন সাংবাদিকদের বলেন, এ তো সবাই জানেন আপনারা পঞ্চায়েত ভোট কিভাবে হয়েছে। জনগণের নেতাদের নামই কেটে দিয়েছে ভোটার লিস্ট থেকে। তারপরে গ্রাম ছাড়া করেছে। সেই জন্য তো আমি গ্রামে গ্রামে যাচ্ছি, লোককে গিয়ে বলছি ভোট দিন আমরা আছি। এদিন অন্য কোথাও ভোটের প্রচারে যাবার প্রসঙ্গে দিলীপবাবু বলেন, এখন ১৩ তারিখ পর্যন্ত বর্ধমানই পাখির চোখ। ভোট দিতে না পারলে তাঁর দাওয়াইও বাতলে দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। বলেছেন, যে খাবে সে বুঝতে পারবে, আপনার তো দাওয়াই লাগবে না, যার লাগবে সে জানে। এদিন প্রাতঃভ্রমণে বেড়িয়ে কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে ছোলাগুড় খান তিনি। অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্টর গুড় বাতাসার পাল্টা দিলীপ ঘোষের এই ছোলাগুড় নিয়েও শুরু হয়েছে ব্যাপক চর্চা। তিনি জানিয়েছেন, গুড়বাতাসার পাল্টা তো পাবলিক দিয়েছে। তারা কোথায় রয়েছে দেখে নিন। আমরা জনগনের শক্তি বাড়াতে চাই। তিনি জানিয়েছেন, আমরা নিজের শক্তি বাড়ানোর জন্য খাই, লোককে দেখাবার জন্য নয়। সকালবেলা এক্সারসাইজ, তারপর গুড ছোলা খেয়ে এবার সারাদিন লেগে পড়বো, রোদে ঘুরবো। জনগণের সংগঠন, জনগণের মনোবল বাড়িয়ে, আর তারা না বাড়লে সমাজ এগোবে না। আজকে তাঁদেরকে দুর্বল, কমজোর রেখে ভয় দেখিয়ে যে রাজনীতি চলছে তার পরিবর্তন হবে। ডিএ পাচ্ছে না বলে এদিন অনেকেই অভিযোগ করেন দিলীপবাবুকে। তার উত্তরে তিনি বলেন, যতদিন এই সরকার থাকবে এই অভিযোগ শুনতে হবে। অন্যদিকে, তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদের প্রচার সম্পর্কে দিলীপবাবু বলেন, কোথায়? বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছেন, বিভিন্ন গ্রামে ঘুরছেন, ঘোড়ায় করে ঘুরলে পরিশ্রম হয় নাকি? আমি তো হেঁটে ঘুরি। উনি হাঁটতে পারছেন না। তাই ঘোড়ায় উঠেছেন। লোকে বিয়ের সময় ঘোড়ায় ওঠে, উনি এখন কেন উঠেছেন আমি বুঝতে পারছি না। এই কেন্দ্রের সাংসদ এস এস অহলুবালিয়ার নামে বিভিন্ন সময় নিখোঁজ পোস্টার পড়েছে, আপনার ক্ষেত্রে হবে না তো সেটা? এর উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, দেখে নিক বাড়ির সামনে দিলীপ ঘোষ দাঁড়িয়ে আছে। আমি তো তাঁদের খুঁজছি যারা নিখোঁজ করেছিল, তাঁরা কোথায়? তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ অনেক জায়গায় প্রচারে তাঁর অসুস্থ স্ত্রীকে হুইল চেয়ারে করে নিয়ে যাচ্ছেন। এব্যাপারে দিলীপবাবু বলেন, আপনারা বুঝতে পেরেছেন তো ওনার দ্বারা হচ্ছে না। অসুস্থ স্ত্রীকে দেখিয়ে ভোট হবে নাকি? পশ্চিমবাংলার মানুষ অনেক সচেতন। ধন্যবাদ জানাবে, সহানুভূতি জানাবে, ভোট দেবে না কেউ। এ ধরনের যে ভোট, ভোটে উনি দাঁড়িয়েছেন, স্ত্রীকে দেখাচ্ছেন কেন? সম্প্রতি কীর্তি আজাদ যাঁরা নারী বিদ্বেষী তাদের বংশ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা বলেন। এমনকি খোদ দিলীপ ঘোষের নাম না করে বংশ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। এর উত্তরে এদিন দিলীপবাবু বলেন, দেখা যাবে। শুনুন, নমিনেশন করার আগেই উনি হেরে যাবেন। বর্ধমানের মানুষ এত পাগল নয়। সংস্কৃতি সম্পন্ন, শিক্ষিত সচেতন মানুষ। তাঁরা বিনা কারণে উৎপাত চিৎপাত করেন না। বাইরের থেকে কেউ এসে গালাগালি দেবে এখানে, বড় বড় ডায়লগ মারবে, এটা এখানকার মানুষ স্বীকার করবেন না।