রাজ্যের মধ্যে প্রথম পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রশাসনিক ভবনে মাতৃদুগ্ধপান কক্ষের উদ্বোধন
admin
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :-আর্ন্তজাতিক নারী দিবসকে ঘিরে যখন রাজনৈতিক দলগুলি ফায়দা তুলতে ব্যস্ত। তখন পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন আর্ন্তজাতিক নারীদিবসে অভিনব উদ্যোগ নিল। অনেক সময়ই দুগ্ধপোষ্য শিশুদের নিয়ে মায়েদের সামাজিক বা ব্যক্তিগত বিভিন্ন কাজে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। শিশুদের খিদে পেলেও কেবলমাত্র লোকলজ্জার জন্য জনসমক্ষে তাঁরা শিশুদের স্তন্যপান করাতে পারেন না। এবার ২০১৯ এর আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সেই সমস্ত মায়ের ‘লজ্জা’র হাত থেকে বাঁচানোর ব্যবস্থা করল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। শুক্রবার বর্ধমান জেলা কালেক্টরেট ভবনে উদ্বোধন হল স্নেহনীড় নামে মাতৃদুগ্ধ পান করানোর জন্য বিশেষ কক্ষের। এদিন এই কক্ষের উদ্বোধন করেন জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব। জেলাশাসক জানিয়েছেন, অনেক সময় বর্ধমানের কালেক্টরেট ভবনে মায়েরা তাঁদের সন্তানদের নিয়ে বিভিন্ন কাজে আসেন। এরই পাশাপাশি এই কালেক্টরেট চত্বরেই রয়েছে জেলা পরিষদ এবং জেলা আদালতও। সেখানে প্রতিদিনই প্রচুর মানুষ আসেন। লোক সমক্ষে মায়েরা শিশুদের স্তন্যপান করাতে লজ্জা পান। বিষয়টি জানতে পারার পরই তাঁরা এই ধরণের একটি নিরাপদ ঘর তৈরীর পরিকল্পনা নেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, জেলা কালেক্টরেট ভবনের একদিকে এই কক্ষকে তৈরী করতে প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কক্ষের মধ্যে থাকছে পানীয় জল, আলো,পাখা এবং বসার জন্য একটি শোফাও। থাকছে শিশুদের মনোরঞ্জনের জন্য দেওয়ালে নানাবিধ কার্টুন ছবিও। জেলাশাসক জানিয়েছে্ন, গোটা রাজ্যের মধ্যে এই ধরণের ভাবনা বর্ধমানে প্রথম। জেলা কালেক্টরেট ভবনের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলার সমস্ত মহকুমা এবং বিডিও অফিস গুলিতেও এই ধরণের কক্ষ তৈরী করা হবে। বস্তুত, জেলা প্রশাসনের এই ভাবনাকে এদিন রীতিমত স্বাগত জানিয়েছেন মহিলারা। তাঁরা জানিয়েছেন, শুধু মাত্র কালেক্টরেট চত্বর কিংবা মহকুমা বা বিডিও অফিসেই নয়, যেকোনো জনবহুল এলাকাতেই এই ধরণের ব্যবস্থা থাকা দরকার। এদিকে, এদিন আন্তর্জাতিক নারীদিবস এবং একইসঙ্গে আগামী লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে শক্তিশালী নারী গণতন্ত্রের কাণ্ডারী এই শ্লোগান দিয়ে এদিন মহিলাদের আরও বেশি করে সামাজিক বিভিন্ন কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানালো পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। এদিন জেলা কালেক্টরেট অফিসে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে মহিলাদের শপথ বাক্য পাঠ করানো হয়। কোনোরকম ভয় ভীতি বা প্ররোচনায় পা না দিয়ে মহিলারা নিজের ভোট নিজে যাতে দিতে পারেন সে ব্যাপারে এদিন আহ্বান জানানো হয়। হাজির ছিলেন জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব, অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম নিয়োগী, জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক কুশল চক্রবর্তী প্রমুখরা। অন্যদিকে, কন্যাশ্রীর মেয়েদের নিয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হলো ভোটার সচেতনতার মাধ্যমে। পূর্ব বর্ধমানের রায়না ১ নম্বর ব্লকের বুজরুকদিঘি উচ্চ বিদ্যালয়ের কন্যাশ্রী ছাত্রীদের নিয়ে ভোটারদের কিভাবে নতুন প্রক্রিয়ায় মেশিনে ভোট দিতে হবে সেই বিষয়ে প্রচার চালানো হয়। উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ–সভাপতি দেবু টুডু, জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলাম, রায়না ১ নম্বর বিডিও সৌমেন বণিক, রায়না ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রত্না মোহন্ত,জেলা পরিষদের সদস্য মন্দিরা দলুই সহ পঞ্চায়েত সমিতির বিভিন্ন কর্মাধ্যক্ষরাও।