বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমানের ২নং শাঁখারীপুকুর এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ভেঙে মাটিতে মিশিয়ে দেবার ঘটনায় কলকাতা হাইহোর্টের জনস্বার্থ মামলায় সমস্ত পক্ষকে আগামী ১৬ জানুয়ারীর মধ্যে এফেডেবিট করে নিজেদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ। বর্ধমান শহরের এই প্রাথমিক স্কুলকে ভেঙে দেবার ঘটনায় বর্ধমানের ব্যবসায়ী বিধান কুণ্ডু কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন। সোমবার সেই মামলার প্রথম শুনানিতে মামলায় পক্ষভুক্ত করা ২০ জনকে নিজেদের বক্তব্য আগামী ১৬ জানুয়ারীর মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে। এদিকে, এই প্রাথমিক স্কুল ভাঙার পাশাপাশি সোমবার বিধান কুণ্ডু অভিযোগ করেছেন, শুধু ওই এলাকায় প্রাথমিক স্কুলকে ভেঙে দেওয়াই নয়, বর্তমান বিবেকানন্দ সেবক সংঘ নামে যে ক্লাবটি রয়েছে সেখানেই ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ছিল সাউথ বর্ধমান জুনিয়র স্কুল নামে একটি স্কুলও। কিভাবে সেই স্কুল উঠে গেল এবং সেই স্কুলের জায়গায় কিভাবে একটি ক্লাব গড়ে উঠল তিনি সেই বিষয়টিও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। বিধানবাবুর দাবী, ওখানে যে জুনিয়র স্কুল ছিল তার সমর্থনে তাঁর কাছে যথেষ্টই প্রমাণ রয়েছে। অপরদিকে, এই প্রাথমিক স্কুল ভাঙার পাশাপাশি নতুন করে জুনিয়র স্কুলের বিষয়টি নিয়ে এবার জোড়ালোভাবে রাস্তায় নামছে বিজেপির ৩ নম্বর নগর মণ্ডল কমিটি। কমিটির সভাপতি সুমিত দত্ত জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই তাঁরা এব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করছেন। সুমিতবাবু জানিয়েছেন, ওখানে একটি জুনিয়র স্কুল ছিল বলে তাঁরা শুনছেন – সে ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছেন, পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবীতে তাঁরা কোমড় বাঁধছেন লড়াই করার জন্য। এরই পাশাপাশি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে এবং ভেঙে ফেলা স্কুলের জায়গায় পুনরায় স্কুল গড়ার দাবীতে বিক্ষোভ কর্মসূচী করল এস এফ আই। সোমবার এসএফআই-এর পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির পক্ষ থেকে কার্জনগেট চত্বর থেকে মিছিল করে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ অফিসে পৌঁছে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সংসদের চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া হয় স্মারকলিপিও। উপস্থিত ছিলেন এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায় চৌধুরী, সভাপতি প্রবীর ভৌমিক, জেলা কমিটির সদস্য দিব্যেন্দু নন্দী, আশিক আলম, শামীমা খাতুন ,সন্দীপ মন্ডল-সহ অন্যান্য নেতা-কর্মীরা। অনির্বাণ রায় চৌধুরী জানিয়েছেন, অবিলম্বে বেআইনিভাবে স্কুল ভবন ভাঙ্গার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদেরকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং ভেঙে ফেলা বিদ্যালয় ভবনটিকে পুননির্মাণ করে সেখানে শিক্ষা সংক্রান্ত কাজের শুরু করতে হবে। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত বিবেকানন্দ সেবক সংঘের সভাপতি তমালকান্তি মণ্ডল গত শনিবার সিজেএম আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। জামিনযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হওয়ায় তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম।