বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- আর জি কর কাণ্ডে যাঁরাই দোষী, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই আমরা। আমাদের পূর্বপুরুষ (পূর্ব চতুর্থতম পুরুষ) ডা. রাধাগোবিন্দ কর যে স্বপ্ন নিয়ে এই হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কার্যতই ভিক্ষাবৃত্তি করে, সেই সম্মানে কালি লেগেছে। অবিলম্বে সেই কালিমা দূর করার জন্য সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। মঙ্গলবার বর্ধমানে ব্যবসায়িক কাজে আসা কলকাতার রামরাজাতলার বাসিন্দা কর বংশের বর্তমান পুরুষ সত্যজিৎ রায় এভাবেই আর জি কর নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানালেন। সত্যজিতবাবু জানিয়েছেন, তাঁর পূর্বতন চতুর্থতম পুরুষ ছিলে ডা. রাধা গোবিন্দ কর। তিনি এডিনবরা থেকে ডাক্তারি পাশ করেছিলেন। সেই সময় ইংরেজদের পক্ষ থেকে তাঁকে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসার জন্য আবেদনও জানানো হয়। কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে এশিয়ার প্রথম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল তৈরি শুরু করেন। সত্যজিতবাবু জানিয়েছেন, এই কাজ করতে গিয়ে তিনি কার্যত ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেন। সেই সময় মাথার টুপি খোলা হত কাউকে সম্মান জানানোর জন্য। সত্যজিতবাবু জানিয়েছেন, ডা. আর জি কর সেই টুপি খুলে শ্যামবাজার এলাকায় সাইকেল নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, শুধু এটাই নয়, সেই সময় কলকাতায় প্লেগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে অনেক চিকিৎসকই চিকিৎসা করতে ভয় পেতেন। সেই সময় সাইকেল নিয়ে ডা. আর জি কর চিকিৎসা করতেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে। সত্যজিতবাবু জানিয়েছেন, এই সময় ভগিনী নিবেদিতা ডা. আর জি করকে অনেক সাহায্য করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের বংশের নামের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত এশিয়ার প্রথম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে যে ঘটনা ঘটেছে তাঁকে তাঁরা পরিবারের পক্ষ থেকে চরম ধিক্কার জানাচ্ছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের অনেকেই আর জি কর থেকে ডাক্তারি পড়েছেন। এই ঘটনায় তাঁরা গভীরভাবে মর্মাহত। আর জি করের সুনামে কালির দাগ পড়েছে। যত দ্রুত সম্ভব সেই দাগ দূর হোক – এটাই তাঁরা চাইছেন।