বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- এবছর ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসে শিক্ষারত্ন পাচ্ছেন বর্ধমান শহরের কাঞ্চননগরের ডি এন দাস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুভাষচন্দ্র দত্ত। শুক্রবারই এই শিক্ষারত্ন প্রাপকের চিঠি তাঁর কাছে এসেছে। সুভাষবাবু খুশী। উল্লেখ্য, আগামী ৫ সেপ্টেম্বরে শিক্ষক দিবসে গোটা রাজ্যের মোট ২৩জন শিক্ষককে শিক্ষারত্ন পুরষ্কার প্রদান করবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। কলকাতার নজরুল মঞ্চে এই ২৩জন শিক্ষকের হাতে এই সম্মাননা তুলে দেওয়া হবে। পূর্ব বর্ধমান জেলা থেকে এবছর এই শিক্ষারত্ন পুরষ্কার পাচ্ছেন বর্ধমানের কাঞ্চননগর ডিএনদাসে হাইস্কুলের ক্যান্সার আক্রান্ত প্রধান শিক্ষক ড. সুভাষচন্দ্র দত্ত এবং কাটোয়ার ভারতী ভবন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ড.সুনীল কুমার পাল। সুভাষবাবুর শিক্ষকতা জীবন ২১ পেরিয়ে ২২–এ পা দিয়েছে। এরই মাঝে তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। মাঝে মাঝেই তিনি অসুস্থও হয়ে পড়েছেন। কিন্তু রীতিমত নতুন উদ্যমে তিনি তাঁর উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়েই চলেছেন স্কুল আর ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে। সুভাষবাবু শিক্ষকতা শুরু করেন বর্ধমানের কাঁকসার অযোধ্যা হাইস্কুল থেকে। ১০ বছর সেখানে শিক্ষকতা করার পর তিনি চলে আসেন কাঞ্চননগরের এই ডি এন দাস হাইস্কুলে। সুভাষবাবু উদ্ভিদবিদ্যা নিয়ে একাধিক গবেষণা করেছেন। সোনাঝুরি গাছের ওপর গবেষণার ক্ষেত্রে তিনি ইতিমধ্যেই পেটেণ্টের অধিকারী। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন ঔষধী গাছ, সবজী গাছের ওপরও গবেষণা করেছেন। তাঁর এই আবিষ্কার ইতিমধ্যেই বিদেশী জার্নালে ঠাঁই পেয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের উদ্ভাবনী শক্তি বাড়াতে ডি এন দাস হাইস্কুলের ক্ষেত্রে তিনিই চালু করেছেন আইডিয়া বক্স। ছাত্রছাত্রীদের উত্সাহিত করছেন বিভিন্ন নতুন নতুন উদ্ভাবনী বিষয় নিয়ে এই আইডিয়া বক্সে জমা করতে। সেখান থেকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের গবেষণায় তিনি উত্সাহিত করছেন। তৈরী করেছেন স্কুলে পাখিদের বাসস্থান। নয়নয় করেও প্রায় ৬ ধরণের পাখির বাসা তৈরী করেছেন গাছে গাছে। সেখানে প্যাঁচা, দোয়েল,শালিক, বুলবুলি সহ হরেক রকমের পাখি থাকে। তৈরী করে দিয়েছেন পাখিদের দোল খাবার জন্য দোলনাও। তৈরী করেছেন স্কুলে পুষ্টিকর বাগান। ৮জন মনীষীদের নামে এই বাগানের নামকরণ করা হয়েছে। ১৭রকমের ফলের গাছ লাগিয়েছেন। গত প্রায় ৬ বছর ধরে বাগানে কীটনাশক বিহীন বিভিন্ন ফসলের চাষ করে চলেছেন। সুভাষবাবু জানিয়েছেন, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে এই বিষয়গুলি ভীষণভাবে প্রভাবিত করছে। তারাও নিজের নিজের বাড়ি এবং পারিবারিক চাষের কাজে এই চিন্তাধারাকে প্রয়োগ করছে।