Site icon E Purba Bardhaman

বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্লাস চলাকালীন ডাক্তারদের মাথায় খসে পড়ল ছাদের চাঙড়

During the class at Burdwan Medical College and Hospital, Junior doctors head fell into the roof crumbling

বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- এক রোগীর চিকিত্সা সংক্রান্ত বিষয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে আলোচনা করার সময় ৪জন জুনিয়র ডাক্তারের মাথায় ভেঙে পড়ল ছাদের চাঙড়। আহত হয়েছেন ৪ জুনিয়র ডাক্তারই। তার মধ্যে ২জনের অবস্থা গুরুতর। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল জুড়ে। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছেবৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউ বিল্ডিংয়ের সেমিনার হলে ভাতার থানার আটাশপুরের বাসিন্দা নুরমান আলির চিকিত্সা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রায় ৩০জন পিজিটি মেডিসিনের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ক্লাস নিচ্ছিলেন ডাসোমনাথ দাশগুপ্ত। নুরমান আলি গত বৃহস্পতিবার বুকের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এদিন এই আলোচনায় নুরমান আলি সহ তাঁর ছেলে জাকির হোসেনও হাজির ছিলেন। এই সময় আচমকাই প্রায় ২ ফুট ব্যাসার্ধের একটি বিশালাকার ছাদের চাঙড় খসে পড়ে সিলিং ফ্যানের ওপর। সেখান থেকে তা ছিটকে পড়ে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের মাথায় ও ঘাড়ে। এই ঘটনায় জখম হন ৪জন জুনিয়র ডাক্তার। তাদের মধ্যে ডাসাত্যকি রায় এবং ডাসঞ্জয় সেনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাদের দ্রুততার সঙ্গে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ভর্তি করা হয়। পরে তাদের অবজারভেশন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। চিকিত্সকরা জানিয়েছেনআপাতত তাঁরা সুস্থ এবং বিপদমুক্ত রয়েছেন। কিন্তু আচমকা এই ঘটনায় হাসপাতাল জুড়ে রীতিমত আলোড়ন সৃষ্টি হয়। হাসপাতালের অপরাপর কর্তব্যরত জুনিয়র ডাক্তাররা নিজেদের কাজ সেরে বেড়িয়ে আসেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে তাঁরা সিজ ওয়ার্কে যাবারও প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু খবর পেয়ে তাঁদের ডেকে পাঠান হাসপাতাল সুপার ডাউত্পল দাঁ। উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডাঅমিতাভ সাহাও। উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনার পর জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেন। হাসপাতাল সুপার জানিয়েছেনএদিনের ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। নামেই নিউ বিল্ডিং হলেও বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এই বিল্ডিংয়ের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। এব্যাপারে বহুবার রাজ্য স্বাস্থ্যভবনকে তাঁরা চিঠি লিখে জানিয়েছেন। চলতি বছরেই ২৪ এপ্রিল১৮ জুন এবং গত ৯ আগষ্ট তাঁরা স্বাস্থ্যভবনের কাছে এই ভবনের বিষয়ে চিঠি দেন। কিন্তু সেখান থেকে জানানো হয়েছে তাঁদের প্রথম দুটি চিঠি সেখানে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই তৃতীয় চিঠি নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই ভবনের বিভিন্ন ঘর বারান্দাকে দ্রুত মেরামত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের পূর্ত বিভাগকে। এদিন এই ঘটনার পর হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডা,অমিতাভ সাহা ঘটনাস্থল ঘুরেও দেখেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে,এর আগেও কয়েকবার এই নিউ বিল্ডিং সংস্কারের জন্য হাসপাতালের পূর্ত দপ্তরকে জানানো হয় সুপার অফিসের পক্ষ থেকে। কিন্তু নানা অছিলায় এবং টালবাহানায় পূর্ত দপ্তর ওই ভবনের সংস্কারের কাজে হাত দেয়নি। এদিনের এই ঘটনার পর রীতিমত কড়াভাবেই পূর্ত দপ্তরকে জরুরী ভিত্তিক সংস্কারের কাজে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

Exit mobile version