গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর (পশ্চিম বর্ধমান) :- অণ্ডাল বিমানবন্দর তৈরির জন্য মাটি কাটার যন্ত্র সরবরাহকারী কয়েকটি সংস্থার ৩ কোটি টাকা আত্মসাতে অভিযুক্ত মুম্বইয়ের একটি নির্মাণ সংস্থার পার্টনারের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করল বর্ধমান জেলা আদালত। গ্রেপ্তার এড়াতে আগাম জামিনের আবেদন করে মুম্বইয়ের কাণ্ডিভালি থানার এস ভি রোডের বাসিন্দা সোনাল হরিহর ভাইভট্ট। বুধবার সেই আবেদনের শুনানি হয়। অভিযুক্তের আইনজীবী কমল দত্ত আদালতে বলেন, ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ঠিক নয়। অভিযুক্তের ভাইয়ের বিরুদ্ধে এ ধরণের তিনটি মামলা অণ্ডাল ও দুর্গাপুর থানায় রয়েছে। আদালত অভিযুক্তের আগাম জামিন মঞ্জুর করেছে। তাই, যে কোনও শর্তে অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করা হোক। সরকারি আইনজীবী শিবরাম ঘোষাল বলেন, তদন্তকারী অফিসার বেশ কয়েকবার নোটিশ পাঠিয়ে তদন্তের প্রয়োজনে অভিযুক্তকে থানায় আসতে বলেন। কিন্তু, অভিযুক্ত তদন্তকারী অফিসারের কাছে হাজির হয়নি। তদন্তে পুলিসকে ঠিকমতো সাহায্য করছে না অভিযুক্ত। অভিযুক্তকে হেপাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। অভিযুক্ত আগাম জামিন পেলে তদন্ত ব্যাহত হবে। সওয়াল শুনে অভিযুক্তের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন জেলা জজ কেশাং ডোমা ভুটিয়া।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অণ্ডালে বিমানবন্দর (কাজী নজরুল ইসলাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর) তৈরি করার জন্য রাজ্য সরকারের সংস্থা বেঙ্গল অ্যাট্রোপলিস দায়িত্ব পায়। অ্যাট্রোপলিস বিমানবন্দর তৈরির দায়িত্ব কলকাতার একটি ঠিকাদার সংস্থাকে দেয়। সেই সংস্থাটি মোহালির নির্মাণ সংস্থাটিকে বিমানবন্দর তৈরির দায়িত্ব দেয়। দুর্গাপুরের অর্জুনপুরের একটি যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী সংস্থা মোহালির সংস্থাটিকে মাটি কাটার যন্ত্র দেয়। যন্ত্রের ভাড়াবাবদ মোহালির সংস্থাটির কাছে দুর্গাপুরের সংস্থাটির ১ কোটি ৩২ লক্ষ ৬২ হাজার ৪১৩ টাকা পাওনা হয়। মোহালির সংস্থাটি দুর্গাপুরের মাটি কাটা যন্ত্র সরবরাহকারী সংস্থাকে ৬৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেয়। বাকি ৬৮ লক্ষ ১২ হাজার ৪১৩ টাকা মেটায় নি। মোহালির সংস্থাটিকে দুর্গাপুর ও অণ্ডালের আরও কয়েকজন জেসিবি মেশিন মাটি কাটার জন্য দেন। তাদের টাকাও মেটায়নি মুম্বইয়ের সংস্থাটি। টাকা না পেয়ে সংস্থার কর্তাদের বারবার তাগাদা দেন জেসিবি সরবরাহকারীরা। যদিও টাকা মেটায় নি মুম্বইয়ের সংস্থাটি। পুলিসকে জানানোর পরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে দুর্গাপুরের সংস্থার ডিরেক্টর শ্যামল মিত্র দুর্গাপুর এসিজেএম আদালতে মামলা করেন। এসিজেএম কেস রুজু করে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শুরু করে পুলিস অভিযুক্তকে তদন্তের প্রয়োজনে থানায় আসার জন্য ডেকে পাঠায়। কিন্তু, অভিযুক্ত তদন্তকারী অফিসারের কাছে হাজির হয়নি। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারির আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। সেই আবেদন আদালত মঞ্জুর করেছে।