E Purba Bardhaman

“বর্ধমানে সব উলটো, সিধা করবো” – দিলীপ ঘোষ

Everything is upside down in Burdwan, I will fix it - Dilip Ghosh

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ভোটের ময়দানে রাজ্যের বুকে আরও এক দাদার দাদাগিরির ঘোষণা হল বুধবার সাতসকালে। এদিন সকালে বর্ধমান শহরের সূর্য্যনগর মালির মাঠে প্রাতঃভ্রমণে যান দিলীপ ঘোষ। প্রাতঃভ্রমণ শেষে সেখান থেকে তিনি বিবেকানন্দ কলেজের কাছেই চা-চক্রে যোগ দেন। এর কিছু সময় পরে তিনি পৌঁছান কংকালেশ্বরী কালী মন্দিরে। আর সেখানেই তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাবার্তায় বলেন, আরে যে পারে সে সব জায়গায় দাদাগিরি করতে পারে। দিলীপ ঘোষই পারে সারা পশ্চিমবঙ্গে দাদাগিরি করতে। সেটা আমি করব এখানে। ওরা (তৃণমূল) ঠিক করবে কী করবে। কে পালিয়েছে, কে গেছে, উনি কেন পালিয়ে এসেছেন? কীর্তি আজাদ কোথায়? কোথা থেকে পালিয়ে এসেছেন? যতদিন পদ্মফুল ছিল জিতেছেন, তারপরে গো হারা হারছেন। এদিন এই মালির মাঠ প্রদক্ষিণকে ঘিরেও রীতিমতো দাদাগিরির সুর শোনা যায় দিলীপের গলায়। উল্লেখ্য, প্রতিদিনই এই মালির মাঠে এলাকার বহু মানুষ নিয়মিত প্রাতঃভ্রমণ করেন, কেউ চাকরির জন্য প্রস্তুতি নেন, কেউ শরীর চর্চা করেন। মাঠকে কেন্দ্র করে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে তাঁরা মাঠ প্রদক্ষিণ করেন। কিন্তু এদিন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ঘড়ির কাঁটার দিকে মাঠ প্রদক্ষিণ করতে থাকেন। সেই সময় স্থানীয় এক বাসিন্দা বিজেপির এক নেতাকে বলেন, উনি (দিলীপবাবু) উলটো দিকে হাঁটছেন কেন? তা শুনেই দিলীপবাবু বলেন, ঘড়ির কাটার দিকে হাঁটতে হয়। বর্ধমানের লোক সব উলটো হয়ে গেছে গো। গোটা বর্ধমানই উলটো চলে। সমস্ত পার্ক বা মাঠেই দেখছি উলটো হাঁটছে। সব সিধা করতে হবে। এদিন প্রাতঃভ্রমণের সময়ই এলাকার বাসিন্দারা তাঁকে শহরে মাঠের পরিধি কমে যাওয়া ও পরিচ্ছন্নতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আগামীদিনে এই বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করার কথা বলেন। তার উত্তরে দিলীপ ঘোষ জানান, মেনটেইন করা তো আমাদের হাতে থাকবে না, কবজা যাতে না হয়ে যায় সেটা দেখা আমার দায়িত্ব। তারপর সময়ে অনেক কিছুই হবে। বাংলায় প্রতিবাদ করা আন্দোলন করা একটা ফ্যাশন আছে, কাজ কিছু হয় না। আমি নিবেদন, আবেদন করি না কারোর কাছে, আমি অ্যাকশন করি। খড়গপুরে আমি ছিলাম সেখানে প্রচুর মাঠ রেলের। যে পারছে বসে যাচ্ছে। যেই নড়াচড়া করতে যাওয়া হবে সেই বলবে আমরা তো এত বছর ধরে আছি। বড় মাঠের একটা অংশ বাংলাদেশিরা ঢেকে নিচ্ছে, অর্ধেকটা কবজা হয়ে গেছে। তারা তো ভাই পার্মানেন্ট ভোটার নয়, তার সব অধিকার আছে, আপনি এখানে থাকলেও আপনার অধিকার নেই। সেখানে উত্তরপ্রদেশে, আসামে কেমন ট্রিটমেন্ট হচ্ছে দেখছেন তো। মঙ্গলবার পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ তাঁর অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে হুইল চেয়ারে প্রচার করায় এদিন দিলীপবাবু বলেন, অনেকের হাত ভাঙ্গে, অনেকের পা ভাঙ্গে, অনেকের মাথা ভাঙ্গে, অনেকে হুইল চেয়ারে যায়। এসব সেন্টিমেন্টাল ভোট দেওয়ার দিন শেষ। দেশ উন্নয়নের জন্য ভোট দেবে, মোদির জন্য ভোট দেবে, গ্রাম গঞ্জে সব মানুষ এসব নাটকের ভোট আর দেবে না, কেবল উন্নয়ন, কেবল মোদি। কীর্তি আজাদ তাঁকে পাগল বলায় দিলীপবাবু বলেন, কে পাগল সেটা ৪ তারিখের পরে দেখবেন, এমন হারাবো এই জীবনে আর ভোটে দাঁড়াবে না। বাংলার মহিলাদের ঝাঁটা জুতো নিয়ে দিলীপ ঘোষকে তাড়া করবে কীর্তি আজাদের এহেন মন্তব্য সম্পর্কে দিলীপবাবু বলেন, বাংলার মা বোনেদের সাথে ওর কি যায় আসে? বাংলার মা বোনেরা ওর ভাষা বোঝে? বাংলার মা বোনদের ভাষা ও বোঝে? আগে নিজের লোকেদের সামলাক, ওনার কথা ওনার পার্টির লোকেরাই বুঝতে পারছে না তো মা বোনেরা কি করে বুঝবেন? ওকে বাংলার মা বোনেদের কথা ভাবতে হবে না। যাক বিহারে, যেখান থেকে এসেছেন। আর ৪ তারিখের পর প্যাক করে দেবো ভালো করে। বাড়ি বাড়ি প্রচারে বিজেপিদের ঢুকতে না দেওয়ার তৃণমূল ফতোয়া সম্পর্কে দিলীপবাবু বলেন, ওসব ফালতু ডায়ালগ দিয়ে সময় কাটাচ্ছেন, উনি যান লোকের কথা শুনুন। এদিকে, এদিন দিলীপ ঘোষের নয়া দাদাগিরির ঘোষণা সম্পর্কে তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিত দাস জানিয়েছেন, ভোটের আগে দিলীপবাবু কি তাহলে বাংলায় ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করতে চাইছেন? একদিকে আসামে এনআরসি-র নামে, অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশে সংখ্যালঘু মানুষদের উপর অত্যাচার নামিয়ে এনেছে বিজেপি। মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছেন এটাই কি তাহলে দিলীপবাবুর “ট্রিটমেন্ট তত্ত্ব”? বাংলার মানুষকে এইভাবে ভয় দেখানো যাবে না। তাঁরা যথা সময়েই বিজেপিকে এর যোগ্য জবাব দেবে।

 

Exit mobile version