E Purba Bardhaman

ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে পূর্ব বর্ধমানে চাষে ব্যাপক ক্ষতির আশংকা

Extensive damage to crops is expected in Purba Bardhaman district due to heavy rains due to Cyclone Michaung

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- লাগাতার বৃষ্টির জেরে কার্যত পাকা ধানে মই হল পুর্ব বর্ধমান জেলায়। মাথায় হাত পড়েছে শস্যগোলা পূর্ব বর্ধমান জেলার চাষীদের। জলের তলায় আমন ধান, আলু গাছ, পিঁয়াজ-সহ ফুল ও সবজি চাষেও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়লেন চাষীরা। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন চাষীরা।
জানা গেছে, জেলার একাধিক ব্লকে এখনও আমন ধান কাটা অনেকটাই বাকি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই সমস্ত পাকা ধান জলের তলায়। অন্যদিকে আলুর জমিতে জল জমে যাওয়ায় আলুবীজ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় প্রায় ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যার জেরে অনেক জায়গাতেই কৃষিজমিতে জল জমেছে। জেলায় এই মরসুমে আমন ধান চাষ হয়েছিলো প্রায় ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার হেক্টর জমিতে। যার প্রায় ৮১ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই ধান কাটা অবস্থাতেই জমিতে রয়ে গেছে। যার ফলে একটা বৃহৎ অংশের জমির ধান জলের তলায়। এই অবস্থায় বেশ কিছুদিন থাকলে তা নষ্ট হয়ে যাবে। এর মধ্যে সমস্যায় পড়েছেন দক্ষিণ দামোদরের সুগন্ধি গোবিন্দভোগ ধানের চাষীরা। এমনিতেই কেন্দ্রীয় রফতানি নীতির ফলে রফতানি বন্ধ থাকায় গোবিন্দভোগ ধানের দাম নেই। তার উপর আবার জমিতে জল জমে ধান নষ্ট হওয়ায় উপক্রম হওয়ায় প্রভূত ক্ষতির মুখেই পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছেন এই এলাকার চাষীরা। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মরসুমে প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে গোবিন্দভোগ ধান চাষ হয়েছিলো। যার সিংহভাগই এখনও মাঠে পড়ে আছে।
অন্যদিকে, জেলায় প্রায় ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। যার প্রায় ৬০ শতাংশ জমিতে ইতিমধ্যেই চাষ হয়ে গেছে। লাগাতার বৃষ্টিতে আলু জমির ক্ষেত্রে অনেক জায়গাতেই জমির মধ্যে জল দাঁড়িয়ে আছে। এমতাবস্থায় জল যদি ২৪ ঘন্টার বেশী সময় ধরে জমিতে জমে থাকে বের হওয়ার সুযোগ না পায় সেক্ষেত্রে বীজআলু নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।
একইভাবে প্রভাব পড়েছে জেলার সবজি ও ফুল চাষেও। সেক্ষেত্রে সবজি চারা ও ফুল পচে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে।
জেলা কৃষি দফতরের সহকারী অধিকর্তা (তথ্য) সুকান্ত মুখার্জী জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৩০ মিলিমিটার মতো বৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে জমিতে জল জমার খবর এসেছে। তবে এখনই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বলা যাবে না। একদিকে কৃষিজপণ্যের লাগাম ছাড়া মূল্যবৃদ্ধি তার উপর একেবারে পাকা ধানে মই হওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে শস্যগোলার কৃষককূলের। পাশাপাশি এবছর বস্তা প্রতি (৫০ কেজি) আলুর বীজ প্রায় ২২০০-২৩০০ টাকায় কিনতে হয়েছে চাষিদের। সেই বীজ দিয়ে চাষ শুরু করার মুখেই জমিতে জল জমে যাওয়ায় সেই বীজ আলুও নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে যার জেরে প্রভূত ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বলে মনে করছেন চাষীরা। নবস্থা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গৌরহরি দাঁ জানিয়েছেন, গোটা নবস্থা অঞ্চলেই চাষের ক্ষতি হয়েছে। চাষীরা জানিয়েছেন, কেউ ব্যাংক থেকে আবার কেউ সমবায় থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেছেন। এই ক্ষতি তারা মেটাবেন কিভাবে তা নিয়ে রীতিমত ঘুম উবেছে চাষীদের।


Exit mobile version