E Purba Bardhaman

অকাল বর্ষণে চাষের ক্ষতিপূরণের দাবী ও আলু বীজের কালোবাজারীর প্রতিবাদে রাস্তা মেমারীতে রাস্তা অবরোধ

Farmers protested by blocking the road demanding compensation for cultivation due to untimely rains and against the black market of potato seeds

মেমারী (পূর্ব বর্ধমান) :- অকাল বর্ষণে চাষের ক্ষতিপূরণের দাবী ও আলু বীজের কালোবাজারীর প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন কৃষকেরা। সোমবার পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারী-কাটোয়া রোডের রাধাকান্তপুর বাজার এলাকায় এই অবরোধ করেন। গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে জল জমে যায় কৃষি জমিতে। জলের তলায় চলে যায় মাঠেই পরে থাকা কাটা ধান থেকে শুরু করে চাষ করা আলু জমি। আর এতেই মাথায় হাত পরে যায় কৃষকদের। চাষীদের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের দাবী উঠতে শুরু করে, একইসাথে নতুনভাবে চাষের জন্য আলুবীজের কালোবাজারী নিয়ে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। আর এই সমস্ত দাবিদাওয়া নিয়েই এদিন ‘কৃষক ঐক্য মঞ্চ’-র উদ্যোগে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন কৃষকেরা। এদিনের বিক্ষোভে উপস্থিত কৃষক সুকুমার কর্মকার জানিয়েছেন, কয়েদিন আগের অকাল বর্ষণে মাঠের ধান ও আলু নষ্ট হয়ে গেছে। জীবিকা নির্বাহের জন্য চাষ করতে গিয়ে তাঁরা শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে ফেলেছেন। প্রায় সবাই ঋণ নিয়ে চাষ করেন। তাঁর ৮০ হাজার টাকা ব্যাংক ঋণ নেওয়া আছে। ৫ বিঘা জমি চাষ করেছেন। সমস্ত জমি জলের তলায়। তাঁরা চিন্তা করতে পরাছেন না কীভাবে সংসার চালাবেন। সরকারকে তাঁদের অবস্থা জানানোর জন্যই এদিন অবরোধ করেছেন। এই অবরোধে সরকারের সদুত্তর না পেলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন করবেন। বিডিও অফিস, এডিও অফিস, জেলাশাসক অফিসে গিয়ে আন্দোলন করবেন বলে জানিয়েছেন সুকুমার কর্মকার। তিনি জানিয়েছেন, তাঁদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। কিছুদিন আগে আলু বীজ ১২০০ থেকে ১৭০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছিল। সেই বীজ এখন ৩৫০০ থেকে ৫০০০ টাকায় যে যেমন পারছে বিক্রি করছেন। কৃষকেরা কিনতে পারছেন না। বীজের এই কালোবাজারি রুখতে হবে। কোনও সরকারেরই সঠিক ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। সরকারকে সহজলভ্যভাবে কৃষকদেরকে বীজ দিতে হবে। না হলে তাঁরা চাষ করতে পারবো না। উৎপাদন না হলে শুধু তাঁদেরই আর্থিক ক্ষতি হবে এমন নয়, শহরের মানুষজনও খাবেন কী করে? -জানান সুকুমার কর্মকার। আন্দোলনকারী কৃষক উৎপলকুমার রায় জানিয়েছেন, অকাল বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ২০২১ সালে তাঁরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন। বীমা করা থাকায় সামান্য পরিমাণ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন। সেই সময় তাঁরা আলুর চাষে ২৫ শতাংশ টাকা পেয়েছিলেন। অভিযোগ, যেখানে আলুর চাষ হয়নি মঙ্গলকোট, মন্তেশ্বরে ৫৮ থেকে ৬৮ শতাংশ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এবছর জমিতে ঠিকমত পরিদর্শন করে যাতে ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা হয় সেই বিষয়ে সরকারকে আগাম জানাতে এদিনের এই আন্দোলন। এবছর বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আলুর চাষের জন্য আগাম ধান উঠে গিয়েছিল, ধানে কিছু ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি আলুর চাষে ৮০-৯০ শতাংশ জমিতে আলু বসান হয়ে গেছে। সেই আলু সমস্ত পচে গেছে। সেই সুযোগে কিছু ব্যবসাদার ১৬০০ টাকার বীজ ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করছে। তার বিরুদ্ধে তাঁদের প্রতিবাদ। ক্ষতিপূরণ এবং কালোবাজারি রুখে সরকার যাতে চাষীদের পাশে থাকেই এই দাবীতেই তাঁদের এই আন্দোলন। এদিন প্রায় ২০ মিনিট অবরোধ চলার পর পুলিশি আশ্বাসে কৃষকেরা অবরোধ তুলে নেন।


Exit mobile version