E Purba Bardhaman

সম্পত্তিগত বিবাদের জেরে ছেলে, পুত্রবধূ ও দুই নাতনিকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ বাবার বিরুদ্ধে

Father tried to kill by burning his Son, Daughter-in-law and two Granddaughter in a dispute over property. One is dead. Father and one brother were arrested. At Galsi

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে নিজের ছেলে, বৌমা এবং দুই নাতনিকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করলো গুণধর বাবা। নৃশংস্য এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের গলসি থানার খানো এলাকার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে৷ বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গুরুতর আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৪জনকেই নিয়ে আসা হলে বুধবার বিকালে মৃত্যু হয় ছোট ছেলে সেখ ইকবালের। অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ইকবালের স্ত্রী তুহিনা বেগম এবং তাঁদের এক কন্যা সন্তান বিলকিস বেগম। ছোট মেয়ে সোহানা বেগমের অবস্থা স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বাবা সেখ ইউসুফ তাঁর সমস্ত সম্পত্তি তাঁর বড় ছেলে সেখ একরাম ওরফে একলামকে লিখে দেন। তা নিয়ে ছোট ছেলে সেখ ইকবালের সঙ্গে বাবার অশান্তি শুরু হয়। সেখ ইকবাল কলকাতায় চাকরি করেন। মঙ্গলবারই তিনি ফিরে আসেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সেখ ইউসুফ তাঁর সম্পত্তি বড় ছেলেকে লিখে দেবার জন্য ছোট ছেলেকে ৪ লক্ষ টাকা বাড়ি করার জন্য দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেখ ইকবাল বাড়ি ফিরে এসে সেই টাকার জন্য বাবাকে চাপ দেন। সেখ ইকবালের সঙ্গে সহযোগিতা করেন স্ত্রী তুহিনা বেগম। মঙ্গলবার এই ঘটনাকে ঘিরে পরিবারে ব্যাপক অশান্তিও হয়। জানা গেছে, এরপরই সেখ ইউসুফ এবং তাঁর বড় ছেলে সেখ একরাম সেখ ইকবাল সহ তাঁর পরিবারের সকলকে পুড়িয়ে মারার পরিকল্পনা করেন। এরপরই বাজার থেকে কিনে আনা হয় নতুন গ্যাস সিলিণ্ডার ও একটি বড় গ্যাস পাইপ। জানা গেছে, গভীর রাতে যখন সেখ ইকবাল তাঁর স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তানকে নিয়ে নিজের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন সেই সময় তাদের ঘরের দরজায় বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ঘরের জানালা দিয়ে গ্যাসের পাইপ ঢুকিয়ে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন সেখ ইউসুফ। এরপর একটি কাঠিতে মশালের মত করে তাতে আগুন লাগিয়ে ঘরের মধ্যে ছুঁড়ে দেন। দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে ঘরের ভেতর। ইকবালদের ফ্যামিলির আর্ত চিত্কারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা এবং বড় ছেলে সেখ একরাম। ঘরের তালা খুলে দেন বড় ছেলে। ভেতর থেকে ৪ জনকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিকালে মৃত্যু হয় সেখ ইকবালের (৩৮)। এদিকে, এই ঘটনার পরই বাড়ি থেকে পালিয়ে যান বাবা সেখ ইউসুফ এবং সেখ একরাম। ইউসুফকে বুধবার সকালে গুসকরা স্টেশন থেকে ধরে গলসি থানার হাতে তুলে দেয় রেল পুলিস। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে একরামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিনই ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। তদন্তের প্রয়োজনে ধৃতদের ৫ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিস। সেই আবেদন মঞ্জুর করেন সিজেএম রতন কুমার গুপ্তা। ঘটনাস্থল থেকে একটি কাঠের টুল, টর্চ ও তালা বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিস। তথ্য সংগ্রহের জন্য ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের সাহায্য চেয়েছে পুলিস। বৃহস্পতিবারই ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে আসতে পারেন বলে থানা সূত্রে জানা গিয়েছে। বাড়িটিকে ঘিরে রেখেছে পুলিস। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। গ্রামবাসীরা ধৃতদের ফাঁসির সাজা দেবার দাবী তুলেছেন।

Exit mobile version