E Purba Bardhaman

লোকসভা নির্বাচন – বাড়ির ছাদ, উঠান বৈঠকে জোর দিচ্ছে সিপিআই(এম)

The CPI(M) is holding an election meeting in the village

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- লোকসভার নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে ততই তেড়েফুঁড়ে উঠছে যুযুধান রাজনৈতিক দলগুলি। কিভাবে ভোটারদের কাছে টানা যায় তার নানান কৌশলও বের করে প্রচারাভিযান চালাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলি। কোথাও কোথাও যেমন দেওয়াল লিখন,আবার কোথাও রোড শোকর্মী বৈঠক। উল্লেখ করার মত বিষয়এবারে প্রায় সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিই বিশেষভাবে জোড় দিয়েছে কর্মীদের নিয়ে বৈঠকে। বিশেষ করে তৃণমূল কংগ্রেস রীতিমত জোড় দিয়েছে এই কর্মী বৈঠকে। কারণ দলের ভেতরের চোরাস্রোত যাতে দলীয় প্রার্থীকে কোনোভাবেই বিপদে ফেলতে না পারে সেজন্যই প্রতিটি বুথে চলছে কর্মী বৈঠক। আর বর্তমান শাসকদলের এই কর্মী বৈঠকের পাল্টা বিগত দিনের শাসকদল তথা সিপিআই(এম)-ও এবারে কৌশলকে কিছুটা রকমফের করে নিয়েছে। সাম্প্রতিককালে তৃণমূল কংগ্রেসের বিভিন্ন বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ বারবার কর্মীদের উদ্দেশ্যে গ্রামের পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে চাটাই পেতে বৈঠক করাগ্রামবাসীদের অভাব অভিযোগ শোনার পাশাপাশি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি নিয়ে প্রচার করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর এব্যাপারে বলতে গিয়েই স্বপনবাবু মনে করিয়ে দিয়েছেন সিপিএমের নেতাদের আচরণের কথা। তাঁরা কিভাবে জনসংযোগ করতেন তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। আর স্বপনবাবু যখন  সিপিআই(এম)-এর ফর্মূলাকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেনসেই সময় সিপিআই(এম) নেতৃত্ব নিরবে পুরনো পদ্ধতিতেই চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার। চলছে পাড়ায় পাড়ায় বাড়ির ছাদে কিংবা উঠান বৈঠক। সেখানে হাজির হচ্ছেন দলের নেতা থেকে দলের প্রার্থীরা। বাড়ির উঠানে বসে কেন সিপিআই(এম)কে ভোটকেন অন্যদের নয় তা বোঝাচ্ছেন ভোটারদের। কখনও কখনও এই বৈঠক হচ্ছে বাড়ির ছাদেও। একদা বামপন্থী ভোটারদের মন পেতে কোথাও কোথাও দলীয় নেতৃত্বরা তাঁদের ঘরেই খাওয়া দাওয়া সেরে নিচ্ছেন। এদিকেএবারের লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম যখন ঘরে বাইরে নিশ্ছিদ্র প্রচারাভিযান চালাচ্ছে সেই সময় প্রাক্তন সিপিআই(এম) সাংসদ সাইদুল হকের ফেসবুকে একটি পোষ্টকে ঘিরে শুরু হয়েছে আলোড়ন। তিনি লিখেছেনপার্টির জেলা নেতৃত্ব তাঁকে গলসী ১ ব্লকের ৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নির্বাচনী কাজে যুক্ত থাকতে বলেছে। আগামী একসপ্তাহ সকালে অর্থসংগ্রহদুপুরে কোন গ্রামে খাওয়া এবং বিকালে কর্মীসভার কর্মসুচি। সেইমত মিল ও ব্যবসা কেন্দ্রে অর্থ সংগ্রহ হল। তিনি লিখেছেনঅভিজ্ঞতা হয়েছে – কেউ অর্থ দেব না বলেন নি। সর্বনিম্ন দিয়েছে ৫০০ টাকা (ছোট লেদ মালিক), সর্বোচ্চ১০ হাজার টাকা(চালকল মালিক)। ২আলোচনায় উঠে এলেছে ব্যবসার বাজার খুবই খারাপ,মিল ব্যবসা লাঠে উঠবেচাষীদের অবস্থা সঙ্গীনতৃনমুলের একাধিক গ্রুপের চাঁদার জুলুম ও তাদের মারামারিতে অশান্তি। ৩সিপিএমের সময় মাঝে মাঝেই চাঁদা দিতে হততবে জুলুম ছিল না। ৪তখন আইনের শাসন ছিল ৫পুলিশের নামেও এখন ব্যবসায়ীদের কাছ হতে ও হাইওয়েতে গাড়ী ধরে টাকা তোলা হচ্ছে। ৬সিপিএমের লোকজন কমে গেছে। ৭সিপিএমের কেবল মিটিং আর মিটিং,আর ভাষণ। গরীবের আপদে বিপদে কম যান। ৮তৃনমূলদের হাত হতে বাঁচতে বিজেপির দিকে ঝোঁক বাড়ছে। ৯সিপিএম দলের কিছু মুখকে সামনে না আনাই ভাল। এই ধরনের অভিজ্ঞতা আমাদের অনেকের প্রায় একই। আশার কথা মানুষ আমাদের কথা শুনছে ও ভরসা করে মুখ খুলছে – লিখেছেন সাইদুল হক। বস্তুতলোকসভা নির্বাচনের মুখে একদিকে যেমন সিপিআই(এম)-এর প্রচার চলছে উঠানেবাড়ির ছাদেতেমনই প্রাক্তন সিপিআই(এম) সাংসদের এই ফেসবুক পোষ্টকে ঘিরে রীতিমত চর্চা তুঙ্গে উঠেছে ভোটের ময়দানে।

[সিপিআই(এম) পার্টির পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির ফেসবুক থেকে ফটোগুলো সংগৃহীত।]

Exit mobile version