বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রায়না থানার জ্যোৎসাদি গ্রামে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে বোমাবাজিতে আনিসুর মল্লিকের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিস ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের নাম আব্দুল ওহাব মল্লিক, শেখ নূর হোসেন, শেখ হাফিজুর রহমান, শেখ সাবির, হাকিম মল্লিক, মণিরুল হক মল্লিক, ভূবন মল্লিক, আলি হোসেন মল্লিক, একতাজউদ্দিন নায়েক, শেখ নাসের আলি, নেপাল রুইদাস, মির্জা আহাল হক ও জাকির মল্লিক। জ্যোৎসাদি গ্রামেই ধৃতদের বাড়ি। রবিবার দুপুরে জ্যোৎসাদি হাইস্কুল ও ছাতিনাহার পুকুরের পাড় থেকে পুলিস ১২ জনকে ধরে। জাকির মল্লিক পায়ে আঘাত নিয়ে বর্ধমান শহরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়। সেখান থেকে পুলিস তাকে ধরে। তাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিস সেলে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিস ২টি তাজা বোমা ও ফাটা বোমার অংশ বাজেয়াপ্ত করেছে। ২৮ জনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতের দাদা আজিজ মল্লিক। অভিযুক্তদের মধ্যে ২৫ জনের বাড়ি জ্যোৎসাদি গ্রামে। বাকিদের বাড়ি মাধবডিহি থানার বোরজপোতা গ্রামে। সোমবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। বাকি অভিযুক্তদের হদিশ পেতে এবং বোমা ও অস্ত্র উদ্ধারের জন্য নূর হোসেন, সাবির, হাকিম, আলি হোসেন ও একতাজউদ্দিনকে ১০ দিন নিজেদের হেপাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিস। ৫ জনকে ৪ দিন পুলিসি হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম সোমনাথ দাস।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাইক রেষারেষিকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতে জ্যোৎসাদি গ্রামের মল্লিকপাড়ায় তৃণমূলের পার্টি অফিসে আলোচনা সভা বসে। আলোচনা সভা চলাকালীন দু’পক্ষের মধ্যে তীব্র বচসা হয়। মতানৈক্য না হওয়ায় আলোচনা সভা ভেস্তে যায়। আচমকা বেশ কয়েকজন বোমা, লাঠি, লোহার রড প্রভৃতি নিয়ে পার্টি অফিসে হামলা চালায়। এলোপাথারি বোমাবাজি শুরু হয়। সেই সময় ওষুধ আনতে যাচ্ছিলেন আনিসুর। একটি বোমা তার মাথায় পড়ে। মাথা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। মারপিট ও বোমাবাজিতে আরও কয়েকজন জখম হয়েছে বলে অভিযোগে জানিয়েছেন আজিজ।
ঘটনায় ১৩ জন গ্রেপ্তার হলেও বাকি অভিযুক্তরা এখনও ধরা পড়েনি। তাদের খোঁজে পুলিস ব্যাপক তল্লাশি চালাচ্ছে। পুলিসি তল্লাশির ভয়ে জ্যোৎসাদি ও আশপাশের এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে। গ্রামে পুলিসি টহল চলছে। ফের গণ্ডগোলের আশঙ্কায় এলাকায় চাপা আতঙ্ক রয়েছে।