E Purba Bardhaman

এবার পূর্ব বর্ধমান জেলার ব্লকে ব্লকে ফ্লাই অ্যাশ ইট তৈরীর ভাবনা নিল জেলা প্রশাসন

Fly Ash Brick Factory Initiative through Rural Entrepreneurship Hub

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রাজ্যের বিভিন্ন থার্মাল পাওয়ার ষ্টেশনে তৈরী হওয়া ছাই দিয়েই এবার পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রতিটি ব্লকে ব্লকে ফ্লাই অ্যাশ ইট তৈরীর উদ্যোগ নিলেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী। শনিবার বর্ধমানের কলিগ্রামে মানব সেবা ফ্লাই এ্যাশ ব্রিকস নামে নতুন একটি ইট তৈরীর কারখানার উদ্বোধন করতে এসে একথা জানিয়ে গেলেন জেলা শিল্পকেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার অভিজিত কর। কলিগ্রামে প্রায় ১৮ বিঘে জায়গার ওপর এই ইট তৈরীর কারখানা গড়ে তুলেছেন সরিফ মোল্লা। এদিন তিনি জানিয়েছেন, এর আগে তিনি বর্ধমানের ওড়গ্রামে একটি ফ্লাই এ্যাশ তৈরীর ছোট কারখানা তৈরী করেছিলেন। কিন্তু এতটাই চাহিদা রয়েছে যে তিনি এই বড় কারখানা তৈরীর পরিকল্পনা করেন। প্রাথমিকভা্বে প্রায়. ৬ কোটি টাকার এই কারখানায় গড়ে ১৭৬জন শ্রমিকের কাজ দেওয়া যাবে। কোম্পানীর অন্যতম ডিরেক্টর সাইদুল ইসলাম জানিয়েছেন, এই কারখানায় গড়ে প্রতিদিন ৮০ হাজার থেকে এক লাখ ইট তৈরী হবে। এদিকে, এই অনুষ্ঠানে এসে জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার অভিজিত কর জানিয়েছেন, রাজ্যের বিভিন্ন থার্মাল পাওয়ার ষ্টেশন গুলিতে যে পরিমাণ প্রতিদিন ছাই তৈরী হয়। সেগুলি রাখার জায়গা নিয়ে ক্রমশই দুশ্চিন্তা তৈরী হচ্ছিল। সেই ছাই দিয়েই এই ইট তৈরী হওয়ায় থার্মাল পাওয়ার ষ্টেশনের এই ছাই সমস্যা যেমন দূর হবে তেমনি ওই ছাই দিয়ে তৈরী ইট সাধারণ মানুষের চাহিদাও মেটাবে। এছাড়াও এই ইট তৈরীর জন্য তৈরী হচ্ছে কোনো দূষণও। অভিজিতবাবু জানিয়েছেন, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় একাধিক থার্মাল পাওয়ার ষ্টেশন রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে বাঁকুড়ার মেজিয়ায় এই থার্মাল পাওয়ার ষ্টেশন। ফলে এই ইটের জন্য কাঁচামালের কোনো অভাব হবে না। তিনি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার সরকারী সমস্ত কাজে এই ইট ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রায় ১৫টি এই ধরণের কারখানা তৈরী হয়েছে। সম্প্রতি জেলাশাসক বিজয় ভারতী এব্যাপারে সমস্ত ব্লকে ব্লকে বেকার যুবক যুবতীদের নিয়ে ছোট ছোট গ্রুপের মাধ্যমে রুরাল এন্টারপ্রেনারশিপ হাব তৈরী করে এই ধরণের ইট তৈরীর উদ্যোগ নিয়েছেন। এব্যাপার রাজ্য সরকারের সঙ্গে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক আর্থিক সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। উল্লেখ্য, পূর্ব বর্ধমান জেলায় বর্তমা্ন সময়ে যে পোড়া ইটের ভাঁটাগুলি চলছে সেগুলির লাইসেন্স গত প্রায় ৮ বছর ধরেই পুর্ননবীকরণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে বর্তমানে যে পোড়া ইটের ভাঁটা চলছে তার সিংহভাগই অবৈধভাবে চলছে। অভিজিতবাবু জানিয়েছেন, পোড়া ইটের ক্ষেত্রে দূষণ, ইটের দাম বেশি ছাড়াও জমির উপরের অংশের মাটি তুলে নেওয়ায় বহু জমিই ফসল উত্পাদনের স্বাভাবিক উর্বরতা শক্তি হারিয়ে ফেলছে। ফলে সেই জায়গায় ক্রমশই জনপ্রিয় হচ্ছে এই ফ্লাই অ্যাশের ইট।

Exit mobile version