E Purba Bardhaman

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় নাম বাদ দেওয়ার জন্য আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দায়ী করলেন উপপ্রধান

MLA Shampa Dhara, Sabhadhipati of Purba Bardhaman Zilla Parishad, attended the 'Didir Suraksha Kavach' program at Baharampur village in Raina.

রায়না (পূর্ব বর্ধমান) :- দিদির দূত কর্মসূচী পালন করতে গিয়ে ফের আবাস যোজনার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার ঘটনায় আশাকর্মী এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দায়ী করলেন রায়নার নাড়ুগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সেখ মহম্মদ ইসমাইল ওরফে শান্ত। এই ঘটনায় ফের চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দিদির সুরক্ষা কবচ এবং দিদির দূত এই কর্মসূচী রূপায়ন শুরু করেন রায়নার বিধায়ক তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া। এদিন সকালে নাড়ুগ্রাম থেকে পূজো দিয়ে তিনি কর্মসূচী শুরু করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ উত্তম সেনগুপ্ত, ব্লক সভাপতি বামদেব মণ্ডল, নাড়ুগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সেখ মহম্মদ ইসমাইল ওরফে শান্ত প্রমুখরা। এদিন বহরমপুরে তাঁরা গেলেন এলাকার বাসিন্দারা বাংলা আবাস যোজনায় তাঁদের বাড়ি না পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর দিতে গিয়েই এদিন নাড়ুগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সেখ মহম্মদ ইসমাইল ওরফে শান্ত বলেন, সম্প্রতি যে সার্ভে হয়েছে সেই সার্ভে করেছেন থানার পুলিশ, সিভিক ভলেণ্টিয়ার, বিএলআরও, বিডিও, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং আশাকর্মীরা। তিনি এদিন সরাসরি গ্রামবাসীদের বোঝান এই গ্রামে ৫৬ থেকে ৫৭ জনের নাম বাদ গেছে। এর মূল কারণ দুজন বয়স্ক অঙ্গনওয়াড়ি ও আশাকর্মী কিছু না বুঝেই কিংবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই এই নাম বাদ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, যে ১৫টি কলাম ছিল তাতে টিক চিহ্ন দেবার কথা ছিল। কিন্তু ওই দুজন তাঁরা কিছু না বুঝেই কিছু টিক চিহ্ন দিয়েছেন। ফলে নাম বাদ গেছে। তবে চিন্তার কিছু নেই। প্রকৃত প্রাপকরা নিজেদের মাটির বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে সেই ছবি সহ ভোটার, আধার কার্ডের জেরক্স এবং নির্ধারিত একটি আবেদন বিডিও অফিসে জমা করুন। তাঁরা চেষ্টা করবেন পরবর্তী সার্ভের সময় তাঁরা যেন বাড়ি পান। উপপ্রধান এদিন গ্রামবাসীদের বোঝান আগামী ৩-৪ মাসের মধ্যেই ফের সার্ভে হবে। সবাই বাড়ি পাবেন, কেউ বঞ্চিত হবেন না। এরই পাশাপাশি তিনি গ্রামবাসীদের বুঝিয়েছেন, এই নাম বাদ দেবার ক্ষেত্রে জবকার্ডও কাজ করেছে। জবকার্ডের ডাটা অনুযায়ী কেউ পরিবারের একজন আবাস যোজনায় বাড়ি পেলে অন্য কেউ পাবেন না। ফলে সেক্ষেত্রেও কেউ কেউ বাদ পড়েছেন একই পরিবারভূক্ত হওয়ার ফলে। অন্যদিকে, এদিন বিধায়ক শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন, গোটা জেলায় তাঁরা ২ লক্ষ ২৫ হাজার বাড়ির আবেদন করেছিলেন। অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল ১ লক্ষ ৭৫ হাজারের। কিন্তু সার্ভে করে নাম বাদ দেওয়ার পর এখন সেই সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫৬ হাজার। তিনি জানিয়েছেন, এদিন কিছু গ্রামবাসী আবাস যোজনার বাড়ি নিয়ে অভিযোগ করেছেন। ইতিমধ্যেই এব্যাপারে রাজ্য সরকারের নির্দেশ মত তাঁরা প্রকৃত প্রাপকদের আবেদন করতে বলেছেন। আশা করছেন এই সমস্যাও কেটে যাবে। এদিকে, ফের আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দিকে অভিযোগ তোলায় রীতিমত পাল্টা হুঁশিয়ারী দিয়েছেন রাজ্য আশা কর্মী ইউনিয়নের বর্ধমান ইনচার্জ ঝর্ণা পাল। তিনি জানিয়েছেন, এর আগেই তাঁরা জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে এই ঘটনার বিষয়ে জানিয়েছিলেন। তৃণমূলের নেতারা এখন নিজেদের গা বাঁচাতে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দিকে অভিযোগ তুলছে। কিন্তু এটা তাঁরা কোনোভাবেই বরদাস্ত করছেন না। তিনি জানিয়েছেন, এই তালিকা আশা বা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা কেউই করেননি। তাঁদের যা করতে বলা হয়েছে তাঁরা সেটাই পালন করেছেন। নাম বাদ দেওয়ার হলে তা তৃণমূলের নেতারাই করেছেন। এখন পিঠ বাঁচাতে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের রোষের মুখে ফেলতে চাইছেন। ঝর্ণা পাল জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তিনি জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানাবেন। একইসঙ্গে ওই আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের যদি কোনোরকম অসুবিধা ঘটে তাহলে তাঁরা কাউকেই ছেড়ে কথা বলবেন না।

Exit mobile version