গোটা রাজ্য জুড়েই চালু হতে চলেছে টোল ফ্রি নাম্বারে এ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা
admin
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :-রাজ্য সরকারের উদ্যোগে গোটা রাজ্য ব্যাপীই অ্যম্বুলেন্স পরিষেবাকে হাতের মুঠোয় আনতে চালু হতে চলেছে নতুন একটি টোলফ্রি নাম্বার। মাতৃযান বা নিশ্চয়যানের মডেলেই ওই নাম্বারে ফোন করলেই দ্রুত মিলবে অ্যাম্বুলেন্স। শুক্রবার পূর্ব বর্ধমান জেলায় সরকারী চিকিত্সা পরিষেবার হাল হকিকত দেখতে এসে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে এবিষয়ে জানিয়ে গেলেন রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের দুই অধিকর্তা। শুক্রবার বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বর্ধমান ডেন্টাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করলেন রাজ্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের সচীব বিনোদ কুমার এবং দপ্তরের অতিরিক্ত সচীব শরদ দ্বিবেদী। এদিন সকালে প্রথমে তাঁরা বর্ধমান ডেন্টাল কলেজের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখেন। ডেন্টাল কলেজে রোগীদের পানীয় জল এবং সময় কাটানোর জন্য ওয়েটিং রুমে টি ভি লাগানোর নির্দেশ দেন। এরই পাশাপাশি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সরকারী প্রকল্পগুলি সম্পর্কে সকলের জ্ঞাতার্থে তা জানানোর জন্য উদ্যোগ নেবার নির্দেশ দেন। এদিন দুই স্বাস্থ্য কর্তার সামনেই কলেজের ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের হোষ্টেল সমস্যার কথা তুলে ধরেন। কলেজ অধ্যক্ষ জীবন মিশ্র স্বাস্থ্য অধিকর্তাদের জানান, ইতিমধ্যেই পূর্ত দপ্তরের মাধ্যমে হোষ্টেলের জন্য জায়গা পাওয়া গেছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডা. অমিতাভ সাহা জানিয়েছেন, এদিন ডেণ্টাল কলেজের অনলাইন টিকিট, ই–প্রেসক্রিপশন ব্যবস্থা নিয়ে স্বাস্থ্য কর্তারা খোঁজখবর নিয়েছেন। কিভাবে পরিষেবাকে আরও সুবিধাজনক করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এদিন ডেন্টাল কলেজের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখার পর বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েও কথা বলেন তাঁরা। হাসপাতালের ফার্মাসি বিভাগকে অন্য কোনো জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাবার বিষয়ে এদিন আলোচনা হয়। প্রতিদিনই ফার্মাসি বিভাগে রোগীর চাপ বাড়তে থাকায় মাঝে মাঝেই বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে। তাই নতুন কোনো ভবনে এই ফার্মাসি বিভাগকে স্থানান্তর করার বিষয় নিয়ে এদিন আলোচনা হয়। স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়ে যান, ভোটের পর্ব মিটে গেলেই এব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। এদিন হাসপাতালের কর্মী অভাবের বিষয় সম্পর্কে বিনোদ কুমার জানান, কর্মী অভাব মেটানোর চেষ্টা চলছে। ডেপুটি সুপার জানিয়েছেন, বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আরও কিভাবে রোগীদের পরিষেবা দেওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা হয়েছে অনাময় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক অপ্রতুলতা নিয়ে। এছাড়াও ব্লাড ব্যাঙ্ক নিয়েও আলোচনা হয়েছে। রক্তের বিভাজনকে আরও বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রক্তের বিভাজনকে আরও বাড়ানো গেলে এক ইউনিট রক্তে অনেক রোগীর চিকিত্সা সম্ভব হবে। অনলাইনের মাধ্যমে হাসপাতালের টিকিট করার বিষয় নিয়ে এই ব্যবস্থাকে আরও ব্লকস্তর, ষ্টেশন, পুরসভা অফিস, বসাস্ট্যান্ড প্রভৃতি এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া যায় কিনা তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এই ব্যবস্থা করা গেলে রোগীর সময় অপচয় কম হবে। ডেপুটি সুপার জানিয়েছেন, বর্তমানে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং অনাময়ে সিটি স্ক্যান মেশিন চালু থাকলেও রোগীদের প্রয়োজনে পিপিপি মডেলে আরও একটি সিটিস্ক্যান চালুর বিষয় নিয়ে এদিন আলোচনা হয়েছে। অনাময়ে অনলাইন ব্যবস্থা চালুর বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যদিও তিনি জানিয়েছেন, অনাময়ে ট্রমা কেয়ার সেণ্টার চালু হলেও এখনও সেখানে পুরনো পদ্ধতিতেই সব কিছু হচ্ছে। দ্রুত অনাময়ে সার্ভার বসানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে এদিন স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে। এরই পাশাপাশি বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও নতুন কাউণ্টার চালু করা যায় কিনা সে ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে। ই–প্রেসক্রিপশন চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।এরপর তাঁরা জেলাশাসকের পৌরোহিত্যে জেলা প্রশাসনের স্বাস্থ্য অধিকর্তা, পুরসভা এবং পঞ্চায়েত দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, এদিন স্বাস্থ্য দপ্তরের দুই আধিকারিক রুটিন ভিজিটে এসেছিলেন। পুরনো যে সমস্ত প্রকল্পগুলি চালু রয়েছে সেগুলির অগ্রগতির বিষয় নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। এছাড়াও নতুন নতুন কি কি উদ্যোগ নেওয়া যায় সে ব্যাপারেও বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। এরই পাশাপাশি এখন থেকেই ডেঙ্গু সহ পতঙ্গবাহিত রোগ দূরীকরণের জন্য এখন থেকেই আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।