গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বিচার সচিবকে লেখা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন প্রত্যাহারের পথে হাঁটছে বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশন। বুদবুদ থানাকে পূর্ব বর্ধমান জেলা আদালতের অধীনে আনার দাবিতে ৭ দিনের কর্মবিরতি পালন করছেন আইনজীবীরা। পাশাপাশি আইনজীবীরা অবস্থান বিক্ষোভও চালাচ্ছিলেন। সোমবারও যথারীতি অবস্থান বিক্ষোভ চালাচ্ছিলেন তারা। সেই সময় জেলা জজ বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের ডেকে পাঠান। বার অ্যাসোসিয়েশনকে হাইকোর্টের অ্যাপিলেড সাইটের রেজিস্ট্রার (জুডিশিয়াল সার্ভিস) বিভাসরঞ্জন দে-র লেখা বিচার সচিবকে চিঠির কপি তুলে দেন। সেই চিঠি পড়ে অবস্থান বিক্ষোভ তুলে নেন আইনজীবীরা। মঙ্গলবার পর্যন্ত কর্মবিরতি চলার কথা। বুধবার এ নিয়ে ফের আলোচনায় বসার কথা ছিল আইনজীবীদের। কিন্তু, হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের চিঠি পেয়ে তা ১ দিন। এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বার। মঙ্গলবার দুপুরে পরিবর্তিত পরিস্থিতির বিষয়ে আলোচনায় বসবেন আইনজীবীরা। সেখানেই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে বার সূত্রে খবর। বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদন তা বলেন, হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার রাজ্যের বিচার সচিবকে একটি চিঠি দিয়ে বুদবুদ থানাকে নিয়ে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে তার নিষ্পত্তির জন্য চিঠি দিয়েছেন। সরকারের একটি আদেশনামায় বুদবুদ থানাকে বর্ধমানের অধীনে রাখা হয়েছে। কিন্তু, স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক দপ্তরের (পুলিস এস্টাবলিসমেন্ট) আদেশনামায় বুদবুদকে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের অধীনে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারের দু’টি আদেশনামার পরিপ্রেক্ষিতে বুদবুদ থানাকে ঘিরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনের জন্য বিচার সচিবকে চিঠি দিয়েছেন রেজিস্ট্রার। চিঠিতে পুলিস এস্টাবলিসমেন্টের নোটিফিকেশনে যে ত্রুটি রয়েছে তা সংশোধন করে নতুন আদেশনামা জারি করার জন্য বলেছেন রেজিস্ট্রার। বিষয়টি হাইকোর্ট অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে। রেজিস্ট্রারের উদ্যোগকে সম্মান জানিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
এ বছরের ৯ সেপ্টেম্বর পশ্চিম বর্ধমান জেলা আদালত গঠিত হয়েছে। পৃথক জেলা আদালত গঠন হওয়ার পরই বুদবুদ কোন আদালতের অধীনে থাকবে তা নিয়ে দুই জেলার আইনজীবীদের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। বুদবুদকে পূর্ব বর্ধমান আদালতের অধীনে আনার জন্য আন্দোলনে নেমেছেন আইনজীবীরা। বর্ধমান আদালতের আইনজীবীদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে এদিন কর্মবিরতি পালন করেন কালনার আইনজীবীরা। কালনা বারের কার্যকরী কমিটির সদস্য পার্থ কর বলেন, বর্ধমান আদালতের আইনজীবীদের দাবির প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। সে জন্য একদিন কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে। পরবর্তীকালে এনিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বর্ধমান বারের পাশে দাঁড়িয়েছে কালনা বার অ্যাসোসিয়েশনও। বর্ধমানের আইনজীবীদের দাবির সমর্থনে মঙ্গলবার কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাটোয়া বার।বারের সম্পাদক সৌমেন সরকার বলেন, বর্ধমানের আইনজীবীদের দাবিকে আমরা সমর্থন করছি। বুধবারও বনধ-এর কারণে আদালতের কাজকর্মে অংশ নেবেন না আইনজীবীরা। বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উদয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ২০১৭ সালের ২৪ মার্চ জেলা ভাগ নিয়ে গেজেট নোটিফিকেশন হয়। সেই নোটিফিকেশন অনুযায়ী বর্ধমান উত্তর মহকুমার অধীনে বর্ধমান, ভাতার, আউশগ্রাম, গলসি ও বুদবুদ থানা রয়েছে। তারপরও কিভাবে বুদবুদ থানা পশ্চিম বর্ধমান জেলা আদালতের অধীনে যায় তা বোধগম্য হচ্ছেনা। হাইকোর্টের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। জেলা জজও সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়েছেন। আশাকরি শীঘ্র সমস্যামিটে যাবে।