জেলার বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে এলাকার মানুষের অভিযোগ শুনলেন জেলাশাসক থেকে জেলার আধিকারিকরা
admin
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক হিসাবে বিজয় ভারতী আসীন হবার পরই জেলাবাসীর অভাব অভিযোগকে দ্রুত নিষ্পত্তি করে তাঁদের সুশাসন দেবার যে পরিকল্পনা করেছেন বুধবার ছিল তার প্রথম দিন। গত ১জুলাই থেকে শুরু হয়েছে অভিযোগ গ্রহণের কাজ। প্রতি সপ্তাহের সোমবারকে এজন্য তিনি নির্দিষ্টও করে দিয়েছেন। জেলাশাসক জানিয়েছেন, সোমবার অভিযোগ গ্রহণ, মঙ্গলবার তার বিচার বিশ্লেষণ এবং বুধবার সরাসরি সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে জনসংযোগ স্থাপন এবং দ্রুত সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা। সম্ভব হলে এক সপ্তাহের মধ্যেই সমস্যার দ্রুত সমাধানের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি। এদিকে, জেলাশাসকের নির্দেশে বুধবার জেলার সমস্ত আধিকারিকরা জেলার সমস্ত ব্লক স্তরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েন। জেলাশাসক এদিন জানান, বর্ধমান ১নং ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় কথা বলেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। শোনেন তাঁদের নানান অভিযোগও। মঙ্গলকোটে যান কাটোয়া মহকুমা শাসক, জামালপুরে যান জেলা পরিবহণ আধিকারিক রাণা বিশ্বাস,গলসী ২নং ব্লকে যান বিডিও ছাড়াও ভূমি দপ্তরের আধিকারিকরা, বর্ধমান ২ ব্লকে যান জেলা পরিষদের সেক্রেটারী বাসব দত্তা গুপ্তা, কালনা ২নং ব্লক পরিদর্শন করেন কালনা মহকুমা শাসক, কাটোয়া ১নং ব্লকে যান অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) শশীকুমার চৌধুরী, গলসী ১নং ব্লকে যান অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অরিন্দম নিয়োগী, খণ্ডঘোষে যান জেলা পরিষদের অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রবীর চট্টোপাধ্যায় প্রমুখরা। এদিকে, এদিন জেলার বিভিন্ন আধিকারিকরা এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরকারী বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয় নিয়ে জানতে গিয়ে ভুরি ভুরি অভিযোগ পেলেন কাটমানির। এদিন বর্ধমান ১নং ব্লকের সরাইটিকর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ নিয়ে খোঁজ নেন জেলাশাসক বিজয় ভারতী। দেখা যায় যে হারে কাজ হবার কথা তা এখানে হয়নি। মূল কারণ হিসাবে উঠে আসে ১০০ দিনের কাজে সুপারভাইজারদের প্রতি ক্ষোভ। গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। ভাল কাজ হিসাবে এদিন জেলাশাসকের পরিদর্শনে উঠে এসেছে মীর্জাপুরের ইকো পার্ক। একইসঙ্গে এদিন জেলাশাসকের পরিদর্শনে তিনি নতুনগ্রামে গিয়ে জানতে পারেন,অনেকেই ২০১৭ সাল থেকে রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করেও পাননি। এব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন জেলাশাসক। পালিতপুরে বাংলা আবাস যোজনার কাজ খতিয়ে দেখতে গিয়ে জেলাশাসকের কাছে এলাকার মানুষ কাটমানি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কিভাবে বাংলা আবাস যোজনার ঘর পাইয়ে দেবার নাম করে নেতারা কাটমানির টাকা নিয়েছেন এদিন জেলাশাসকের সামনেই তাঁরা খোলামেলা জানিয়ে দেন। যা নিয়ে রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। উল্লেখ্য, ১ জুলাই থেকে গোটা জেলা জুড়ে যে অভিযোগ সেল তথা পরিষেবা সপ্তাহ চালু করা হয়েছে তাতে প্রথম দিনেই গোটা জেলা থেকে ৪৩টির মত অভিযোগ জমা পড়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।