বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারার মামলায় সাক্ষ্যের নথিতে সই না করায় আরপিএফের হেড কনস্টেবল উত্তম কুমার সিংয়ের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করলেন বর্ধমানের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক শেখ মহম্মদ রেজা। বর্তমানে শেওড়াফুলি আরপিএফ পোস্টে কর্মরত রয়েছেন উত্তমবাবু। শেওড়াফুলি জিআরপির আইসিকে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা কার্যকর করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আগামী ১৩ জুলাই নির্দেশ কার্যকর করার বিষয়ে আইসিকে রিপোর্ট পেশ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাক্ষ্যের নথিতে সই করার জন্য তাকে বারবার ডেকে পাঠায় আদালত। কিন্তু, সেই নির্দেশ মানেন নি আরপিএফের হেড কনস্টেবল। আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করা ছাড়া অন্য কোনও পথ খোলা নেই বলে নির্দেশ দিতে গিয়ে মন্তব্য করেছেন বিচারক। আরপিএফের হেড কনস্টেবলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারির জন্য আদালতে আবেদন জানান সরকারি আইনজীবী।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের ২২ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৪টে নাগাদ মেমারি স্টেশনে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার দিন মঙ্গলকোটের বাসিন্দা মানসিক ভারসাম্যহীন শেখ নাজিম মেমারি স্টেশনে হাতে একটি ছুরি নিয়ে ঘোরাঘুরি করছিলেন। এক যুবতীকে দেখে তাকে ছুরি নিয়ে তাড়া করেন নাজিম। বিষয়টি দেখতে পেয়ে স্টেশনে থাকা লোকজন নাজিমকে বেধড়ক পেটায়। মারধরে গুরুতর জখম হন তিনি। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় প্ল্যাটফর্মে পড়েছিলেন তিনি। খবর পেয়ে আরপিএফ ও জিআরপি তাঁকে উদ্ধার করে মেমারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে রাতে তিনি মারা যান। ঘটনার বিষয়ে জিআরপির এএসআই শেখ নুরুল আমিন অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্তে নেমে পুলিশ সাধন রায়, পরিমল বিশ্বাস ও ইউসুফ মণ্ডলকে গ্রেফতার করে। পরে তারা জামিনে ছাড়া পায়। তদন্ত সম্পূর্ণ করে পুলিশ মারধর ও অনিচ্ছাকৃত মৃত্যুর ধারায় তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করে। আদালতে ঘটনার বিষয়ে সাক্ষ্য দেন উত্তমবাবু। কিন্তু, সাক্ষ্যের নথিতে সই না করে তিনি চলে যান।